স্বাক্ষর জাল করে প্রতিবন্ধী কার্ড প্রদানের অভিযোগ
লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
নাটোরের লালপুরে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ২৫ ব্যক্তিকে ভুয়া প্রতিবন্ধী কার্ড দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া ও প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির নাম মো. আসলাম হোসেন (৬০)। তিনি উপজেলার দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের নতুনপাড়া গ্রামের মৃত মাতু সরকারের ছেলে ও ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত বছর উপজেলার দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের ২৫ ব্যক্তিকে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী আব্দুল মান্নানের মাধ্যমে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে প্রত্যেকের কাছ থেকে নেন আসলাম হোসেন। পরবর্তীতে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মোতালেব সরকারের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে প্রত্যেককে ভুয়া প্রতিবন্ধী কার্ড প্রদান করেন তিনি। সম্প্রতি তারা উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তাদের ভুয়া প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩) সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতারণার শিকার ২৫ জনের প্রত্যেক ব্যক্তিই অসচ্ছল, প্রতিবন্ধী ও শারীরিকভাবে অসুস্থ। তাদের সবাইকে কার্ড করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে ৬২ হাজার ৫০০ টাকা হাতিয়ে নেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা।
ভুক্তভোগী একই এলাকার পলান উদ্দিনের ছেলে আব্দুল মান্নানের (৪৫) এক হাত নেই। প্রতিবন্ধী কার্ড করতে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেও কার্ড করতে পারেননি। পরে আসলামকে ২ হাজার ৫০০ টাকা ভাতার জন্য দেওয়ার কিছুদিন পর কার্ড পান। পরে জানতে পারেন কার্ডটি ভুয়া। তার মাধ্যমে যে কার্ড করা হয়েছে সবগুলোই ভুয়া। আরেক ভুক্তভোগী নওশের আলীর স্ত্রী রাফিয়া বেগম এক চোখে দেখতে পান না।
একইভাবে ভুক্তভোগী শারিরিক প্রতিবন্ধী মৃত আপতার আলীর ছেলে মো. রাকিব হোসেন (৩৮), মো. আশাদুল ইসলামের স্ত্রী মোছা. শিরিনা খাতুন (৪১), মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে মো. লালন আলী (৩১) ছাড়াও অনেকে সরকারি সুবিধা পাওয়ার আশায় প্রতিবন্ধী কার্ড করার পর জানতে পারেন প্রতারিত হয়েছেন। তারা ঘটনা তদন্ত করে প্রতারক আসলাম হোসেনের বিচার ও টাকা ফেরত পেতে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে আসলাম হোসেন বলেন, সরাসরি কারো কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করলেও ভুক্তভোগী আব্দুল মান্নানের থেকে টাকা নিয়েছেন বলে স্বীকার করেন।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মোতালেব সরকার বলেন, ভুক্তভোগীদের কার্ড যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে তাদের কার্ড ভুয়া। ভুক্তভোগী প্রকৃত প্রতিবন্ধীদের ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা সুলতানা বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাম্প্রতিক মন্তব্য