logo
news image

অধ্যক্ষের নির্দেশে ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের প্রধান ফটকে তালা অধ্যক্ষ ও ৪ শিক্ষকের পদত্যাগের দাবীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
অধ্যক্ষের নির্দেশে ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের প্রধান ফটকে তালা মারার ঘটনায় সোমবার বিক্ষোভ ফেটে পড়ে কলেজ শিক্ষার্থীরা। এই খবর বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে কলেজের আশপাশসহ বিভিন্ন এলাকা হতে সাবেক শিক্ষার্থীরা এসে বিক্ষোভে অংশ নেন। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটকসহ সকল গেটের তালা ভেঙ্গে কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা এসময় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত করেন।
 রবিবার দিবাগত রাতে  ঈশ্বরদী সরকারি কলেজে জমি সংক্রান্ত মামলায় কলেজের প্রধান ফটকে তালা দেওয়ার এ ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, সোমবার সকাল ১০টার দিকে তারা ঈশ্বরদী সরকারি কলেজে এসে প্রধান ফটক  তালাবদ্ধ দ্যাখেন। বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও ক্লাশ না করেই কলেজ থেকে ফিরে যান। কলেজের প্রধান ফটকসহ বিভিন্ন বিভাগীয় ফটকে তালা দেওয়ার প্রকৃত খবর জানাজানি হলে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন হাজার হাজার শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আব্দুর রহিম, কলেজের স্টাফ কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ও গণিতের বিভাগীয় প্রধান মুরারী মোহন দাস, ইংরেজি বিভাগের প্রধান রবিউল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রবিউল ইসলাম ও দর্শন বিভাগের প্রধান নজরুল ইসলামের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ ও বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা প্রধান গেটের তালা ভেঙে কলেজে প্রবেশ করেন। কলেজের সামনে উত্তাল অবস্থার সৃষ্টি হলে ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
শিক্ষার্থী ও কলেজ ছাত্রনেতাদের অভিযোগ, কলেজের সামনের ১ দশমিক ২৭ একর জমির মালিকানা নিয়ে আদালতে বিচারাধীন মামলায় কলেজের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে কলেজের প্রধান ফটক তালা দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন অধ্য ও ৪ শিক্ষক যা ঈশ্বরদী সরকারি কলেজে আগে কখনো ঘটেনি।
ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের সাবেক ছাত্র রাকিবুল হাসান রনি জানান, আমরা জমি অধিগ্রহণের পক্ষে। তবে নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য অধ্যক্ষ অসৎ উদ্দেশ্যে ৬০ বছরের পুরনো এই কলেজে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের চলাচলের প্রধান ফটক তালা দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে রনি জানান, অধ্যক্ষসহ ৪ শিককে দ্রুত অপসারণ দাবিতে গণস্বাক্ষরযুক্ত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রীর নিকট প্রদান করা হবে।
ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের স্টাফ কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ও গণিতের বিভাগীয় প্রধান মুরারী মোহন দাস জানান, অধ্যক্ষের নির্দেশে কলেজের প্রধান ফটকে আমি তালা দিয়েছি। এখন শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। এই ঘটনায় সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবেলা করে কলেজের পরিবেশ শান্ত রাখতে যা যা করা প্রয়োজন তা করতে অধ্যক্ষ নির্দেশ দিয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন ।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ বাহাউদ্দিন ফারকী বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে বিষয়টি জানানো হয়নি। কলেজ গেটে কে বা কারা তালা দিয়েছে তা আমরা জানি না।
মামলার বাদী মহিউদ্দিন ফোনে জানান, আমরা সকল ক্ষেত্রেই আদালতের রায় পেয়েছি। এরআগে হাইকোর্ট ওই জমি মন্ত্রণালয় হতে অধিগ্রহনের জন্য কলেজের অধ্যক্ষকে কার্যক্রম করার আদেশ দেন। কিন্তু অধ্যক্ষ অধিগ্রহনের কার্যক্রম না করে আপীল করেন। এজন্য উচ্চ আদালত ১৭ই ফেবব্রুয়ারী সোমবার অধ্যক্ষকে আদালতে স্বশরীরে হাজির হওয়ার জন্য তলব করেছে।
ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের প্রফেসর মোহাম্মদ আব্দুর রহিম জানান, আদালতের নির্দেশনায় কলেজের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। কলেজের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য পেছনে একটি ফটক তৈরি করে দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান। হাইকোর্টে তলবের সত্যতা স্বীকার করে তিনি আরো বলেন, বিচারাধীন মামলা প্রসংগে কোনকিছু বলতে চাই না। মন্ত্রণালযের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করছি। তিনি আরো বলেন, জমি-জমা নিয়ে মামলা-মোকদ্দমার বিষয়ে আমরা শিক্ষক মানুষ কিছুই বুঝি না। তাই আমি ও উপাধ্যক্ষ বদলীর জন্য ইতোমধ্যেই উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে আাবেদন জানিয়েছি।   

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top