logo
news image

লালমনিরহাট জেলার শ্রমজীবিদের আর্থ-সামাজিক ও পেশাগত অবস্থা

-প্রফেসর ড. মো: ফখরুল ইসলাম।
তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ পরিচিত। বিচিত্র প্রকৃতির বহুমুখী আর্থ-সামাজিক সমস্যা এ দেশের টেকসই উন্নয়নের প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিপুল জনগোষ্ঠী, সীমিত সম্পদ, শ্রেণী বৈষম্য, অধিকতর দারিদ্র, ব্যাপক বেকারত্ব, অজ্ঞতা ও শিক্ষার অভাব, কৃষি ভূমির অসমতা, রাজনৈতিক সংঘাত ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ অবহেলিত ও নিুমুখী জীবন যাপনে বাধ্য হয়েছে। প্রত্যক্ষ ক্যালরি গ্রহণ (DCI পদ্ধতি)  ও জমির মালিকানার ভিত্তিতে (CBN পদ্ধতি) বাংলাদেশে ৪০ শতাংশ লোক দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০০৯, ১৭৩-১৭৪)। ধারাবাহিকভাবে এবং প্রায় একই ধরনের জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধি ভিত্তিক উন্নয়ন প্রক্রিয়া অনুসরন করা হয় বাংলাদেশে এবং পূঁজি গঠন, শিল্পায়ন, আধূনিক সেক্টরের বিস্তৃতি ও বিদেশী সাহায্য নির্র্ভর অর্থনীতিকে উন্নয়ন কর্মকান্ডের পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সংগতকারণে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মত বেকারত্ব, অশিক্ষাসহ মৌল সমস্যাগুলোর কাঙ্খিত সমাধান এখনো হয়নি। স্বল্প আয়তনের এদেশে মোট জনসংখ্যা হচ্ছে ১৪ কোটি ৬ লাখ National Economic Survey 2008) । এই বিপুল জনগোষ্ঠীকে দেশের উন্নয়নের মূল ধারার সাথে সম্পৃক্তকরণের লক্ষ্যে মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার কাঠামোগত কৌশল এখনও এদেশে গড়ে উঠেনি। এদেশের মোট জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশ বিভিন্ন শ্রম পেশায় নিয়োজিত। সর্বশেষ বাংলাদেশ শ্রমশক্তি জরিপ ২০০৫-০৬ এর সাময়িক হিসাব অনুযায়ী ১৫ বছরের উর্ধ্বে  অর্থনৈতিকভাবে কর্মক্ষম শ্রমশক্তির সংখ্যা ৪.৯৫ কোটি, তন্মধ্যে ৪.৭৪ কোটি বা ৯৫.৭৫ শতাংশ শ্রম শক্তি বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত রয়েছে। মোট শ্রমশক্তিতে সর্বাধিক শ্রমিক ৪৮.১০ শতাংশ কৃষিখাতে নিয়োজিত। উল্লেখ্য ২০০২-০৩ অর্থবছরের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী সর্বাধিক সংখ্যক ৫১.৪৯ শতাংশ শ্রমিক কৃষিখাতে নিয়োজিত ছিল। এ দুটো জরিপকালে কৃষিতে শ্রমশক্তির হার ৩.৫৯ শতাংশ কমেছে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী সর্বাধিক ৪১.৯৮ শতাংশ শ্রমশক্তি স্বকর্মে নিয়োজিত যা ২০০২-০৩ অর্থবছরে ৪৪.৭০ শতাংশ এবং এদুটো জরিপকালে স্বকর্মে নিয়োজিতদের অবদান প্রায় ২.৭২ শতাংশ কমেছে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী দিনমজুর ও নিয়মিত নিয়োগকৃত কর্মীর হার যথাক্রমে ১৮.১৪ ও ১৩.৯২ শতাংশ যা পূর্ববর্তী জরিপ অনুযায়ী ছিল যথাক্রমে ২০.০৯ ও ১৩.৭৭ শতাংশ। তবে সর্বশেষ পরিচালিত জরিপে বিনা মজুরিতে পারিবারিক শ্রমে নিয়োজিতদের হার ৩.৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২১.৭৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০০৯)। শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী বিভিন্ন খাতওয়ারি শ্রমিকের অংশ নিচে উল্লেখ করা হলো।
খাত    ১৯৯৫-৯৬    ১৯৯৯-০০    ২০০২-০৩    ২০০৫-০৬
কৃষি, বনজ ও মৎস    ৪৮.৮৫    ৫০.৭৭    ৫১.৬৯    ৪৮.১০
খনিজ ও খনন     -    ০.৫১    ০.২৩    ০.২১
ম্যানুফ্যাকচারিং     ১০.০৬    ৯.৪৯    ৯.৭১    ১০.৯৭
বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি     ০.২৯    ০.২৬    ০.২৩    ০.২১
নিমার্ণ     ২.৮৭    ২.৮২    ৩.৩৯    ৩.১৬
বাণিজ্য, হোস্টেল ও রেস্টুরেন্ট    ১৭.২৪    ১৫.৬৪    ১৫.৩৪    ১৬.৪৫
পরিবহণ, সংরক্ষণ ও যোগাযোগ     ৬.৩২    ৬.৪১    ৬.৭৭    ৮.৪৪
অর্থ, ব্যবসা ও সেবাসমূহ     ০.৫৭    ১.০৩    ০.৬৮    ১.৪৮
পণ্য ও ব্যক্তিগত সেবাসমূহ     ১৩.৭৯    ১৩.০৮    ৫.৬৪    ৫.৪৯
স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জনপ্রশাসন ও প্রতিরক্ষা    -    -    ৬.৩২    ৫.৪৯
মোট    ১০০.০০    ১০০.০০    ১০০.০০    ১০০.০০
উৎস: বিবিএস, লেবার ফোর্স সার্ভে, ১৯৯৫-৯৬, ১৯৯৯-০০, ২০০২-০৩ ও ২০০৫-০৬ (সাময়িক)।
দেশের মোট শ্রমশক্তির ৪.৯৫ কোটির মধ্যে ৯৫.৭৫ শতাংশ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থাকলেও তাদের সামাজিক ও আইনগত সুযোগ-সুবিধা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত শ্রমিকদের অবদান রাষ্ট্রীয়ভাবে অগ্রগণ্যের ক্ষেত্রে নানাবিধ জটিলতা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কর্মক্ষেত্রের পরিবেশগত সমস্যা, অনির্ধারিত কাজের সময়, পেশাগত সমস্যা, নিরাপত্তাহীনতা, কম-মজুরি, পেশাগত প্রশিক্ষণের অভাব, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাব ইত্যাদি সমস্যাগুলো শ্রমিকদের কর্মের মান ও দক্ষতাকে সংকীর্ণ করে তুলেছে। এছাড়া শ্রমিকদের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, পেশাগত ছুটি, চিত্তবিনোদন, কর্ম-দুর্ঘটনার ক্ষতিপুরণের স্বল্পতা ইত্যাদি বিষয়গুলো এদেশের শ্রমিকদের জীবনযাত্রাকে ভাবিয়ে তুলেছে। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শ্রমিকদের কর্মের সাথে জড়িত থাকলেও তাদের উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক সীমাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘের মতে অনুন্নত দেশগুলোর সমস্যা শুধুমাত্র প্রবৃদ্ধি নয় বরং উন্নয়ন। উন্নয়ন হলো প্রবৃদ্ধি ও পরিবর্তন। পরিবর্তন পক্ষান্তরে হলো সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক এবং তা একই সাথে গুণাত্মক ও সংখ্যাতাত্মিক (বেগম ১৯৮৭, পৃ:৩৪)। এই দিক থেকে বিচার করলে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রমিক অপরিসীম দারিদ্রে মানবেতর জীবন-যাপনে বাধ্য হচ্ছে। রাজনৈতিক  অস্থিরতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয় শ্রমিকদের সমাজ-জীবনে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। উন্নয়ন প্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও শ্রমিকদের মধ্যে দারিদ্র, ভূমিহীন, ও বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে সম্পদের সুষম সুবিধা, সামাজিক ন্যায় বিচার, সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা, উন্নত স্বাস্থসেবা ও কর্মসংস্থান থেকে এদেশের শ্রমিক শ্রেণী বাস্তবিকভাবে বঞ্চিত হচ্ছে। পরিশ্রমের তুলনায় কম-মজুরি প্রদান দেশের শ্রমজীবিদের আর্থ-সামাজিক ও পেশাগত দক্ষতার ক্ষেত্রে একটা প্রচলিত ধারণা সংযোজন হয়েছে। মজুরি সমস্যা নিয়ে শ্রমিক-মালিক দ্বন্দ্ব এদেশীয় নতুন কোন ঘটনা না হলেও দেশ ও অন্যের উপকারার্থে শ্রমিক তার অঘোষিত শ্রম প্রদান করেই যাচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ১৯৬৯-৭০ সালকে ভিত্তি বছর ধরে মজুরি হার সূচক (Wage Rate index) নির্ণয় করছে। নোট: ২০০৫-০৬ অর্থ বছরের পর হতে বিবিএস শিল্প শ্রমিকদের জাতীয় ভোক্তা সূচক ও প্রকৃত মজুরি হার সূচক প্রকাশ করেনি।
দেশের উত্তর জনপদের সীমান্ত সংলগ্ন জেলা হচ্ছে লালমনিরহাট। এ অঞ্চলের শ্রমজীবি মানুষের পদচারণা নিজ জেলা শহর ছাড়াও দেশের রাজধানীসহ অন্যান্য অঞ্চলেও এর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রমের সাথে জড়িত এ জেলার শ্রমিক সংখ্যা ৬০.৯৯ শতাংশ এর মধ্যে পুরুষ শ্রমজীবি মানুষের সংখ্যা ৮৮.৯১ এবং মহিলা শ্রমজীবি মানুষের সংখ্যা ৩০.৮২ শতাংশ । সীমান্তবর্তী ও অবহেলিত লালমনিরহাট জেলার মোট ১২৪১ বর্গকিলোমিটার আয়তনে ১১০৯৩৪৩ জনসংখ্যার বসবাস। এজেলায় ৫টি উপজেলা/থানা, ৪২টি ইউনিয়ন, ৪৭৬টি গ্রাম ও ২টি পৌরসভা রয়েছে। লালমনিরহাট জেলায় নারী পুরুষের অনুপাত ১০০: ১০৪ এবং পরিবারের আকার হচ্ছে ৪.৫। ৭ বছরের শিশুসহ এজেলার শিক্ষার হার ৪২.৩৩ (স্বাক্ষরতাসহ) শতাংশ(বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ২০০৭)। অনুপযুক্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা, নদী ভাঙ্গন ও খরার প্রভাব, ব্যাপক দারিদ্র, মৌসুমী বেকারত্ব, কৃষির আধূনিকীকরণের অভাব ইত্যাদি কারণে এ অঞ্চলের সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ড তেমন গতিশীল নয়। দেশের উত্তরাঞ্চলসহ এ জেলায় শতকরা ৮০ ভাগ লোক দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করে ও এখানকার শতকরা ৯৩ জন নারী ও শিশু অপুষ্টির স্বীকার। সাম্প্রতিক সময়ে যোগ হওয়া মঙ্গার প্রভাব এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে দেশের জাতীয় ব্যবস্থা থেকে অনেকখানি বিচ্ছিন্ন করার মত। চাহিদার তুলনায় কাজের অভাব এবং কাঠামোগত ও প্রাতিষ্ঠানিক অর্থনৈতিক গতিশীলতা না থাকায় এ অঞ্চলের ভাসমান জনগোষ্ঠীর সংখ্যা উল্লেখ করার মত। কাজের অভাবে ভাসমান জনগোষ্ঠী শুধুমাত্র জীবন ধারনের জন্য মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণের আশায় বাধ্য হয়ে দেশের রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় অসম migration প্রক্রিয়া গড়ে উঠতে সহায়তা করে। ফলে অনাকাঙ্খিত অভিবাসন প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থায় গৃহীত কোন তত্ত্ব বা নীতি এখানে ফলপ্রসূ অবদান ও সুফল দিতে পারে না। দারিদ্র পীড়িত ও অভাবী এ মানুষগুলো শহর অঞ্চলে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে শ্রম বিক্রি করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে। এদের জীবন সাধ্য শ্রমে GNP উন্নতি হয় না GDP -তে তেমন কিছুই যুক্ত হয় না, যদিও দেশ এবং অন্যের উপকার করে যায়।
উদ্দেশ্য: শুধুমাত্র গ্রাম থেকে আসা শ্রমিকগুলো এই জেলায় কি ধরনের আর্থ-সামাজিক ও পেশাগত অবস্থার সম্মুখীন তা বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে অনুসন্ধান করাই এই সমীক্ষার মূল উদ্দেশ্য। এতদসঙ্গে সমীক্ষার উদ্দেশ্যসমূহ হচ্ছে-
১.    দৈনিক শ্রমজীবিদের জীবনযাত্রার ধরন চিহ্নিত করা;
২.    শ্রমিকদের পেশাগত মর্যাদা জানা;
৩.    শ্রমিকদের আর্থ-সামাজিক ও পরিবেশগত সীমাবদ্ধতাগুলো অনুসন্ধান করা;
৪.    তাদের আয় ও জীবন ধারনের অবস্থা সম্পর্কে জানা; এবং
৫.    শ্রমিকদের প্রয়োজন ও চাহিদা নিরুপন এবং তা পূরণের উপায় ও সুপারিশ করা।
গবেষণা পদ্ধতি: সামাজিক জরিপ পদ্ধতি অনুসরণ করে বর্তমান গবেষণাকর্ম সম্পন্ন করা হয়েছে।
গবেষণা এলাকা নির্ধারণ ও পরিচিতি: দেশের উত্তর জনপদের সীমান্ত সংলগ্ন জেলা হচ্ছে লালমনির হাট। এটি বর্তমান অবহেলিত ও মঙ্গাকবলিত অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। লালমনিরহাট জেলায় ৫টি উপজেলা রয়েছে। গবেষণাকর্মটি লালমনিরহাট সদর উপজেলার উপর পরিচালিত হয়েছে। এ জেলায় বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক সমস্যায় শ্রমিক শ্রেণী জড়িত। তাই বর্তমান গবেষণার ক্ষেত্র হিসেবে এ অঞ্চল কে চিহিৃত করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাচন: লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলার মধ্যে সদর উপজেলাকে উদ্দেশ্যমূলক নমুনায়ন পদ্ধতির মাধ্যমে নির্বাচন করা হয়েছে।
এলাকা নির্বাচন: লালমনিরহাট সদর উপজেলার ২টি ইউনিয়ন ও পৌরসভাকে সরল দৈবচয়িত নমুনায়ন পদ্ধতির মাধ্যমে গবেষণার ক্ষেত্র হিসেবে চিহিৃত করা হয়েছে।
নমুনা আকার ও নমুনা নির্বাচন পদ্ধতিঃ শ্রমিক পরিবারের খানা প্রধান কে গবেষণার একক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নির্বাচিত এলাকার মোট ৫,৭৯৭ টি শ্রমিক পরিবারের মধ্যে ৬২১টি (১০.৭২%) পরিবারের খানা প্রধানকে সরল দৈবচায়িত নমুনায়ন পদ্ধতির মাধ্যমে নির্বাচন করা হয়েছে। গবেষণা সমগ্রকের সংখ্যা জানা থাকায় নমুনা নির্বাচনে কোকরাঞ্চের প্রচলিত পরিসাংখ্যিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে।
তথ্য সংগ্রহের উৎস: প্রাথমিক ও মাধ্যমিক দুই ধরনের উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। শ্রমিক পরিবারের খানা প্রধানের নিকট থেকে সরাসরি প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। বই, পুস্তক, জার্নাল, সাময়িকী, সরকারি নথিপত্র, ওয়েব সাইড ইত্যাদি থেকে গবেষণার মাধ্যমিক তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
তথ্য সংগ্রহের কৌশল: সাক্ষাৎকার, পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি প্রয়োগ করে গবেষণার তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। নির্ধারিত প্রশ্নমালার আলোকে সরাসরি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে গবেষণার প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও বিশ্লেষণ: সংগৃহীত তথ্য MS Word, MS Excel এবং SPSS 20 Version -এ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এছাড়া গণসংখ্যা নিবেশন, শতকরা হার, কাই-বর্গ, সহ সম্বন্ধ ইত্যাদি পরিসংখ্যানিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে।
সংক্ষেপে গবেষণা ফলাফলের পর্যালোচনা তুলে ধরা হলো :
সারণী- ০১ শ্রমিক শ্রেণীর পেশাগত অবস্থা সংক্রান্ত তথ্য
শ্রমিক শেণী    উত্তরদাতা    শতকরা হার
কৃষি মজুর     ২০৯    ৩৩.৬৬
নির্মাণ শ্রমিক    ১২৬    ২০.২৯
পরিবহন শ্রমিক    ২৩৭    ৩৮.১৭
ওয়েলডিং শ্রমিক    ৪৯    ৭.৮৯
মোট =    ৬২১    ১০০
গবেষণার প্রাথমিক ফলাফল থেকে লক্ষ্য করা যায় ৩৩.৬৬ শতাংশ কৃষি মজুর, ২০.২৯ শতাংশ নির্মাণ শ্রমিক, ৩৮.১৭ শতাংশ পরিবহন এবং ৭.৮৯ শতাংশ ওয়েলডিং শ্রমিক রয়েছে। প্রাপ্ত গবেষণায় পরিবহন শ্রমিক শ্রেণী বেশী বলে জানা যায়।
সারণী- ০২ উত্তরদাতাদের মজুরি সংক্রান্ত তথ্য
শ্রমিক শ্রেণী    প্রাপ্ত মজুরিতে সন্তুষ্টি কি না        
 মোট হ্যাঁ     শতকরা    না     শতকরা    মন্তব্য নেই    শতকরা    
কৃষি মজুর    ২৯    ১৩.৮৮    ১৫৪    ৭৩.৬৮    ২৬    ১২.৪৪    ২০৯
নির্মাণ    ৫৫    ৪৩.৬৫    ৬৯    ৫৪.৭৬    ২    ১.৫৯    ১২৬
পরিবহন    ৪৯    ২০.৬৮    ১৭১    ৭২.১৫    ১৭    ৭.১৭    ২৩৭
ওয়েলডিং    ৪    ৮.১৬    ৩৫    ৭১.৪৩    ১০    ২০.৪১    ৪৯
মোট    ১৩৭    ২২.০৬    ৪২৯    ৬৯.০৮    ৫৫    ৮.৮৬    ৬২১
উত্তরদাতাদের ১৩.৮৮ শতাংশ কৃষি মজুর, ৪৩.৬৫ শতাংশ নির্মাণ,২০.৬৮ শতাংশ পরিবহন এবং ৮.১৬ শতাংশ ওয়েলডিং শ্রেণীর শ্রমিকের প্রাপ্ত মজুরিতে সন্তুষ্টি রয়েছে বলে গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায়। মোট শ্রমিকের মাত্র ২২.০৬ শতাংশ প্রাপ্ত মজুরিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। ৬৯.০৮ শতাংশ শ্রমিক প্রাপ্ত মজুরিতে সন্তুুষ্ট নয় এবং ৮.৮৬ শতাংশ প্রাপ্ত মজুরি সম্পর্কে কোন ধরনের মন্তব্য করেনি।
সারণী- ০৩ উত্তরদাতাদের কর্মক্ষেত্রে সমস্যা
শ্রমিক শ্রেণী    কর্ম ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হয় কি না         
 মোট হ্যাঁ     শতকরা    না     শতকরা    মন্তব্য নেই    শতকরা    
কৃষি মজুর    ২০    ৯.৫৭    ১৭২    ৮২.৩০    ১৭    ৮.১৩    ২০৯
নির্মাণ    ১৩    ১০.৩২    ১১১    ৮৮.০৯    ২    ১.৫৯    ১২৬
পরিবহন    ৫৭    ২৪.০৫    ১৬৮    ৭০.৮৯    ১২    ৫.০৬    ২৩৭
ওয়েলডিং    ১    ২.০৪    ৪৫    ৯১.৮৪    ৩    ৬.১২    ৪৯
মোট    ৯১    ১৪.৬৫    ৪৯৬    ৭৯.৮৭    ৩৪    ৫.৪৮    ৬২১
৯.৫৭ শতাংশ কৃষি মজুর শ্রমিক, ১০.৩২ শতাংশ নির্মাণ, ২৪.০৫ শতাংশ পরিবহন, ২.০৪ শতাংশ ওয়েলডিং শ্রমিক কর্মক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হয় বলে গবেষণার ফলাফলে জানা যায়। মোট শ্রমিকের ১৪.৬৫ শতাংশ শ্রমিক কর্মক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হয় এবং ৭৯.৮৭ শতাংশ শ্রমিক কোন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয় না।৫.৪৮ শতাংশ শ্রমিক এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেনি বলে গবেষণার প্রাপ্ত তথ্যে লক্ষ করা যায়।
সারণী-০৪ উত্তরদাতাদের কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা সংক্রান্ত তথ্য
শ্রমিক শ্রেণী    কর্ম ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার শিকার কি না         
 মোট হ্যাঁ     শতকরা    না     শতকরা    মন্তব্য নেই    শতকরা    
কৃষি মজুর    ১৫    ৭.১৮    ১৮৭    ৮৯.৪৭    ৭    ৩.৩৫    ২০৯
নির্মাণ    ৫    ৩.৯৭    ১১৬    ৯২.০৬    ৫    ৩.৯৭    ১২৬
পরিবহন    ৪১    ১৭.৩০    ১৮৫    ৭৮.০৬    ১১    ৪.৬৪    ২৩৭
ওয়েলডিং    ৩    ৬.১২    ৪২    ৮৫.৭১    ৪    ৮.১৬    ৪৯
মোট    ৬৪    ১০.৩০    ৫৩০    ৮৫.৩৫    ২৭    ৪.৩৫    ৬২১
কৃষি মজুর শ্রমিকের ৭.১৮ শতাংশ, নির্মাণ শ্রেণীর ৩.৯৭ শতাংশ, পরিবহন শ্রমিকের ১৭.৩০ শতাংশ এবং ওয়েলডিং শ্রমিকের ৬.১২ শতাংশ কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। মোট শ্রমিকের ১০.৩০ শতাংশ দুর্ঘটনার সম্মুখীন এবং ৮৫.৩৫ শতাংশ দুর্ঘটনার শিকার নয় বলে গবেষণার ফলাফলে জানা যায়। ৪.৩৫ শতাংশ শ্রমিক এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেননি।
সারণী- ০৫ উত্তরদাতাদের শ্রম আইনে সুবিধা সংক্রান্ত তথ্য
শ্রমিক শ্রেণী    শ্রম আইনের সুবিধা পেয়েছে কি না         
 মোট    হ্যাঁ     শতকরা    না     শতকরা    মন্তব্য নেই    শতকরা    
কৃষি মজুর    -    -    ১১৫    ৫৫.০২    ৯৪    ৪৪.৯৮    ২০৯
নির্মাণ    ১৬    ১২.৭০    ৬০    ৪৭.৬২    ৫০    ৩৯.৬৮    ১২৬
পরিবহন    ১    ০.৪২    ১৬১    ৬৭.৯৩    ৭৫    ৩১.৬৫    ২৩৭
ওয়েলডিং    -    -    ৩০    ৬১.২২    ১৯    ৩৮.৭৮    ৪৯
মোট    ১৭    ২.৭৪    ৩৬৬    ৫৮.৯৪    ২৩৮    ৩৮.৩২    ৬২১
উত্তরদাতাদের ১২.৭০ শতাংশ নির্মাণ ও ০.৪২ শতাংশ পরিবহন শ্রমিক শ্রম আইনের অধীনে সুবিধা পেয়েছে। মোট শ্রমিকের ২.৭৪ শতাংশ শ্রম আইনের অধীনে সুবিধা পেয়েছে এবং ৫৮.৯৪ শতাংশ শ্রমিক সুবিধা পায়নি। ৩৮.৩২ শতাংশ শ্রমিক এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেনি।
সারসংক্ষেপ:
লালমনিরহাট জেলার দরিদ্র বিশেষ করে গ্রামীণ অসহায়, দুঃস্থ এবং সামর্থহীন শ্রমিক শ্রেণীর জীবনমান এবং পেশাগত অবস্থা সুগভীরভাবে অনুসন্ধান করা বর্তমান সমীক্ষা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ও মোগলহাট ইউনিয়ন এবং পৌরসভার ১ ও ৫ নং ওয়ার্ডের মোট ৫,৭৯৭ জন শ্রমজীবির মধ্যে ৬২১ জন শ্রমিকের উপর জরিপ পদ্ধতির মাধ্যমে গবেষণার প্রাপ্ত ফলাফল অনুসন্ধান করার চেষ্টা করা হয়। মোট ৬২১ জন উত্তরদাতার ৯ শতাংশ মহেন্দ্রনগর, ২১ শতাংশ মোঘলহাট ইউনিয়ন,শতাংশ পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড এবং ২৪ শতাংশ পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের অধিবাসী বলে গবেষণার প্রাথমিক তথ্য থেকে জানা যায়। উল্লেখ করা যায় প্রাপ্ত গবেষণায় পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের শ্রমিক সংখ্যা বেশী। গবেষণার প্রাথমিক তথ্যে লক্ষ্য করা যায় মোট উত্তরদাতার ৯৮.৮ শতাংশ পুরুষ, ৪.৫ শতাংশ মহিলা শ্রমিক। উত্তরদাতাদের বয়সের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় ২০ বছরের মধ্যে শ্রমিকের সংখ্যা .০৫ শতাংশ মাত্র। ২৬-৩০ বছর বয়সের শ্রমিক সংখ্যা বেশি (২৩.০ শতাংশ) এবং ৬১ বছরের উর্ধ্বে শ্রমিকের সংখ্যা ৪.৫ শতাংশ বলে গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায়।
গবেষণার প্রাথমিক ফলাফলে লক্ষণীয় যে, ৩৩.৭ শতাংশ কৃষি, ২০.৩ শতাংশ নির্মাণ, ৩৮.২ শতাংশ পরিবহন৭.৯ শতাংশ ওয়েলডিং শ্রমিক পরিবার বসবাস করে। পরিবহন মিক সংখ্যার (৩৮.২) পরিবারেই বেশী বলে গবেষণার প্রাথমিক তথ্য থেকে প্রতীয়মান হয়। গবেষণার ফলাফল থেকে লক্ষ্য করা যায় শ্রমিকদের মধ্যে ১.৬ শতাংশ অবিবাহিত, ৯১.১ শতাংশ বিবাহিত, ৩.৪ শতাংশ বিধবা এবং ২.৯ শতাংশ আলাদা/তালাক প্রাপ্ত। শ্রমিকদের বাড়ীর মালিকানার ক্ষেত্রে ৮০.৮ শতাংশ নিজস্ব বাড়ীতে, ৬.৯ শতাংশ আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে এবং ১২.২ শতাংশ অন্যান্য জায়গায় বসবাস করে বলে গবেষণার প্রাথমিক তথ্য থেকে জানা যায়। ১.৩ শতাংশ শ্রমিক পাকাবাড়ীতে, ৬.১ শতাংশ আধা-পাকা বাড়ীতে, ৭৭.৬ শতাংশ টিন ও কাঠের তৈরী বাড়ীতে এবং ১৪ শতাংশ শ্রমিক বাঁশ ও খরের তৈরী বাড়ীতে বসবাস করে। শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে গবেষণার তথ্য থেকে লক্ষ্য করা যায় ৫৮.৪৫ শতাংশ শ্রমিক ১ম-৫ম শ্রেণী, ৮.৫৩ শতাংশ ৬ষ্ঠ-৮ম শ্রেণী, ১.১৩ শতাংশ ৯ম শ্রেণী, ৩.৮৭ শতাংশ এস.এস.সি, ০.৩২ শতাংশ শ্রমিক উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত। ২৭.৭০ শতাংশ শ্রমিক নিরক্ষর বলে গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায়। উত্তরদাতাদের ৩৫.৭৫ শতাংশ শ্রমিক বিদ্যুৎ সুবিধা পায় এবং ৬৪.২৫ শতাংশ শ্রমিক বিদ্যুৎ সুবিধা পায় না। পরিবহন শ্রমিক শ্রেণী সর্বোচ্চ (৪৩.৮৮)  বিদ্যুৎ সুবিধা পায়। মোট শ্রমিক শ্রেণীর ৮২.৪৫ শতাংশ সরকারী হাসপাতাল, ১১.১১ শতাংশ হোমিওপ্যাথ, ০.৩২ শতাংশ কবিরাজী, ১.০৩ শতাংশ শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা সুবিধা গ্রহণ করে। শুধুমাত্র পরিবহন শ্রমিক ২.৯৫ শতাংশ শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা সুবিধা পায় বলে গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায়।
ব্যবহারকৃত পানির উৎসের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় মোট শ্রমিকের ১.২৯ শতাংশ টেপের পানি, ৯১.১৪ শতাংশ টিউবয়েলের পানি ব্যবহার করে। মাত্র ১১.২৭ শতাংশ শ্রমিকের স্যানিটেশন পয়ঃ নিষ্কাশন সুবিধা রয়েছে। ২৪.১৫ শতাংশ শ্রমিক আধাপাকা, ৪৮.৩১ শতাংশ শ্রমিক কাচা, ১১.১১ শতাংশের শ্রমিক খোলা জায়গায় পয়ঃ নিষ্কাশন সুবিধা রয়েছে। মোট শ্রমিকের ২২.০৬ শতাংশ প্রাপ্ত মজুরিতে সন্তুষ্টি রয়েছে। ৬৯.০৮ শতাংশ শ্রমিক প্রাপ্ত মজুরিতে সন্তুষ্ট নয় এবং ৮.৮৬ শতাংশ শ্রমিক কোন মন্তব্য করেনি। নির্মাণ শ্রমিকের ৪৩.৬৫ শতাংশ প্রাপ্ত মজুরিতে বেশি সন্তুষ্ট বলে গবেষণার ফলাফলে লক্ষ্য করা যায়। ১৪.৬৫ শতাংশ শ্রমিক কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার শিকার, ৭৯.৮৭ শতাংশ শ্রমিক দুর্ঘটনার শিকার নয় এবং ৫.৪৮ শতাংশ শ্রমিক এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেনি। প্রাপ্ত গবেষণায় লক্ষ্য করা যায় পরিবহন শ্রেণীর শ্রমিক (১৭.৩০) কর্মক্ষেত্রে বেশি দুর্ঘটনার শিকার। মাত্র ২.৭৪ শতাংশ শ্রমিক শ্রম আইনে অধীনে সুবিধা পায়, ৫৮.৯৪ শতাংশ শ্রমিক কোন ধরনের সুবিধা পায় না এবং ৩৮.৩২ শতাংশ শ্রমিক এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেনি। এ ক্ষেত্রে নির্মাণ শ্রেণীর শ্রমিক (১২.৭০) বেশি সুবিধা পায় যায় গবেষণার ফলাফলে লক্ষ্য করা যায়।
ঘন ঘন বন্যা ও নদীভাঙ্গন এখন তিস্তাপাড়ের মানুষের বড় সমস্যা। বড় বড় গৃহস্থরাও নদীভাঙ্গনের শিকার হয়ে পথের ফকির হয়ে যান প্রতিবছর।
এ জেলার জমি খুবই উর্বর। বর্তমানে ধান, মাছ ও ভূট্টার আবাদ বেড়ে গেছে। কিন্তু ভূমিহীন মানুষের সংখ্যা বেশী হওয়ায় অতি দরিদ্ররা সেটা থেকে কোন সুফল পায় না। দেশে অন্যান্য জেলা তেকেও নদি ভাঙ্গা মানুষ ও অতিদরিদ্র মানুষ বড় শহরগুলোতে ভীড় জমায়। দিনমজুরী কজে নিয়োজিত তাদের সংখ্যাও অনেক বেশী। তাই বৃহত্তর রংপুর এলাকার দিনমজুরদেরকে কেউ এখন আর আগের মত মফিজ ডাকে না। তবুও অফ সিজনে কাজ না থাকায় এবং তিস্তা ও ধরলার ব্যাপক ভাঙ্গনে বহু মানুষ বাস্তাহারা হওয়ায় প্রতিবছর নিজ গ্রাম ছেড়ে ঢাকা বা অন্য কোন এলাকায় চলে যায়। তাই কর্মহীন মাসগুলোতে এই এলাকার দরিদ্র বাস্তহারা মানুষগুলোর জন্য বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে কর্মসংস্থান করা গেলে তারা াভিবাসী হতো না এবং অত্র জেলার কৃষি মজুরের সংকট দূর হতো। পাশাপাশি কৃষির উন্নতি হতো এবং সেটা দেশের খাদ্য সংকট নিরসনে প্রভূত ভূমিকা রাখতে পারতো বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

*লেখক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন, সমাজকর্ম বিভাগের প্রফেসর ও সাবেক চেয়ারম্যান। E-mail: fakrul@ru.ac.bd

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top