logo
news image

বাবার জন্য সন্তানের আকুতি

উৎসব সরকার।।
একটা 'অচেনা' ঝড় এসেছে। তাতে এলোমেলো হয়ে যাওয়ার পথে আমাদের সুখের সংসার!
গত রোজার ঈদে ঢাকা এসেছিল বাবা। একদম সুস্থ, সবল। আর এবার? গত ১৯ জুলাই যখন ঢাকা এলেন তখন চলাফেরা করাটাই দায়! অনেক কষ্ট করে চিকিৎসা নিতে নাটোর থেকে এসেছেন ঢাকায়।
গত মাসের এক তারিখের দিকে সকালে ১৫ পিস কাঁঠাল আর রুটি খেয়েছিলেন। এরপর থেকে সমস্যার শুরু! দুপুর থেকে খাওয়া বন্ধ। ওখানে রাজশাহী মেডিকেল থেকে আসা মেডিসিনের ডাক্তার দেখিয়েছেন, কিছু টেস্টও করিয়েছেন তাতে কিছু ধরা পড়েনি কিন্তু খেতেও পারেননি। অবশেষে সুস্থ হওয়ার তাড়নায় ঢাকা আসা।
ল্যাবএইডে মেডিসিনের ডাক্তার সমীরণ স্যারকে দেখানোর মধ্যে দিয়ে ঢাকাতে বাবার চিকিৎসা শুরু। বেশ কিছু টেস্ট দিয়েছিলেন। রিপোর্ট দেখে কোনো মেডিসিন না দিয়ে হার্টের ডাক্তার দেখাতে বললেন। এরপর ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে তৌফিক স্যারকে দেখানো হলো।
উনি কিছু মেডিসিন দিলেন। তিনি বক্ষব্যাধি ডাক্তার রাজাশিস স্যারকে দেখাতে বললেন। রাজাশিস স্যার দেখে চেস্টের সিটিস্ক্যান করতে বললেন।
সিটিস্ক্যান করানো হলো। রিপোর্ট দেখে বললেন, ফুসফুসে টিউমার, ক্যান্সারও মেবি আছে। টিবিও হতে পারে। এফএনএসি টেস্ট করতে হবে।
ডাক্তার দেখানো হচ্ছে কিন্তু খেতে না পারার কারণে এবার দেখানে হলো গ্যাসট্রোলিভারের ডাক্তার মোখলেস স্যারকে। উনি কিছু মেডিসিন দিলেন। আলট্রাসনোগ্রাম করানো হলো। কিন্তু খেতে পারেন না, কোনো সমস্যাও ধরা পড়ে না।
ঢাকা মেডিকেলেও একবার নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গত পরশু দিন একটা প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। মেডিসিন ডাক্তার জুয়েল স্যার দেখে স্যালাইন, কিছু মেডিসিন দিয়েছেন কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে না। খাওয়া একদম বন্ধ। ২-১ চামচ ভাত খেলেও বমি হচ্ছে। বলতে গেলে, এক মাসের বেশি সময় ধরে একদম না খাওয়া।
এতদিন তাও কারো সাহায্য নিয়ে চলাফেরা আই মিন বাথরুমে যেতে পারতো। আজ ২ দিন ধরে সে অবস্থাও নেই। বিছানাতে উঠে বসতে পর্যন্ত পারছে না।
আজ বিকেলে এফএনএসি করাবো। ৭ তারিখে রিপোর্ট দেবে। বাবা শুনে বলছে, সে পর্যন্ত বাঁচবো তো!
একজন সন্তান হিসেবে বাবার তিলে তিলে শেষ হয়ে যাওয়া দেখাটা যে কতটা কষ্টের তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।
আমার পরিবারের সবাই অনেকটাই ভেঙে পড়েছেন, নিজেই যখন ঠিক নেই তখন তাদেরকে কীভাবে সান্ত্বনা দেব তা জানি না!
আমার পরিবারে আমি একমাত্র ছেলে সন্তান। চাচা, মামা কেউ নেই। বাবা অসুস্থ হওয়ার পর বুঝছি, আরেকটা ভাই থাকা খুব দরকার ছিল!
বাবা অনেক সিগারেট খেতেন। তার ফুসফুসে সমস্যা হওয়ার এটাও অন্যতম একটা বড় কারণ। যারা সিগারেট খান, আমার অনুরোধ, ছেড়ে দিন! ধূমপান করা মানে নিজের মৃত্যু নিজে ঢেকে আনা!
বাবার সমস্যা তাকে বলা হয়নি। মাও জানে না। জানলে তারা বিশেষ করে বাবা আরো ভেঙে পড়বেন। সে কারণে হাইড করা।
আপাতত, আপনাদের কাছে একটাই চাওয়া, আমার বাবার জন্য একটু দোয়া /আশীর্বাদ করবেন।  (ফেসবুক থেকে)

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top