একগুচ্ছ কবিতা ও ছড়া
ড. মির্জা গোলাম সারোয়ার পিপিএম
খোকা পড়ে
চুপটি করে
গাছের নীচে বসে
খরগোশ পেচা আসে
খোকাবাবুর পড়া শুনে খুশি হয়ে হাসে।
পড়া শুনে
মনে মনে
তারাও পড়ে যায়
খুব মজা পায়
খোকার সাথে সবসময় তারাও পড়তে চায়।
শিখে পড়া
বলে ছড়া
খরগোশ পাশে বসে
পেচা শুধু হাসে
তাইনা দেখে খোকার মনে আনন্দ বয়ে আসে।
ছুটে চলেছি
মেঘের আঁধারে ছেয়ে গেছে আমরন সূখ
যেখানে খুঁজে পাই বৃষ্টি ভেজা স্বপ্ন ,
বিরহের আকাশে স্বপ্নগুলো এলোমেলো
যা এনেছে বিষাদেরই ছায়া।
আবছা আলোয় হয়েছি নিরাশ
হারিয়েছি অনেক আশা সারাটিজীবন,
হাওয়াগুলো ছন্নছাড়া হয়ে ভেসে যায়
পলকে ছুঁয়ে যায় চির বেদনা।
মনে পড়ে তারার আলোয় সোনালি দিনের কথা
যেখানে গুনগুনিয়ে পাখিরা গাইতো গান,
গভীর রাতে শুনতে পাই নীরব কান্না
সীমাহীন স্মৃতি শুধু ভেসে আসে চোখে।
স্বপ্নগুলো অনেক বেদনা নিয়ে কেঁদেই চলে
থমকে দাঁড়ায় আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন ,
হয়নি বলা কখনও হৃদয়ের বেদনা
আবছা আলোয় স্বপ্ন নিয়ে তাইতো ছুটে চলেছি।
খোকা খেলে দাবা
বসে একা
খেলে খোকা
দাবার গুটি চালে
মন্ত্রীকে দেয় ফেলে
খুশি হয়ে তাকিয়ে থাকে দু'চোখ মেলে।
মাথা হেলে
আবার খেলে
শুধু জিতে যায়
অনেক মজা পায়
পড়ার ফাঁকে সারাদিন দাবা খেলতে চায়।
খেলা শেষে
অবশেষে
খোকা পড়তে বসে
বই ফেলে চষে
তাইনা দেখে মা তার মিষ্টি করে হাসে।
ইচ্ছেগুলো
নুপুরের ছন্দে শিহরিত হয়ে যাই
ছুটে চলি স্বপ্নহীন চোখে সীমাহীন পথে,
কোকিলের কুহু ডাকে খুঁজে পাই ব্যথাভরা গান
যেখানে স্বপ্নগুলো মেঘে ঢেকে শুধু ভেসে চলে।
জীবনের গানগুলো দুরে সরে যায়
নিরাশ হয়ে থেমে যাওয়া নদীর মতো,
ছুটেছি কুয়াশার আবরনে নীড়হারা পাখি হয়ে
মনের অরন্যে লুকিয়ে থাকা অনেক স্বপ্ন নিয়ে।
জ্যোস্নার আলোয় বুনেছি স্বপ্নের জাল
ঝিরিঝিরি হাওয়ায় জাগিয়ে আশা,
আকাশে মেঘের ভেলায় স্মৃতিগুলো ভেসে যায়
দু'চোখে নেমে আসে বেদনার নীরব অশ্রু।
ঠিকানাহীন ভাবনাগুলো বড়ই বেসামাল
ঠিক যেন বাঁশির করুন সুরের বেদনা,
তাইতো গোধূলির আলোয় আমার ইচ্ছেগুলো আসে
হৃদয়ের বাসনায় অনেক আভা নিয়ে।
সোনালি বিকেল
ঝড়ো বাতাসে স্বপ্নের জাল ছিড়ে
হারিয়ে যায় পাওয়া না পাওয়ার গল্পগুলো,
উদাস হাওয়ায় পালহীন নৌকার মতো
বেদনার আড়ালে শুধু ঢাকা পড়ে যায়।
আকাশের তারাগুলো নীরবে জ্বলজ্বল করে
যেন তাদের হৃদয়ে অনেক আনন্দের সমাহার ,
আকাশটা চারিদিকে শুধু চেয়ে থাকে
বলতে চায় না বলা অনেক কথা।
তীর ভাঙা নদীর অফুরন্ত উন্মাদনায়
নিঃস্ব হয়ে আমি শুধু ভেবে যাই ,
গাছের ডালে বসে পাখিটি অবাক হয়ে দেখে
অতৃপ্ত হৃদয়ে আমি বসে একা।
সোনালি বিকেলগুলো ফিরে এসে বলে যায়
ফুরিয়ে যাওয়া দিনের অনেক বেদনার গান ,
আঁধারের ছায়াতে ক্লান্ত হয়ে মিছে খুঁজে মরি
অকারণে সারাক্ষন দু'চোখে নিরাশার স্বপ্ন নিয়ে।
একদিন অগোচরে
হৃদয়ের নীল আকাশের নীলিমায়
নীড়হারা পাখিগুলো আসে বেদনা নিয়ে ,
বৃষ্টিরা থেমে থেমে শুধু কেঁদেই চলে
শালিকের সূখের ডাকে থেমে যায়।
দুটি পাখি মুখোমুখি বসে বলে যায়
হৃদয়ের না পাওয়া অনুভূতির কথা ,
বয়ে আনে শুধু বেদনার আভা
স্বপ্নগুলো হারিয়ে যায় বেদনার আড়ালে।
পথহারা পাখি অশ্রুনয়নে উড়ে চলে
হৃদয়ে তাদের নীরব বেদনা ,
অবুজ ব্যথার অমলিন প্রদীপ জালিয়ে
হতাশ হয়ে ছুটে চলে অজানার পথে।
শিশির ছোঁয়া ফুলের সুবাসে খুঁজে পায়
স্বপ্নের আলো প্রজ্বলিত তারার মতো ,
স্বপ্ন হারিয়ে মেঘের ভেলায় ভেসে চলে
এভাবেই হারিয়ে যায় একদিন অগোচরে।
খোকাখুকু
মেঠো পথে
যেতে যেতে
খোকাখুকু হাসে
ঘুরতে ভালবাসে
ঘুরেফিরে বেড়িয়ে তাদের প্রান জুড়িয়ে আসে।
হেঁটে হেঁটে
যায় মাঠে
শুধু খেলা করে
খুশি যেন ঝরে
বাড়ি ফিরে আসে তারা খেলাধুলার পরে।
বাড়ি যেয়ে
মাকে পেয়ে
অনেক কথা বলে
কথা বলেই চলে
মায়ের আদর নেয় তারা দু'জনাই মিলে।
একাকি নীরবে
আশাগুলি ঝরে যায় বাতাসের বাতায়নে
আকাশটা ছুঁই ছুঁই করেও হয়না ছোঁয়া ,
দুষ্টু হাওয়ায় ভেসে যায় মনের ব্যাকুলতা
এ যেন ঝরে যাওয়া সদ্য ফোটা ফুল।
বনের পাখি পথ ভুলে গান গেয়ে যায়
অশ্রুভেজা চোখে শুধু চেয়ে থাকে ,
কাশফুলের শীতল জোয়ারে খুঁজে পায় বেদনা
থেমে যায় জীবনের গল্পগুলো ক্লান্ত হয়ে।
স্বপ্নের ঘোরে আছন্ন হয়ে ছুটে চলে
দুরন্ত গতিতে অফুরন্ত আশা নিয়ে ,
একপশলা বৃষ্টি আসে আকাশ কাঁপিয়ে
হারিয়ে যায় আকাশ ভরা রঙিন স্বপ্ন।
ময়ুরেরা পেখম মেলে নেচে চলে শুধু
হৃদয়ে অনেক আশার আলো নিয়ে ,
মনের সমস্ত গ্লানি মুছে দিয়ে যায়
অমাবস্যার অন্ধকারে একাকি নীরবে।
অনেকদিনের পরে
শ্রাবনের মেঘগুলো উড়ে যায় নীল আকাশে
আবেশের অফুরন্ত পরশ বুলিয়ে,
বিরহের বেদনায় হারিয়ে যেতে চায়
সীমানা ছেড়ে অনেক অতৃপ্তির আভা নিয়ে।
ক্লান্ত করুন চোখে চুপচাপ বিষন্ন হয়ে
পেতে চায় দিগন্ত ছোঁয়া সূখের নীলিমা,
স্বপ্নের ঝিকিমিকি আলোয় খুঁজে ফিরে
চির বসন্তের নতুন স্বপ্নীল হাওয়া।
আকাশে ওঠার সিঁড়ি বেয়ে চলে তাই
খুঁজে পেতে সূখের অনন্ত ঠিকানা ,
যেখানে রবে একরাশ নীরব সূখ
আর আনন্দে অশ্রুসিক্ত হওয়ার কথা।
স্বপ্ন ঘুড়িটা নীল আকাশে উড়িয়ে
হৃদয় দুলে শুধু আশা- নিরাশায় ,
চারিদিকে স্বস্তির সুবাতাস বইয়ে
অবশেষে অনেকদিনের পরে যেন বৃষ্টি এলো।
খোকা এলো শহরে
হঠাৎ করে
গ্রাম ছেড়ে
শহরে এলো খোকা
নিজেকে লাগে বোকা
তার বয়সি টোকাইরা দেয় শুধু ধোকা।
ঘাড় বেঁকে
দালান দেখে
খোকা আশ্চর্য হয়
খুব ভয় পায়
এই বুঝি দালান ভেঙে পড়লো তার গায়।
রাতের বেলা
যেন মেলা
ফিরে ফিরে চায়
অবাক হয়ে যায়
লাল-নীল বাতি দেখে অনেক মজা পায়।
আবেশের ছোঁয়া
প্রথম দেখার মধুর আলাপনে
আমি স্বপ্নে বিভোর,
এরপর দূরন্ত ছুটোছুটি
হৃদয়ের আবেগ নিয়ে হয়েছি ছন্দহারা।
ভেসে চলা মেঘের মতো চঞ্চল হয়ে
দেখেছি রঙিন স্বপ্ন দু'চোখে সারাক্ষণ ,
পালহীন নৌকার মতো ভেসেছি সুদূরপানে
অথচ তুমি যেন নির্বাক গতিহীন স্রোতধারা।
নীল আকাশের দিকে চেয়ে স্বপ্ন সাজাতে
আনমনে হয়েছি একাকার ,
হারিয়েছি অজানার পথে
অফুরন্ত আশা- নিরাশায়।
অতৃপ্ত অনুভূতি নিয়ে
চেয়েছি তোমার পানে অবিরাম,
অবশেষে হৃদয় উজার করে এলো
অফুরন্ত আবেশের ছোঁয়া।
রেলগাড়ি
ধোঁয়া ছেড়ে
হুইসেল মেরে
রেলগাড়ি যায়
খোকাখুকু আয়
রেলগাড়ি দেখে তারা খুব মজা পায়।
ঝিকঝিক
ঠিকঠিক
চলে রেলগাড়ি
রাস্তা দেয় পাড়ি
একের পর এক স্টেশন যায় শুধু ছাড়ি।
খুব জোরে
হাওয়ায় উড়ে
শুধু ছুটে চলে
অনেক স্টেশন ফেলে
থেমে যায় যখন তখন কোনো সিগনাল পেলে।
স্বপ্নেভরা দিনগুলো
স্বপ্নেভরা দিনগুলো স্মৃতি হয়ে ফিরে আসে
না পাওয়ার বেদনায় শুধু যে কাঁদায় ,
অদেখার বেদনা বুকে চেপে রেখে
খোলা হাওয়ায় দুঃখের বেদনা বয়ে আনে।
হৃদয়ের জানালায় ব্যথাভরা সুর নিয়ে
স্বপ্নগুলো বারবার মেঘে ঢেকে যায় ,
আকাশে মেঘের ছড়াছড়ি মিছে আশায়
ফেলছে শুধু রক্তিম আভার এক ফোটা অশ্রু।
সোনালি দিনের অনেক সুখাস্মৃতি নিয়ে
শ্রাবণ সন্ধ্যায় ফুলগুলি শুধু ঝরে যায় ,
হারানো দিনগুলো যেন স্মৃতির ঝরাপাতা
মনের মাঝে বয়ে আনে একরাশ বেদনা।
জীবনের গল্পগুলো অনেক নিঠুর হয়ে
বারবার ভেসে আসে হৃদয়ের খাতায় ,
ক্লান্ত হয়ে প্রদীপের আলো নিভে যায়
স্বপ্নগুলো হারিয়ে যাবে এভাবেই একদিন।
নানার বাড়ি
অনেক মজা পাই
পড়ার চিন্তা নাই
নানার বাড়ি যেয়ে
শীতের পিঠা খেয়ে
সারাদিন ঘুরে বেড়াই সুখের গান গেয়ে।
কোনো শাসন নাই
ইচ্ছে মতো খাই
নানি করেন আদর
নানা বলেন বাদর
মামা-মামি হেসে বলেন আমি নাকি ত্যাদড়।
খারাপ হয় মন
করি এক পন
খবর পাঠান বাবা
বলেন কবে যাবা
মুখবন্ধ করে তাইতো আমি হয়ে যাই বোবা।
স্বপ্ন আসে
স্বপ্ন আসে হৃদয়ের মাঝে চুপিসারে
চোখের পাতায় থমকে দাঁড়ায় সারাক্ষণ ,
রাত জাগানো মনে থাকে শুধু অপেক্ষায়
দু'চোখে নেমে আসে অশ্রুর অজস্র ঢল।
ফুলের সুবাসে বিমোহিত হয়ে খুঁজে
কুয়াশার আবরনে থাকা অনন্তজীবন ,
নদীর তীব্র স্রোতে স্বপ্নগুলো ভেসে যায়
এলোমেলো হাওয়ায় আসেনা ফিরে আর।
ইচ্ছেগুলো উড়ে যায় অজানার পথে
ফেলে যায় বেদনার মায়াভরা স্মৃতি ,
আছড়ে পড়া ঢেউয়ের মাঝে খুঁজে সূখ
জোছনার আলো মেখে সুখগুলো থাকে নীরবে।
রাখালের বাঁশির সুরে সূখের আবেশে
হারিয়ে যেতে চায় আকাশের দূর নীলিমায়,
শানিত নদীর স্রোতে আশা-নিরাশার মাঝে
উদাস হয়ে বসে থাকে আকাশ পানে চেয়ে।
খোকাখুকু বাগানে
মনের টানে
ফুল বাগানে
খোকাখুকু যায়
অনেক আনন্দ পায়
অনেক ফুল দেখে তারা বিমোহিত হয়।
লাল ফুল
সাদা ফুল
খুব ভালো বাসে
ফুল যেন হাসে
তাইনা দেখে তাদের মনে আনন্দ বয়ে আসে।
ফুলের ঘ্রাণ
যেন প্রান
লাগে অনেক ভালো
যেন আভার আলো
ফুল বাগানে বই পড়ে তারা খুশি হলো।
একলা আকাশে
একলা আকাশে মেঘের খেলায় মন ছুঁয়ে
নদীর ঢেউগুলো আছড়ে পড়ে হৃদয়ে,
রঙিন আঁচলের গন্ধে আছে অনেক সূখাস্মৃতি
যা কুয়াশার আবরনে ঢেকে যায় কেন জানি।
সাথী হারা পাখি আকাশে উড়ে একা
অশ্রুভরা চোখে গায় শুধু বেদনার গান,
মেঘগুলো ভেসে জানায় নীরব ব্যথা
বাঁকা চাঁদের আলোয় হয়ে যায় চির ম্লান।
স্মৃতিগুলো এসে বলে যায় মনের কথা
প্রজাপতির মতো ডানা মেলে শুধু উড়ে যায়,
রংধনুর ছায়া বয়ে আনে আশার আলো
যে আশা নিরাশা হয়ে হারিয়ে যায় ব্যথার সাগরে।
বৃষ্টিগুলো আঁধার হয়ে অবিরাম কাঁদে
এ যেন হৃদয় ছোঁয়া অনেক আকুলতা,
খাঁচার পাখি পাখা নেড়ে কেঁদে যায় শুধু
বয়ে আনে হৃদয়জুড়ে না পাওয়ার বেদনা।
খুকু জেগে ওঠে
চোখ মেলে
হাই তোলে
খুকু ওঠে জেগে
পড়তে বসে আগে
খুব সকালে পড়তে তার খুব ভালো লাগে।
চেয়ার টেনে
খুশি মনে
পড়তে বসে যায়
শুধু পড়তে চায়
পড়াগুলো মুখস্ত করে অনেক খুশি হয়।
পড়া শেয
হেসে হেসে
স্কুলে সে যায়
সবার দেখা পায়
পড়া আর খেলাধুলা এটাই সে চায়।
সাম্প্রতিক মন্তব্য