logo
news image

শেখ হাসিনার উত্তরবঙ্গে ট্রেন সফরের স্মৃতিচারণ

এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ।  ।  
আজকে সকালে ঘুম থেকেই ওঠেই মনে হলো আজকের এই দিনটির কথা। ১৯৯৪ সালের এই দিন ২৩ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধুর কন্যা তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী,আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উত্তরবঙ্গ ট্রেন সফর করার কথা ছিলো। সেই মোতাবেক আমরা লালপুর-বাগাতিপাড়ার সর্বস্তরের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আব্দুলপুরে নেত্রীর ট্রেন সফর কে সফল করার লক্ষ্যে বড় একটি জনসভা করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম।
আব্দুলপুরে সে সময় থেকেই বিএনপির কোনো অস্তিত্ব ছিলোনা, কোনো লোকজন ছিলো না। এর কারন হচ্ছে আরো কিছু পূর্বে আব্দুলপুর কলেজে ছাত্রদলের ক্যাডারদের দ্বারা ছাত্রনেতা আমাদের বকুলে হাত কর্তনের পরে বিএনপির সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠে চংধুপইল ইউনিয়নের হাজারো মানুষ। এমনকি তৎকালীন বিএনপি মন্ত্রী ফজলুল রহমান পটলকেও জনসমাবেশেও করতে দেয়নি এই ইউনিয়নের মানুষ। হরতাল,অবরোধ করে আমরা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা ট্রেন লাইন অবরোধ করে দিয়েছিলাম।
আমি সহ ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মীকেই বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় দিনের পর দিন জেল খাটতে হয়েছিলো এবং ডিটেনশন সহ। এরপর লড়াই, সংগ্রাম ও শত জেল, জুলুম, অত্যাচার সহ্য করে বিএনপি কে বিতাড়িত করেছিলাম। যাই হোক ২৩ সেপ্টেম্বর ভোর থেকে ই আব্দুলপুর স্টেশন ও এর আশাপাশে কয়েক হাজার পুলিশ নিয়োগ করেছিলো এবং উদ্দেশ্যে ছিলো যে জননেত্রী শেখ হাসিনার ট্রেন থামতে দেবে না ।অবশ্য অন্যান্য অনেক স্টেশনে যেমন ঈশ্বরদী, নাটোরে বিএনপির কর্মীরা নেত্রীর ট্রেন সফরকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেছিলো। নেত্রীর ট্রেনে গুলিবর্ষণ পর্যন্ত করেছিলো। কিন্তু আমাদের আব্দুলপুরে সেটা সম্ভব ছিলো না কারণ এখানে বিএনপির কোনো অস্তিত্ব ছিলো না, এই জন্য তারা পুলিশ দিয়ে পুরো স্টেশন এলাকা ঘিরে রেখেছিলো।
আমরাও সকাল থেকেই লালপুর,বাগাতিপাড়ার সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করলে দুপুরের পরে থেকে মিলকিপাড়ায় আমার বাড়িতে হাজারো নেতাকর্মীর ঢল নামতে শুরু করে। বিকেলের দিকে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমরা স্টেশনে যাবো এবং জনসভা করবোই করবোই তবে সুশৃঙ্খলভাবে। আমি উপস্থিত হাজারো নেতাকর্মীদের নেতাকর্মীদের সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা দিলাম যে কখন কি করনীয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক সমাবেশে যাবার পথে আব্দুলপুরে পুলিশ আমাদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলো।
সেখানে পুলিশ বাহিনীর সাথে অনেকে বাকবিতন্ডা শেষে এবং আমাদের নেতাকর্মীদের ধৈর্য, সহনশীলতা ও নেতার নির্দেশনা মেনে চলায় আওয়ামীলীগের কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে আমরা আস্তে আস্তে আব্দুলপুর স্টেশনে অবস্থান নিতে সক্ষম হয়েছিলাম। সন্ধ্যার পর রাত্রে নেত্রীকে বহনকারী ট্রেন আব্দুলপুর স্টেশনে এসে পৌঁছালো। প্রায় দশ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীর নিয়ে এক বিশাল সমাবেশ করলাম।নেত্রী ট্রেন থেকে নামলেন ও হাজারো নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিলেন।
পূর্ব সিদ্ধান্ত মোতাবেক মিটিং শুরু হবার একদম পূর্বমুহূর্তে আমাদের প্রিয় নেতা শহীদ জননেতা মমতাজ উদ্দিনকে আমরা বাড়ি থেকে সমাবেশে নিয়ে এসেছিলাম এবং মিটিং শেষে তার নেতৃত্ব দেওয়া কারণেই নেত্রীর উত্তরবঙ্গে সফর সঙ্গী হয়ে হয়েছিলেন। এটাই বাস্তব, যে সেদিন আমরা লালপুর, বাগাতিপাড়ার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শক্তি, সাহস ও দক্ষতা দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা এই বিশাল সমাবেশ কে সফল করেছিলাম।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
* এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ: সাবেক সংসদ সদস্য, ৫৮ নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া)।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top