কম্বোডিয়ার সামওনের মানবেতর জীবন
ইমাম হাসান মুক্তি, প্রতিনিধি, লালপুর (নাটোর)
কম্বোডিয়ার খায়েতপ্রাইবাই থেকে চাকরীর খোঁজে মালোয়েশিয়ায় পাড়ি জমান ‘সামওন’ (৪০)। সামওনের বয়স তখন ২৫ বছর। তাঁর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী বাবা ‘হাইসামওল’ ও মা ‘ছনমাই’।
একই সময়ে নাটোরের লালপুরের মোহরকয়া (কয়লারডহর) গ্রামের আবুল কালাম আজাদ (২২) মালোয়েশিয়ায় যান। তার পিতা দবির উদ্দিন মহুরী ও মাতা আনোয়ারা বেগম।
মালোয়েশিয়ায় আবুল কালাম আজাদ ও সামওনের মধ্যে পরিচয়, পরিণয়। বিয়ের সময় ‘সামওন’ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলে নতুন নাম হয় ‘স্মৃতি বেগম’। সেখানে আমেনা খাতুন (১৩), আয়েশা খাতুন (১২) ও আমিরা খাতুন (৯) নামে তিন কন্যা সন্তান হয়।
সাত বছর আগে (২০১৪) স্ত্রী ও তিন কন্যাকে নিয়ে দেশে ফেরেন আবুল কালাম আজাদ। বুধিরামপুর শান্তিপাড়ায় চার কাঠা জমি কেনে বাড়ি নির্মাণ শুরু করেন। স্ত্রী সন্তানদের ভাড়া বাসায় রেখে একাই মালোয়েশিয়া ফিরে যান।
গত বছর (২০২০) তাঁর কিডনী রোগ ধরা পড়ে। চরম অসুস্থ হয়ে দেশে ফেরার এক মাসের মাথায় ২০২১ সালের ১৭ মার্চ ৩৭ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
শনিবার (১৪ আগস্ট ২০২১) কথা হয় স্মৃতি বেগম ওরফে সামওনের সাথে। ভাল বাংলা বলতে পারেন না। ভাঙ্গা ভাঙ্গা বাংলায় স্মৃতি বেগম বলেন, স্বামীর চিকিৎসার জন্য ১০ কাঠা জমি বিক্রি করেছেন। বাড়ির কাজ শুরু করেও শেষ করতে পারেন নি। তিনটি সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
তিনি বলেন, বৌদ্ধ ধর্ম ত্যাগ করে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। তাঁর ইচ্ছে মুসলিম হিসেবে কবরটা যেন তার স্বামীর দেশে হয়।
স্মৃতি বেগম আরো বলেন, বাংলাদেশে বসবাস করলেও জাতীয় পরিচয়পত্র পাননি। যার ফলে বিভিন্ন কাজে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী আক্তার বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সাম্প্রতিক মন্তব্য