logo
news image

লালপুরে আকস্মিক অবৈধ পুকুর খনন বন্ধ

ইমাম হাসান মুক্তি, প্রতিনিধি, নাটোর (লালপুর)
নাটোরের লালপুরে জেলা প্রশাসক শাহরিয়াজের কঠোর হুশিয়ারীর পরেও প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে আতাত করে একের পর এক আবাদি জমি নষ্ট করে যাচ্ছিলো অবৈধ মাটি ব্যবসায়ীরা। কোনভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছিলো না ফসলি জমিতে পুকুর খনন।
এ নিয়ে গণমাধ্যমগুলোতে ব্যাপকহারে প্রচার করা হয়। সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে। উপজেলায় ভ্রাম্যমান আদালতের কার্যক্রম ছিল সীমিত। জনসাধারণকে জিম্মি করেই এক প্রকার দাম্ভিকতার সাথে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ফসলি জমি নষ্ট করে শ শ পুকুর খনন চলছিলো।
গ্রামীণ রাস্তায় অবৈধ ট্রাক্টর ও মাটি পড়ে রাস্তাগুলো নষ্ট হলেও প্রভাবশালী পুকুর খননকারীদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছিলো সাধারণ মানুষ। চুপচাপ দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিলো না। তবে হঠাৎ করেই রাতারাতি অবৈধ মাটি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে রক্ষা পায় আবাদি জমি।
গত ২৯ মার্চ লালপুর থানায় যোগদান করেন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফজলুর রহমান। তিনি এর আগে এখানে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তার যোগদানের পরেই পুকুরগুলো থেকে ভেকু (এক্সেভেটর) নিয়ে পালিয়ে যায় মাটির ব্যবসায়ীরা। রাস্তাগুলোই আর চোখে পড়ছে না অবৈধ ট্রাক্টর। চুক্তি মোতাবেক চলমান পুকুর কাটা শেষ না করেই চলে গেছে খননকারীরা।
হঠাৎ এমন পরিবর্তন রহস্য খুঁজতে গিয়ে পুকুরখননকারী ও সাধারণ মানুষের সাথে কথা জানা যায়, লালপুর থানায় নতুন ওসি (অফিসার ইনচার্জ) যোগদান করেছে। তিনি এর আগেও এ থানায় কর্মরত ছিলেন। এ কারণে সকলেই তার সম্পর্কে জানে। তবে তাকেও ম্যানেজ করতে কমতি রাখা হয়নি। কিন্তু কিছুতেই তা সম্ভব না হওয়ায় আপাতত বন্ধ আছে উপজেলার সমস্ত পুকুর খনন কাজ।
এ বিষয়ে কয়েকজন মাটির ব্যবসায়ী বলেন, ওসি নতুন এসেছে। সবাই নতুন এলে এমন করেই। ক’দিন পরেই ঠিক হয়ে যাবে।
ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মিন্টু নামের এক যুবক বলেন, পুকুর খননকারীদের কাছে লালপুরবাসী জিম্মি হয়ে ছিলো। রাস্তাগুলোর এতোই খারাপ অবস্থা যে গত কিছুদিন আগে বৃষ্টি হওয়ায় আমার চোখের সামনে ৮ থেকে ১০জন দুর্ঘটনার শিকার হয়।
একজন সংবাদকর্মী বলেন, প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উপজেলায় ব্যাপকহারে ফসলি জমিতে পুকুর খনন হয়েছে। আমরা এ নিয়ে অনেক রিপোর্ট করেছি। তবুও বন্ধ হয়নি। তবে নবাগত ওসি যোগদানের পর সবকিছু বন্ধ আছে । এ জন্য অবশ্যই লালপুরবাসী তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে।
এ বিষয়ে লালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফজলুর রহমান বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই ফসলি জমিতে পুকুর খনন চলছিলো। লালপুর থানা পুলিশ তাদের কঠোর হাতে দমন করেছে। শুধু তাই নয়, পদ্মা নদীতে অবৈধ বালু খেকোদের বিরুদ্ধেও নিয়মিত অভিযান চলছে। আমরা মাদকসহ লালপুরের আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি। সকলের ঐকান্তিক সহযোগিতা পেলে আমরা সকল অনিয়ম-দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও মাদকের করাল গ্রাস থেকে লালপুরবাসীকে রক্ষা করতে পারবো।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top