logo
news image

ইতিহাস সন্ধানী হাফিজ আহম্মেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।
মানুষের মন বড়ই বিচিত্র। বৈশিষ্ট্যতাই এর রীতিনীতি। কারো মন চাই খেলাধুলা করতে, কেউ চাই গান-বাজনা করতে, আবার কেহ চাই কবিতা গল্প ইতিহাস লিখতে। খুলনা ইউনিভারর্সিটির ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজ আহম্মেদ একটু আলাদা। স্থানীয় ইতিহাস-ঐতিহ্য স্থাপত্য ও শিল্পকলা এবং মুক্তিযৃদ্ধের প্রান্তিক ইতিহাস উদঘাটনের প্রতি তার বিশেষ ঝোঁক। ইতিহাসের তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যে তিনি লালপুরের বিভিন্ন এলাকা বিশিষ্ট ব্যাক্তিদের  নিকট পৌছানের চেষ্টা করেছেন এবং করে যাচ্ছে।
ছাত্র অবস্থা থেকেই ছুটির দিনে তিনি ছুটে বেড়িয়েছেন ইতিহাসের সন্ধানে। তুলে ধরেছেন বাংলা ও বাঙালির অস্তিত্বের ইতিহাস, বাঙালির যুগে যুগে বঞ্চিতের ইতিহাস। লিখেছেন ১৯৭১ সালের মহাকাব্যিক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। তারই ধারাবাহিকতায় নাটোরের লালপুর উপজেলার বিলমাড়িয়া গ্রামের গণহত্যার ইতিহাস নিয়ে "বিলমাড়িয়া বাজার গণহত্যা" নামে প্রবন্ধ রচনা করেছেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের গবেষণা প্রবন্ধটিতে তুলে ধরেছেন উপজেলার বিলমাড়িয়া গ্রামের একাত্তরের ২৭ ও ২৮ জুলাইয়ের সংগঠিত গণহত্যা-নির্যাতনের ইতিহাস। দিনটিতে শতাধিক নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিলো। তবে বইটিতে স্থান পেয়েছে ৪০ জন শহীদের তালিকা। উঠে এসেছে তৎকালীন শান্তি কমিটির সদস্যসহ রাজাকার আলবদরের নাম।
স্থানীয় ইতিহাস, স্থাপত্য ও শিল্পকলা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস গবেষক হাফিজ আহমদ জানান, বইটিতে নির্যাতিত, ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী ভাষ্য থেকে জানা যাবে কারা কি ভাবে সেই ঘৃণ্যতম গণহত্যা সংগঠিত করেছিলো। জানা যাবে শহীদের নাম-পরিচয়, বীরাঙ্গনা ও নির্যাতিতদের পরিচয় এবং বধ্যভূমি সংরক্ষণের প্রয়াস ও বর্তমান অবস্থা। সর্বোপরি উঠে এসেছে মুক্তিসংগ্রামের মর্মদ্ভদ কাহিনীর কয়েকটি রক্তভেজা পাতা।
তিনি আরও জানান, নতুন প্রজন্ম জানুক, স্বাধীনতা শুধু চারটি বর্ণেরসমাহার নয়। এর পেছনে আছে কতমানুষের আত্মত্যাগ, নির্যাতন ও দীর্ঘশ্বাস। যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে পারে।
রোববার (২ আগস্ট ২০২০) নাটোরের লালপুর উপজেলার দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নে বাংলাদেশ সাংকৃতিক লীগ ও উপদেষ্টা কেন্দ্রীয় কমিটি  বাংলাদেশ মুত্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ লে. কর্ণেল (অব.) রমজান আলী সরকার,-এর হাতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও লেখক হাফিজ আহম্মেদ একটি বই তুলে দেন। এই সময় উপস্থিত ছিলেন দৈনিক উত্তরবঙ্গ বার্তার স্টাফ রিপোর্টার আব্দুর রশিদ মাস্টার, দুড়দুড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুনর রশিদ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, প্রতিরোধ সংগ্রামে লালপুর থানা, প্রসঙ্গ ময়না প্রতিরোধযুদ্ধ ৭১, বাওড়া ও নাবিরপাড়া শাহী মসজিদ, অনালোচিত মোঘল স্থাপত্য, ভেল্লাবাড়িয়া হযরত বাগুদেওয়ান (রহঃ) মাজার মসজিদ, একটি সংকটাপন্ন প্রত্ন নিদর্শন, প্রবাজপুর শাহী মসজিদ, বাংলা স্থাপত্যের অনালোচিত এক অনন্য প্রত্ন নিদর্শন নামে কয়েকটি প্রবন্ধ রচনা করেন তিনি।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top