logo
news image

চলে গেলেন লালপুরের হাসেম স্যার

প্রতিনিধি, নাটোর (লালপুর)
পৃথিবীতে কেউ অমর নয়। জীব মাত্রই মরণশীল। একটি অনির্দিষ্ট সময় পার করে সকলকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হয়। এই মৃত্যুর মধ্য দিয়েই তার ইহজীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে। নশ্বর দেহটা মাটিতে মিশে যায়। কয়েক বছর আত্মীয়-স্বজনরা মনে রাখে, তারপর ভুলে যায়। কিন্তু একজন শিক্ষক কখনো মরেন না। তিনি অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রীর মনে ও মগজে বেঁচে থাকেন। শত বছর পার হলে যখন তার কোনো একজন ছাত্র বা ছাত্রী কোন শুভ মুহূর্তে তার প্রিয় শিক্ষকের কথা স্মরণ করে, আবেগে আপ্লুত হয়। কিংবা তার পরবর্তী প্রজন্মের কাছে গল্প করে, তখন সেই শিক্ষক বেঁচে উঠেন। মরণের অন্ধকার থেকে জীবনের আলোতে ফিরে আসেন।
নাটোরের লালপুরের এমন একজন শিক্ষক আবুল হাসেম সরকার। সোমবার (১৮ এপ্রিল ২০২১) দুপুর ১ টায় অসুস্থ অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-এ নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। বাদ মাগরিব মোমিনপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ্ মাঠে মরহুমের নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।
জীবন বৃত্তান্ত:
নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার মোমিনপুর গ্রামের ১৯৫৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন আবুল হাসেম সরকার। পিতা মরহুম বয়েন উদ্দীন সরকার ও মাতা মরহুম রিজিয়া বেওয়া। স্ত্রী মোছা. মানজুরা সরকার। তাঁদের বড় ছেলে আবুল হাসনাত উৎসব বেসরকারী বিশ^বিদ্যালয় থেকে ফার্মাসিস্ট বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন এবং ছোট ছেলে আসিব আহমেদ রাজশাহী সরকারী কলেজে পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।  
তিনি মোমিনপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৭০ সালে ৫ম শ্রেণি, ১৯৭৬ সালে  বিলমাড়ীয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৭৮ সালে আব্দুলপুর সরকারী কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ১৯৮২ সালে বিএ পাশ করেন এবং ১৯৯৬ সালে রাজশাহী টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বিএড ডিগ্রী অর্জন করেন। এছাড়াও স্বল্প মেয়াদী অনেক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
তিনি ১৯৯৩ সালে মঞ্জিলপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৩ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন এবং জানুয়ারি ২০১৯ সালে অবসর গ্রহন করেন।
আবুল হাসেম সরকার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) লালপুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক, নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর পরিচালক ১৭ বছর ও নাটোর জেলার সভাপতি, মোমিন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপিত, মোমিনপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সভাপতি, মোমিনপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।  এছাড়াও এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ সকল প্রতিষ্ঠানে তার অবদান রয়েছে।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top