logo
news image

দুদক রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের বালিশ কেলেঙ্কারীর তদন্ত করবে

ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের গ্রীণসিটির কর্মকর্তাদের জন্য আসবাব ও অন্যান্য গৃহস্থালি সামগ্রী কেনার ক্ষেত্রে ৩৬.৪ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করবে দুর্নীতি দমন কমিশন । দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দুদক এই দুর্নীতির বিষয় নিয়ে তদন্ত শুরুর সিদ্ধান্ত গ্রহন করে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। উপ-পরিচালক নাসির উদ্দিনকে প্রধান এবং সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমান ও উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজকে   কমিটির সদস্য করা হয়েছে। দুদুকের নিয়ম অনুযায়ী তদন্ত শুরুর ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে।
রূপপুর প্রকল্পের বালিশ কেলেঙ্কারী নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়, প্রকল্পের রাশিয়াান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৯৬৬টি ফ্লাটের সরঞ্জামাদি সরবরাহ করতে বিভিন্ন আইটেমের ক্রয়মূল্য বাজার মূল্যের চেয়ে অস্বাভাবিকভাবে ধার্য্য করা হয়। এতে প্রতিটি বালিশের ৫,৯৫৭ টাকায় ক্রয় মূল্য এবং বালিশ ফ্লাটে উঠানোর জন্য ৭৬০ টাকা ধরা হয়। এছাড়াও বৈদ্যুতিক চুলা ৭,৭৪৭ টাকায় ক্রয় করে নীচতলা হতে উপরে তোলার জন্য ৬,৬৫০ টাকা ব্যয় হয়েছিল। ঘটনা জানাজানি হলে আবাসন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
উল্লেখ্য, বিগত ২১শে মে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছিলেন, গ্রীণসিটি প্রকল্পের দুর্নীতির বিষয়টি কমিশন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। আবাসন ও গণপূর্ত মন্ত্রকের দুটি তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে  প্রয়োজনীয় পদপে গ্রহন করা হবে ।
ইতোমধ্যেই তদন্ত কমিটি অনিয়মের অভিযোগে গ্রিণসিটি আবাসন প্রকল্পের গণপূর্তের পাবনার প্রকৌশলী মাসুদুল আলমসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেন। কেলেঙ্কারী প্রকাশের পরপরই ২২শে মে প্রকৌশলী মাসুদুলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সর্বশেষ তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ১৬ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ও ১৪ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে।
সাময়িকভাবে বরখাস্ত কর্মকর্তারা হলেন, রাজশাহী সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এ কে এম জিল্লুর রহমান, পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুল আলম, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী তাহাজ্জুদ হোসেন, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোস্তফা কামাল, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আহম্মেদ সাজ্জাদ খান, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ তারেক, সহকারী প্রকৌশলী  রুবেল হোসাইন, আমিনুল ইসলাম, রওশন আলী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফজলে হক, সুমন কুমার নন্দী, রফিকুজ্জামান, জাহিদুল কবীর, শাহীন উদ্দিন, আবু সাঈদ ও  শফিকুল ইসলাম।
এ ছাড়াও গণপূর্তের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী গণপূর্ত জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শফিকুর রহমানসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর হাইকোর্ট বেঞ্চে দাখিল করা হয়েছে। দুর্নীতির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানাতে চেয়ে ইতোপূর্বে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। আগামী ২০ অক্টোবর পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের করা এক রিট আবেদনে হাইকোর্ট গত ২১ জুলাই বিষয়টি তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেন।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top