logo
news image

ফজলুর রহমান পটলের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী

নিজস্ব প্রতিবেদক।।
নাটোরের লালপুর উপজেলার গৌরীপুরে নিজ বাসভবনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক প্রচার সম্পাদক, সাবেক যুব ও ক্রিড়া প্রতিমন্ত্রী ও বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা আলহাজ্ব ফজলুর রহমান পটলের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে রোববার (১১ আগস্ট) গৌরীপুরে তাঁর কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ, কোরআনখানি, দোয়া মাহাফিল ও কাঙ্গালি ভোজসহ এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, লালপুরের গৌরীপুরে বাদ যোহর লালপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নাসির উদ্দীনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান আলোচক ছিলেন নাটোর জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য কামরুন্নাহার শিরিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, নাটোর জেলা বিএনপির আহবায়ক আমিনুল ইসলাম, যুগ্ম আহবায়ক কাজী শাহ আলম, সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজ,  গোপালপুর পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন কচি, লালপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও লালপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হারুনর রশিদ পাপ্পু, গোপালপুর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম মোলাম, বাগাতিপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোশাররফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান প্রমূখ।
এছাড়াও লালপুর উপজেলা ও  গোপালপুর পৌর বিএনপির, যুবদল, ছাত্রদল ও সগযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন । শুরুতে নেতৃবৃন্দ মরহুম ফজলুর রহমান পটলের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পন ও কবর জিয়ারত করেন। আলোচনা সভা শেষে মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ফজলুর রহমান পটল প্রায় সাড়ে ৩ বছর ধরে তার ভাই কিডনি রোগে আক্রান্ত ছিলেন।  ২০১৬ সালের ১১ আগস্ট রাত ৯ টার দিকে ভারতের কলকাতার রবীন্দ্র হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ফজলুর রহমান পটল একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ও সংসদ সদস্য। তিনি নাটোর-১ আসন থেকে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
ফজলুর রহমান পটল ১৯৪৯ সালে ২৪ এপ্রিল নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার গৌরিপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম আরশাদ আলী এবং মাতার নাম ফজিলাতুন নেছা। পাঁচভাই ও একবোনের পরিবারে তিনিই ছিলেন সবার বড়।
ফজলুর রহমান পটল লালপুর উপজেলার গৌরিপুরে প্রাথমিক ও গৌরিপুর উচ্চ বিদ্যালয় হতে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করে পাবনাতে যেয়ে পড়াশুনা শুরু করেন। সেখানে স্থানীয় একটি বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক পাস করেন এবং পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যামিক পাস করেন। এর পর তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানে তিনি পরিসংখ্যান বিষয়ে পড়াশুনা করেন। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন।
ফজলুর রহমান পটল ১৯৭৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে ভিপি নির্বাচিত হন। ১৯৭৮ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাত ধরে বিএনপিতে যুক্ত হন। তিনি বিএনপির প্রচার সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। এর পর তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপষ্ঠো হিসাবে আমৃত্যু দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসন থেকে বিএনপি’র প্রার্থী হিসাবে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর মধ্যে ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকারের শাসনামলে যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী হন। এরপর ১৯৯৩ সালে সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী এবং ২০০১ সালে চার দলীয় জোট সরকারের সময় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ১৯৮৪ সালের ১৪ মে কামরুন্নাহার শিরিনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের ২ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে। তারা হলেন: বড় ছেলে ইয়াসির আরশাদ রাজন, ছোট ছেলে ইস্তেখার আরশাদ প্রতীক, বড় মেয়ে ফারহানা শারমিন কাকন গৃহীনি ও ছোট মেয়ে ফারজানা শারমিন পুতুল।
ফজলুর রহমান পটল বেশ কয়েক বছর ধরে কিডনির জটিল রোগে ভুগছিলেন। তিনি দেশে বিদেশে চিকিৎসা নেন। ২০১৬ সালের ১৬ এপ্রিল চিকিৎসার জন্য কলকাতা যান। সেখানে রবীন্দ্র হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top