logo
news image

নাটোরে বিশ্বভারতী শান্তিনিকেতনের বর্ষামঙ্গল

নিজস্ব প্রতিবেদক।।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজ মিলনায়তনে সংগীতগুরু আচার্য শৈলজারঞ্জন মজুমদারের ১১৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নৃত্যালেখ্য ‘বর্ষামঙ্গল’ পরিবেশিত হয়েছে। বিশ্বভারতী শান্তিনিকেতন এর শিল্পী ও কলাকুশলীরা এতে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সান্নিধ্যে থেকে শৈলজারঞ্জন মজুমদারের সংগীতচর্চা’ বিষয়ে মুখ্য আলোচনায় অংশ নেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিশ্বভারতী শান্তিনিকেতনের সাবেক উপাচার্য সুজিত কুমার বসু ও স্বপন কুমার দত্ত।
নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রসঙ্গ উপস্থাপন করেন এস বি বিপ্লব। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাটোরের জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকরামুল ইসলাম, এন এস কলেজের অধ্যক্ষ সামসুজ্জামান এবং জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম। জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান তাঁর আলোচনায় বলেন, ‘সংগীতগুরু আচার্য শৈলজারঞ্জন মজুমদার নেত্রকোনার জমিদার পরিবারের সন্তান ছিলেন। অথচ তিনি সবকিছু ছেড়ে সংগীতকে ভালোবেসে কবি রবীন্দ্রনাথের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন। তাঁর পাশে থেকে দীর্ঘ সময় ধরে সংগীতচর্চা করেছেন। কবিকে বাংলাদেশে এনে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরিয়েছেন। তাঁর অনুরোধে রবীন্দ্রনাথ বর্ষামঙ্গল রচনা করেছেন। অথচ শৈলজারঞ্জন মজুমদার বেঁচে থাকতে আমরা তাঁকে যথাযথ সম্মান জানাতে পারিনি।’ তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও এস বি বিপ্লবের উদ্যোগে জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ তাঁর সম্মানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বর্ষামঙ্গল আয়োজন করছে। সরকার নেত্রকোনায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছে। শৈলজারঞ্জন মজুমদারের স্মৃতি রক্ষার্থে সেখানে তাঁকে নিয়ে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।
আলোচনা শেষে রাত আটটায় বর্ণিল মঞ্চে ওঠেন জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের নবীন-প্রবীণ শিল্পী। তাঁরা দলীয় নৃত্য ও সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে বিশ্বভারতী শান্তিনিকেতনের শিল্পী ও কলাকুশলীদের স্বাগত জানান। আকাশবাণী ও দুরদর্শনের উপস্থাপিকা স্বপ্না দে ও শাশ্বতী গুহর উপস্থাপনায় বর্ষামঙ্গলের গান গেয়ে শোনান শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী মানস ভূল, শিখা চ্যাটার্জি। তাঁদের গানের তালে তালে নৃত্য পরিবেশন করেন শান্তিনিকেতনের অধ্যাপক সুমিত বসু, ছাত্রী সুচন্দ্রিকা হাজরা, ঐন্দ্রিলা পাল, কৃষ্ণেন্দু দে, তন্ময় পাল ও সহেলী নন্দি। বাদ্যযন্ত্রে ছিলেন অধ্যাপক চঞ্চল নন্দি ও সৌগত দাস। শিল্পীরা এক এক করে ১৭টি রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন। এ সময় মিলনায়তনে দর্শক–শ্রোতার উপচেপড়া ভিড় ছিল।
শিল্পীদের দিকনির্দেশনা দেন বিশ্বভারতী মনিপুরি নৃত্যগুরু মীনাক্ষী বসু, সংগীত ভবনের অধক্ষ্য নিখিলেশ চৌধুরী ও শান্তিনিকেতনের কর্মসচিব সৌগত চ্যাটার্জি।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top