logo
news image

লালপুরে এসটিসি ব্যাংকে তদন্ত দল

নিজস্ব প্রতিবেদক।  ।  
সমবায় অধিদপ্তরের উপ-আইনের ব্যতয় ঘটিয়ে ও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়াই স্মল ট্রেডার্স কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেড (এসটিসি) নাটোরের লালপুর শাখার কার্যক্রম পরিচালনা করার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে নাটোরের লালপুর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আদম আলী ও নাটোর জেলা সমবায় পরিদর্শক ইবনে জামান মোঃ ফয়জুল কবীর ব্যাংক সংক্রান্ত কাগজপত্র বৈধ কিনা তদন্তে ব্যাংকে আসেন। তদন্তকালে বৈধ কাগজপত্রাদি দাখিল করতে ব্যর্থ হওয়ায় কার্যক্রম  বন্ধ রাখার পরামর্শ দেন। তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আগামী রোববারের মধ্যে বৈধ কাগজপত্রাদি দাখিল করবেন মর্মে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
স্থানীয় ও ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, নাটোরের লালপুর উপজেলার লালপুর বাজারের শাহ মখদুম মার্কেটের ২য় তলায় গত ১ অক্টোবর (মঙ্গলবার) বিকালে ব্যাংকটির নতুন শাখার উদ্বোধন করেন এসটিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মির্জা আতিকুর রহমান। শাখা অফিস খুলে ইসলামি শরিয়া ভিত্তিক পরিচালিত করার কথা বলে সঞ্চয়, ডিপিএস, চলতি হিসাবসহ সব ধরণের ব্যাংকিং কার্যক্রম করা হচ্ছে। তবে নাম ব্যাংক আর অনুমোদন সমবায় অধিদপ্তর হওয়ার খবরে ব্যাংক শাখাটি চালু হওয়ার পর থেকেই স্থানীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
স্থানীয়দের দাবি, লালপুরে ব্যাংকিং কার্যক্রম অবশ্যই লালপুরের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। তবে ডেসটিনি, ইজেন ইন্টার ন্যাশনাল, ইউনিরুট ফিন্যান্স এ্যান্ড কমার্স, জনতা কো-অপারেটিভ মালটিপারপাস, রিড্যাক, বিডি অ্যাড ক্লিক, বাইডস, চুমকি সহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে রাতারাতি গায়েব হয়েছে। আর্থিক লেনদেন করে গ্রাহকরা ও এলাকার সাধারণ মানুষ যেনো প্রতারিত না হয়। ফলে এই প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের খোঁজ-খবর নেয়া প্রয়োজন বলে তারা মনে করেন।
লালপুর শাখার ব্যবস্থাপক খায়রুল বাশার জানান, কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে বৈধ কাগজপত্রের সঠিকতা নিশ্চিত হওয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করেছি। সকল প্রকার বৈধ অনুমোদন আছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। আগামী রোববারের মধ্যে সকল বৈধ কাগজপত্র লালপুর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তার নিকট জমা দেবো বলে জানিয়েছি।
উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আদম আলী জানান, স্মল ট্রেডার্স কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেড (এসটিসি) এর কার্যক্রম সমবায় আইন মোতাবেক হচ্ছে না মর্মে জেলা সমবায় অফিসার উক্ত ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশনা দিয়ে একটি পত্র পাঠিয়েছেন। উক্ত পত্রের প্রেক্ষিতে যাচাই বাছাই করার জন্য ব্যাংকের অফিসে এসেছিলাম। সমস্ত রেকর্পপত্র দেখলাম, অত্র প্রতিষ্ঠানের কর্ম এলাকা সমগ্র নারায়নগঞ্জ জেলা ব্যাপী উল্লেখ রয়েছে। সংশোধিত উপ-আইন ব্যতিরেখে নারায়নগঞ্জ জেলার বাহিরে কার্যক্রম পরিচালনা সমবায় সমিতি বিধিমালা ২০০৪ এর ১২(২) এর পরিপন্থি। এছাড়া সমবায় আইন ২০০১, সংশোধিত ২০০২ ও ২০১৩ এর ২৩ (১) ধারা অনুযায়ী কোন সমবায় সমিতি উহার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শাখা অফিস খুলিতে পারিবে না এবং সমবায় সমিতি আইনের ২৬ ধারা অনুযায়ী কোন সমবায় সমিতি উহার সদস্য ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে আমানত গ্রহন বা ঋণ প্রদান করিতে পারিবে না। সমগ্র দেশব্যাপী শাখা খোলার কোন অনুমতি বা রেজিষ্ট্রেশন সংক্রান্ত দলিল, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন সংক্রান্ত কোন দলিল ও বৈধ কাগজপত্রাদি অফিস কর্তৃপক্ষ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা আগামী রোববারের মধ্যে সকল বৈধ কাগজপত্রাদি জমা দিবেন মর্মে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বৈধ কাগজপত্র জমা না দেওয়া পর্যন্ত সকল প্রকার আর্থিক লেনদেন থেকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে বিরত থাকার নির্দেশনা দিয়েছি। তবে বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারলে কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে বাধা থাকবে না।
এসটিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মির্জা আতিকুর রহমান মুঠোফোনে জানান, ব্যাংক পরিচালনা করতে আইনী কোন জটিলতা নেই বলেই সমগ্র দেশব্যাপী ব্যাংক শাখা খোলা হয়েছে। যদি বৈধ কাগজ না থাকে তবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কার্যক্রম পরিচালনা করছি কিভাবে।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top