logo
news image

নাটোরে অনলাইনে যাচ্ছে সাড়ে ৮ লাখ জমির খতিয়ান

ফারাজী আহম্মদ রফিক বাবন, নাটোর।।
নাগরিক সেবার মান উন্নয়ন তথা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে জেলার প্রায় সাড়ে আট লাখ জমির খতিয়ান যাচ্ছে অনলাইনে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বিশাল এই কর্মযজ্ঞে ইতোমধ্যে আট লাখ ছয় হাজার ১২২টি খতিয়ানের বিবরণী চলে গেছে অনলাইনে। বাকী আছে মাত্র চল্লিশ হাজার ডাটা এন্ট্রির কাজ। অর্থাৎ আর্কাইভে জমির যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ করার কাংখিত গন্তব্য খুব কাছেই।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের রেকর্ড রুম সূত্রে জানা যায়, জেলার সাতটি উপজেলায় এস্টেট একিউজিশন অর্থাৎ এস এ রেকর্ডভূক্ত খতিয়ানের সংখ্যা এক লক্ষ ৮৫ হাজার ১১২, ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে অর্থাৎ সি এস খতিয়ানের সংখ্যা দুই লক্ষ ৭৮ হাজার ৭৪৪ এবং রিভিশনাল সার্ভে অর্থাৎ আর এস খতিয়ানের সংখ্যা তিন লক্ষ ৮২ হাজার ৯৮৫। সব মিলিয়ে মোট খতিয়ানের সংখ্যা আট লক্ষ ৪৬ হাজার ৮৪৯টি।
জেলার আট লাখ ছয় হাজার ১২২টি খতিয়ানের বিবরণী ইতোমধ্যে চলে গেছে ভ‚মি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট আর্কাইভে। অবশিষ্ট চল্লিশ হাজার খতিয়ানের ডাটা এন্ট্রির কাজ আগামী দুই মাসের মধ্যে শেষ হবে বলে জানালেন রেকর্ড রুমের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও  নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আদনান চৌধুরী।
ভ‚মি মন্ত্রণালয়ের “ডিজিটাল রেকর্ড রুম” প্রকল্পের আওতায় নির্ভূলভাবে ডাটা এন্ট্রির কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে। আউট সোর্সিং ভিত্তিতে নিয়োজিত শিক্ষিত তরুণ-তরুণীর অংশগ্রহনে তিনটি পর্যায়ে কাজ সমাধা হচ্ছে। প্রথমত: ডাটা এন্ট্রিকারী খতিয়ানের এন্ট্রি দিয়ে অনলাইন ফাইল পাঠিয়ে দিচ্ছেন তুলনাকারীর কাছে। তুলনাকারীর কাজ শেষ হলে অনলাইন ফাইল যাচ্ছে যাচাইকারীর কাছে।
ডাটা এন্ট্রি কার্যক্রমের এন্ট্রিকারী গোলাম রাব্বানী জানান, নির্ধারিত সার্ভারে কাংখিত গতি  থাকলে দিনে একশ’ থেকে দেড়শ’টি খতিয়ানের এন্ট্রি সম্ভব। তুলনাকারী শামসুর তাজবীর এবং যাচাইকারী রাজু আহমেদ বলেন, দিনে  আড়াইশ’ থেকে তিনশ’ খতিয়ানের তুলনা ও যাচাই কাজ করা সম্ভব হচ্ছে। আউটসোর্সিং ভিত্তিতে নিয়োজিত এন্ট্রিকারীরা খতিয়ান প্রতি এন্ট্রি কাজের জন্যে আট টাকা এবং তুলনাকারী ও যাচাইকারীরা তাদের কাজের জন্যে খতিয়ান প্রতি দুই টাকা করে পারিশ্রমিক পাচ্ছেন।
সর্বশেষ মাঠ জরিপের আর এস খতিয়ান ঠিক থাকলেও এস এ এবং সি এস খতিয়ানের অনেক রেজিস্টার খাতা জরাজীর্ন হয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে সংশ্লিষ্ট উপজেলা ভ‚মি অফিস ও ইউনিয়ন ভ‚মি অফিস থেকে ঐসব রেজিষ্টার খাতা সংগ্রহ করে কাজ করা হয়েছে বলে রেকর্ড রুম সূত্রে জানা যায়।
নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোছাঃ শরীফুন্নেছা বলেন, অন লাইন ডাটা এন্টি’র কার্যক্রম শেষ হলে বিশ্বের যে কোন স্থান থেকে জমির মালিক ভূমি মন্ত্রণালয়ের আর্কাইভে জমির প্রয়োজনীয় তথ্যাদি দেখতে পারবেন এবং স্বাক্ষরবিহীন প্রিন্ট আউট কপিও নিতে পারবেন। আর অন লাইনে রেকর্ড রুম থেকে খতিয়ান প্রাপ্তির আবেদন করা হলে স্বাক্ষরযুক্ত খতিয়ান মাত্র এক কর্ম দিবসের মধ্যে আবেদনকারীর ঠিকানায় পোষ্ট করা সম্ভব হবে।
জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ বলেন, জমির খতিয়ানের অন লাইন ডাটা এন্ট্রির কার্যক্রম শেষ হলে সেবা গ্রহিতা ঘরে বসেই তাদের জমির অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং অতি দ্রæত জমির খতিয়ান হাতে পাবেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে তৈরী হবে আরো একটি মাইল ফলক।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top