logo
news image

একজন শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ

জুলফিকার আলি মাণিক।  ।  
দু’হাজার এক থেকে তিন সাল পর্যন্ত একটি বেসরকারী টেলিভিশনের প্রতিবেদক ছিলাম। অনেক কাজের মধ্যে নিয়মিত বড় দায়িত্ব ছিল তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা, তাঁর দল আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় সংসদের ঘটনা অনুসরণ করা। মালিক পর্যায়ের একজন পরিচালক সংবাদ বিভাগের দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি অসাংবাদিক। দেশে যখন আর কোন টিভি চ্যানেল ছিল না তখন সরকার নিয়ন্ত্রিত বাংলাদেশ টেলিভিশনে কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠান করে তিনি পরিচিতি পান। শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের খবরগুলো প্রচার করতেন বিরক্তির সঙ্গে, যেন প্রচার না করতে পারলে খুশি। পেশাদার সাংবাদিকের ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের স্থান নেই খবরে। গুরুত্ব অনুযায়ী সংবাদ হবে। কিন্তু চ্যানেলটির সেই ক্ষমতাবান ব্যক্তি নির্বিচারে শেখ হাসিনার গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যগুলো নিয়মিত আমার প্রতিবেদন থেকে ফেলে দিতেন। কারণ বলতেন না। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারকে খুশি করতে যে শেখ হাসিনার খবরগুলো অহেতুক ছেঁটে ছোট ও নপুংশক করতেন তা বোঝার জ্ঞান আমার ছিল। তিনি ব্যক্তিগতভাবেও বিএনপি এবং স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলামী ও তাদের কিছু নেতার প্রতি যে দুর্বল সেটাও টের পেতাম। তার দেড় দশক পর উল্টো চিত্র দেখলাম। চ্যানেলটির সেই অসাংবাদিক কর্তা সাংবাদিকতায় স্বাধীনতা পদক নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে! ঘনিষ্ঠ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনার বলয়ে!
এ প্রসঙ্গ অবতারণার কারণ বলার আগে আরেকটি ঘটনা বলতে চাই। টিভি চ্যানেলটিতে পেশাগত দায়িত্বের কারণে তখন প্রায় প্রতিদিন রাজধানীর ধানমণ্ডিতে শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনে যেতে হতো। সে সময় শেখ হাসিনার এক জন্মদিনে সকাল থেকে বিচিত্র মানুষের ভিড়ে ঠাসা ছিল বাসা। দল ও অঙ্গ সংগঠনগুলোর নেতারা ছাড়াও বিভিন্ন পেশার ভক্ত, শুভাকাক্সক্ষীরা ফুল নিয়ে তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে যান। এক সময় বাসার নিচতলায় বসার ঘরে ভিড় সমেত শেখ হাসিনা ফিরলে মনে করিয়ে দেই আগের বছরের জন্মদিনে কথা দিয়েছিলেন পরের বছরের জন্মদিনে সাক্ষাৎকার দেবেন। কথা রেখেছিলেন তিনি। বললেন ‘কী জানতে চাও, বলো।’ জন্মদিনে রাজনীতির বাইরে কথা চাই, এমন চিন্তা থেকে প্রথমেই এরকম একটি প্রশ্ন করেছিলাম- একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে, আওয়ামী লীগের প্রধান হিসেবে স্বাভাবিকভাবে সবসময় আপনাকে দলের নেতা-কর্মীরা ঘিরে থাকে। কিন্তু জন্মদিন রাজনীতির বাইরে অন্যরকম ব্যক্তিগত অনুভূতির একটা দিন। এদিন যে আপনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে এত মানুষ আসে, এত মানুষ আপনার চারপাশে ভিড় করে থাকে, আপনাকে ঘিরে থাকে, সেটা আপনি কিভাবে অনুভব করেন? সাধারণত প্রশ্ন মাটিতে পড়ার আগেই জবাব দিতে অভ্যস্ত শেখ হাসিনা কয়েক মুহূর্ত চুপ থাকলেন। তারপর যা বললেন তাতে সবাইকে হতভম্ভ করে দিলেন। কান্না জড়ানো বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে শেখ হাসিনার জবাব ছিল, ‘তুমি আমার চারপাশে এত মানুষ দেখ? আমি তো আসলে একা।’
‘জন্মদিনে নেত্রীকে কাঁদিয়ে দিয়েছি’ বলে সেদিনের সেই ভিড়ের অনেকে আমাকে ভর্ৎসনা করেছিলেন। কিন্তু তাদের কেউ কী কখনও বুঝবার চেষ্টা করেছেন, তাদের নেত্রী কেন লক্ষ কোটি ভক্ত-অনুসারী, দেশজুড়ে হাজার হাজার নেতা-কর্মী এবং ঢাকায় নিজের দলের মানুষ পরিবেষ্টিত থাকার পরও নিঃসঙ্গ বোধ করেন?
শেখ হাসিনার কাছ থেকে সেই ব্যাখ্যা জানার সুযোগ ঐ জনাকীর্ণ আসরে আমার হয়নি। হয়ত তিনি অনুভব করেন, তাঁর চারপাশে সদা ভিড় করা মানুষগুলোর সবাই আসলে তাঁর নিজের মানুষ নয়। তাঁর রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা, আদর্শ ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের মানুষও সবাই নয়। একেবারে বিপরীত চিন্তা ও আদর্শের মানুষও আছে, যারা তাঁর কাছে যায়, ঘিরে থাকে, সুন্দর সব কথা বলে নিজেদের কোন না কোন ব্যক্তিগত স্বার্থে। স্বার্থ ফুরালেই তাদের হাসিনাকে ঘিরে থাকা ফুরায়। হয়ত নানা বাস্তব সীমাবদ্ধতার জন্য এমন বাস্তবতা তাঁকে সয়ে যেতে হয়। তাই হয়ত বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক খবরে এ্যালার্জি থাকা টিভি চ্যানেলটির অসাংবাদিক হর্তাকর্তার হাতেও সাংবাদিকতায় স্বাধীনতা পদক তুলে দিতে হয় প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে।
বাইরের এমন মধুপ্রিয় বহু অচেনা মানুষের অনুপ্রবেশ নিজের চারপাশে ভিড় বাড়ালেও যেমন নিঃসঙ্গতা কাটে না, তেমনি ভেতরের চেনা মানুষের ক্রমাগত অচেনা, অনাকাক্সিক্ষত আচরণও একাকিত্বে ঠেলে দেয়। যেমনÑ শিক্ষিত এবং বাহ্যত মার্জিত তরুণদ্বয় শোভন ও রাব্বানীর হাতে ছাত্রলীগ তুলে দিয়েছিলেন হাসিনা। বহু বছরের দুষ্ট সিন্ডিকেটের বলয় থেকে ছাত্রলীগকে বের করে আনতে আওয়ামী লীগ প্রধান হাসিনা ঐ দুই তরুণকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করেন। তাদের মাঝে হয়ত তিনি একদা মহানায়ক থেকে বিগত এক দশকে খলনায়ক বনে যাওয়া ছাত্রলীগকে উদ্ধারের ভরসা খুঁজেছিলেন, আশার আলো দেখেছিলেন। কিন্তু তারা শেখ হাসিনার স্বপ্নভঙ্গের কারণ হলেন মাত্র ১৩ মাসে, কদর্য সব কর্মকা-ের জন্য।
ছাত্রলীগ পরিশোধনের জল ত্বরিত গড়াল যুবলীগে। শুধু যুবলীগকে নয়, দেশের নিখোঁজ রাজনীতিকে আচমকা খুঁজে পাওয়া গেল ক্যাসিনো নামক ঝলমলে বহু জুয়ার আখড়ায়। সাধারণের অগচোরে রাজধানীতে পশ্চিমা বিশ্বের আদলে গড়ে উঠেছে বহু হাজার-লক্ষ কোটি টাকার অবৈধ ক্যাসিনো বাণিজ্য। গণমাধ্যমের খবরÑ বছরের পর বছর ধরে অর্ধশতাধিক ক্যাসিনো চলছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ রাজনীতির ছত্রছায়ায়। এই দায়ের ভাগ কমাতে এখন সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন ক্যাসিনো নাকি বিএনপি আমলে হয়েছিল। যদিও ২০০৭-৮ সালে সাদা পোশাকে সামরিক শাসনের মেয়াদে নজিরবিহীন, কিন্তু ব্যর্থ দুর্নীতিবিরোধী অভিযানেও ক্যাসিনোর সন্ধান মেলার খবর ছিল না। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান গত ১৯ সেপ্টেম্বর শুরু হয়, তাও পুলিশকে দিয়ে নয়, সামরিক ও পুলিশের সমন্বিত বাহিনী র‌্যাবকে দিয়ে। কিন্তু বিগত এক দশক ধরে দেশ শাসন করা আওয়ামী লীগ সরকার যে বহু বছর আগেই জানত এসব ব্যাপারে তার প্রমাণ ২০১৭ সালের দৈনিক বণিক বার্তা। সে বছরের মাঝামাঝি পত্রিকাটির এক প্রতিবেদন নিশ্চিত করেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সদর দফতরকে নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু আদেশ যে পালন হয়নি তা প্রমাণিত। কেন হয়নি তা অজানা। এজন্য দায়ী কে? অবশেষে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ প্রয়োজন হলো। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত যে, তিনি নির্দেশ না দিলে সরকার ও দলের কেউ কোন কাজ করে না।
বৃহত্তর আওয়ামী লীগ রাজনীতির অভিভাবক শেখ হাসিনার এমন পদক্ষেপ সাধারণ মানুষের মধ্যে হঠাৎ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত অভিব্যক্তি থেকে বোঝা যায় অনেকে উজ্জীবিত, আশান্বিতও। কিন্তু শেখ হাসিনার চারপাশের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক বলয়ে ভিড় করা মানুষের অনেকের মুখ যেন মলিন। তাদের কেউ কেউ ক্যাসিনো বা জুয়াবিরোধী এই অভিযানের বিরুদ্ধে ক্ষ্যাপাটে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানকে ‘বিরাজনীতিকীকরণ,’ দলকে ‘পঙ্গু’ ও ‘নিষ্ক্রিয়’ করার ষড়যন্ত্র বলেছেন। অবৈধ ক্যাসিনো বন্ধের অর্থ যদি রাজনীতি নির্মূল ও আওয়ামী লীগকে অকার্যকর করা হয় তাহলে বীভৎস ও ভয়ঙ্কর হলেও এটাই সত্য যে, দেশের এবং আওয়ামী লীগের বৃহত্তর রাজনীতি বিশাল জুয়ার বাণিজ্যে তলিয়ে গেছে, যেখান থেকে নিজের দল ও রাজনীতিকে শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে উদ্ধার করতে চান। আর তাঁর চারপাশে ভিড় করে থাকা বহু তথাকথিত দায়িত্বশীল মানুষের কাছে যেন শেখ হাসিনা নিছক একটি সাইনবোর্ড, যাকে সামনে রেখে আড়ালে তারা বাংলাদেশকে সুস্বাদু বার্গারের মতো যতটা বড় কামড় বসিয়ে খেয়ে নেবার চেষ্টায় মত্ত। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর দাপুটে মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়ে দিলেন, তৃণমূল পর্যন্ত অভিযান চলবে। তার এ কথা নিশ্চিত করে, রাজনীতি ও সমাজের এই চরম ব্যাধি দেশজুড়ে তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে গেছে। এখন দেখার বিষয় তৃণমূলের দিকে অভিযান ঠেলে দিয়ে মাথা বা ওপরের দিকের প্রভাবশালী ও সুবিধাভোগীরা বেঁচে যাওয়ার চেষ্টায় কতটা সফল হন।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে ক্ষুব্ধ যুবলীগ প্রধান ওমর ফারুক চৌধুরী নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে যৌক্তিক প্রশ্ন ও দাবি তুলেছেন। তার ভাষ্য, ‘আপনি বলছেন ৬০টি ক্যাসিনো আছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আপনারা ৬০ জনে কী এতদিন আঙ্গুল চুষছিলেন? তাহলে যেই ৬০ জায়গায় ক্যাসিনো সেই ৬০ জায়গার থানাকে এ্যারেস্ট করা হোক, সেই ৬০ থানার যে র‌্যাব ছিল তাদের এ্যারেস্ট করা হোক।’ এ কথায় স্পষ্ট ইঙ্গিত আছে যে, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বা আরও ভয়ঙ্কর বড় কিছু বেরিয়ে আসার সুযোগ আছে। শেষ পর্যন্ত সেসব ক্যাসিনো কিং, সম্রাট ও জমিদাররা বেরোবে কি-না তা একান্তই নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা কতদূর পর্যন্ত হাত দিতে পারবেন তার ওপর। একদা বিএনপি রাজনীতির লোক জি.কে. শামীম বহু বছর ধরেই আওয়ামী লীগ সরকার ও দলের ক্ষমতাসীন বলয়ের প্রভাবশালী ব্যক্তি। সাম্প্রতিক খবরগুলো থেকে ধারণা হয়, বিগত এক দশকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্বিঘেœ বছরের পর বছর চলচ্চিত্রের মাফিয়া ডন বা আন্ডার ওয়ার্ল্ডের গডফাদারদের মতো জীবনকে উদযাপন করেছেন। চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে এখন তাকে ভিলেন বানানো হলেও কাদের বদান্যতায় তিনি প্রধানমন্ত্রী হাসিনার পাশে হাঁটতে পারেন, সরকারের বহু হাজার কোটি টাকার প্রকল্প পান, এমনকি যেই র‌্যাব তাকে ধরেছে তাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজ তাকে দেয়া হয়, সেসব খুঁজলে নিশ্চয়ই ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হওয়ার উপক্রম হবে।
ক্যাসিনোভিত্তিক শক্তিশালী রাজনৈতিক বলয়ের ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কম-বেশি বহুমুখী সুবিধা ভোগ করেছেন কারা? এমন ব্যক্তিদের সন্ধান রাজনীতিতে, সরকারের সব ধরনের প্রশাসনে, বাহিনীতে, গোয়েন্দা বিভাগগুলোতে, বেসরকারী খাতে, ব্যবসায়ী মহলে, এমনকি গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতায়ও করা হলে কতজনের মুখোশ খসে পড়বে তা কল্পনা করার সামর্থ্যও নেই হয়ত সাধারণের। অনেক বড় বড় রাজনৈতিক কর্মসূচী, সমাবেশ সফল করতে এই ক্যাসিনো বলয়ের অর্থ ব্যয় হওয়ার খবর বেরোলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। ক্যাসিনোর বিপুল টাকার স্রোত বিদেশে পাচার হওয়াটাই স্বাভাবিক। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা নিশ্চয়ই এমন রাজনৈতিক-সামাজিক বাস্তবতা কখনই প্রত্যাশা করেননি। কিন্তু তার চারপাশে ভিড় করা মানুষই তাঁকে সেই অনাকাক্সিক্ষত বাস্তবতার সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। তাই হয়ত তিনি বহু মানুষের ভিড়ে থেকেও একাকী বোধ করেন। আঠারো বছর আগের অজানা উত্তরটি যেন এত বছর পর স্পষ্ট হয়ে উঠেছেÑ রাজনীতিতে অসীম সাহসী, অদম্য লড়াকু শেখ হাসিনা কেন নিজের বলয়ের ভিড়ে থেকেও নিঃসঙ্গ। তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবও নিজের শাসনামলে নিজের দল আওয়ামী লীগকে, সমাজকে দুর্নীতিমুক্ত করতে চেয়েছিলেন। এক বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, ‘কার টাকায় অফিসার সাব (সাহেব), কার টাকায় রাজনীতিবিদ সাব? সমাজ যেন ঘুণে ধরে গেছে। এই সমাজকে আমি চরম আঘাত করতে চাই, যে আঘাত করেছিলাম পাকিস্তানীদের। সেই আঘাত করতে চাই এই ঘুণে ধরা সমাজ ব্যবস্থাকে।’ কিন্তু তিনি সেই লড়াইয়ে জিততে পারেননি বরং সন্দেহ নেই, সেই প্রচেষ্টা বঙ্গবন্ধুর জন্য জানা-অজানা অনেক শত্রু তৈরি করেছিল। বন্ধু সেজে তাঁরই চারপাশে হয়ত ভিড় করেছিল খন্দকার মোশতাকের মতো বহু খুনী। তারা ব্যর্থ করেছিল বঙ্গবন্ধুকে, তার প্রাণটাও কেড়ে নিয়েছিল শেষতক। রাজনৈতিক প্রভাব এবং আশীর্বাদপুষ্ট দুর্নীতি ও অপরাধের বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে নিজের চারপাশের মানুষের ভিড়েও বন্ধুহীন শেখ হাসিনা শেষ পর্যন্ত জিতবেন কি-না এ নিয়ে কৌতূহল দেশজুড়ে। প্রধানমন্ত্রী হাসিনার জয় হলে জিতবে নির্বাসনে যাওয়া কাক্সিক্ষত কল্যাণমুখী রাজনীতি ও প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশ। তা না হলে আকণ্ঠ কদর্য বাণিজ্যে ডুবে যাওয়া রাজনীতি ভেঙ্গে পড়া রানা প্লাজার মতো গোটা বাংলাদেশকে বাহ্যত সুন্দর ও পরিসংখ্যানগতভাবে আকর্ষণীয়, কিন্তু অসহায় মাতৃভূমিতে পরিণত করবে। - সূত্র: জনকণ্ঠ
* জুলফিকার আলি মাণিক: সাংবাদিক

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top