logo
news image

শ্রীলঙ্কাযাত্রা ভালো শুরুর মন্ত্র জপে

ক্রীড়া প্রতিবেদক : ‘আমরা যদি গিয়ে একটা ভালো শুরু দিই, দেখবেন সব কিছু ঘুরে যাবে।’

ঘুরে যাওয়া বলতে এক সিরিজ পর দলে ফেরা তাসকিন আহমেদ এটিই বোঝাতে চাইলেন যে ব্যর্থতার ঘূর্ণাবর্ত থেকে বেরিয়ে আসবে বাংলাদেশ। ৬ মার্চ থেকে কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শুরু হতে যাওয়া ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট নিদাহাস ট্রফিকে ঘিরে পুরো দেশের চাওয়াও সেটিই। দেশের মাটিতে বিশেষ করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভরাডুবির পর এবার অন্যের উঠান থেকেই ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে গতকাল কলম্বো উড়ে গেল বাংলাদেশ দল। দলের সঙ্গেই সেখানে যাবেন বলে আগের রাতে পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) ম্যাচ খেলেই তড়িঘড়ি দুবাই থেকে ঢাকার ফ্লাইট ধরেছিলেন অধিনায়ক মাহমুদ উল্লাহ। সকালেই ফিরলেন তবে কলম্বোর ফ্লাইট দুপুর একটায় বলে বিমানবন্দর থেকে বেরোতেও পারলেন না। সাকিব আল হাসানের চোট না সারায় আরেকটি সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পাওয়া মাহমুদ উল্লাহও তাঁর দলের তরুণ ফাস্ট বোলার তাসকিনের মতোই ভালো শুরুকেই গুরুত্ব দিলেন সবচেয়ে বেশি, ‘প্রথম ম্যাচটি যদি জিততে পারি, তাহলে খুব ভালো হয়। আমাদের জন্য শুরুটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সব সময়ই বিশ্বাস করি শুরুটা ভালো হলে আমরা ছন্দটা ধরতে পারব। বাকি সব ম্যাচে আপনি কেমন করবেন, আমার মনে হয় ওই এক ম্যাচের জয়ই আপনার সেই আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর পক্ষে যথেষ্ট।’৮ মার্চ বাংলাদেশের সেই ম্যাচ ভারতের বিপক্ষে। বিরাট কোহলিসহ শীর্ষ তারকাদের আরো বেশ কয়েকজনকে ছাড়াই যে দলও কম প্রবল প্রতিপক্ষ নয়। সেই ম্যাচ জিতে শুরু করতে পারলে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ শিরোপায়ও চোখ রাখবে। মাহমুদ উল্লাহ সে লক্ষ্যের কথা বললেনও, ‘লক্ষ্য অবশ্যই টুর্নামেন্ট জেতা, এটা আমাদের প্রথম লক্ষ্য।’ সেই সঙ্গে এও বলে রাখতে ভুললেন না, ‘পাশাপাশি আমাদের আরো অনেক কিছু প্রমাণ করার বাকি আছে। শেষ সংবাদ সম্মেলনেও আমি এই কথাটা বলেছিলাম যে এই সংস্করণে আমাদের শক্তিমত্তা নিয়ে হয়তো অনেকের মনেই একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন আছে।’ সবশেষ টি-টোয়েন্টিতে সেই প্রশ্নচিহ্ন উবে না গিয়ে বরং আরো গভীর হয়েছে। এ জন্যই যে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের ফুল ফোটেনি, তাই ফুলে ফুলে দলীয় সাফল্যের মালাও গাঁথা হয়নি। এবার সেই মালাটা গাঁথতে তাই ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের ঝলক দেখার আকুতি অধিনায়কের, ‘নিজেদের প্রমাণের জন্য এই টুর্নামেন্টটি খুব ভালো একটি প্ল্যাটফর্ম। সবার ব্যক্তিগত সেরাটা যদি আমরা আদায় করে নিতে পারি, তাহলে আমাদের পক্ষে খুব ভালো কিছু অর্জন করা সম্ভব।’

আর শ্রীলঙ্কা যেহেতু উপমহাদেশের বাইরের কোনো জায়গাও নয়, তাই ঘুরে দাঁড়ানোর পক্ষে বিরুদ্ধ কন্ডিশনের চ্যালেঞ্জও খুব বেশি দেখছেন না মাহমুদ উল্লাহ, ‘যেকোনো প্রতিপক্ষই কঠিন। আপনি যার বিপক্ষেই খেলুন না কেন, আপনাকে ভালো খেলতে হবে। এটা বলতে পারেন যে দেশের মাটিতে ভালো খেলছিলাম বলে আমাদের কাছে প্রত্যাশাটা অনেক বেড়ে গেছে। সবশেষ সিরিজে যদিও আমরা আশানুরূপ পারফরম করতে পারিনি। তবে সেখানেও আমরা উপমহাদেশের পরিবেশই পাচ্ছি, তা ছাড়া শ্রীলঙ্কায় আমরা অনেকবার খেলেছিও। আশা করছি, আমরা সেখানে ভালো কিছুই করতে পারব।’শ্রীলঙ্কা থেকে ভালো কিছু নিয়ে ফেরার ঘটনাও খুব বেশি দিন আগের নয়। গত বছর ঠিক এই সময়েই শ্রীলঙ্কায় গিয়ে টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজ ড্র করে ফিরেছিল বাংলাদেশ। তখন কেবলই পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকা শ্রীলঙ্কা আর এখনকার শ্রীলঙ্কায় পার্থক্য অনেক। বাংলাদেশ থেকে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে টুর্নামেন্ট থেকে শুরু করে টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে যাওয়ার আত্মবিশ্বাসও এবার তাঁদের সঙ্গী। সেই সঙ্গে পরাক্রমশালী ভারতও আছে টুর্নামেন্টে। এর মধ্যে আবার সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিও বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ বাড়িয়ে দিচ্ছে আরো। মাহমুদ উল্লাহ অবশ্য সাকিবের ক্ষতি মেনে নিয়েও সেটিকে সুযোগ হিসেবে দেখছেন, ‘সাকিবকে মিস করা অবশ্যই দলের জন্য ক্ষতিকর। ওর মতো চ্যাম্পিয়ন এবং অপরিহার্য ক্রিকেটার না থাকায় কাজ আরো কঠিন হবে নিঃসন্দেহে। তার পরও এটি আমাদের সবার জন্য সুযোগ ভালো কিছু করে দেখানোর।’এক সিরিজ পরই দলে ফেরা তাসকিনই যেমন আরো বেশি করে উজাড় করে দিতে চাইছেন নিজেকে, ‘বেশি দিন দলের বাইরে থাকতে হয়নি। এক সিরিজ পরই ফিরেছি। এবার ১২০ ভাগ দেব। এবং ম্যাচ জেতানোর চেষ্টা করব।’ ভালো শুরু দিয়ে সব কিছু ঘুরিয়ে দিতে হলে অন্যদের মাঝেও সেই চেষ্টাটা দেখা যেতে হবে!

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top