logo
news image

মুক্তিযুুদ্ধের গৌরবের ফেরিওয়ালা দেশের গর্ব এসপি শাহ মিজান

নিজস্ব প্রতিবেদক।  ।  
নিজস্বতা আর স্বকীয়তায় আবারো ‘‘টিম ঢাকা জেলা পুলিশকে’’ অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছেন পুলিশ সুপার শাহ্ মিজান শাফিউর রহমান। স্বাধীনতার চেতনাকে সমুন্নত করতে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে এবারো ব্যতিক্রমী আয়োজন নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে থাকছে জেলা পুলিশের সরব উপস্থিতি।
স্বাধীনতার চেতনায় নতুন প্রজন্মকে উজ্জীবিত করার পাশাপাশি দিনটিকে আরো তাৎপর্যময় করতে এবারো বর্নাঢ্য আয়োজন নিয়ে দেশবাসীর সামনে উপস্থিত হচ্ছে ঢাকা জেলা পুলিশ।
বিস্তৃত পরিসরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে প্রান্তজনে ছড়িয়ে দিতে জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে আমিনবাজার পর্যন্ত ঢাকা – আরিচা মহাসড়কের দু’পাশে এবারো স্থাপন করা হয়েছে ২৬৪ ফুট দৈর্ঘ্যের ২৮টি দৈত্যাকৃতির (জায়ান্ট) এলইডি টেলিভিশন। যাতে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা থেকে প্রচারিত হবে মুক্তিযুদ্ধের দূর্লভ ইতিহাস সমৃদ্ধ আলোকচিত্রসহ স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহ।
ব্যতিক্রমী কাজের মধ্যে থাকছে জাতীয় স্মৃতিসৌধের গৌরবময় স্বাধীনতা মঞ্চে শেরপুর জেলার পাঁচজন বীরাঙ্গনা নারী মুক্তিযোদ্ধাসহ ৬০ জন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধাকে সম্বর্ধণা। স্বাধীনতা দিবসে দুপুর ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত চলবে এই সম্বর্ধনা।এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আমন্ত্রিত বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ক্রেস্ট ও উপহার তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বে-সরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এমপি।
সততা, নিষ্ঠা, সাহস, পেশাদারিত্ব আর গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কারনে নিজ বাহিনীতেই শাহ মিজান শাফিউর রহমান নিজেকে পরিচিতি করেছেন স্বতন্ত্র পরিচয়ে। তবে নিজের পেশাগত কাজে দেশবাসীর কাছেও সমানতালে প্রশংসিত তিনি। বৃটিশ আমল থেকে এ পর্যন্ত ৯২তম পুলিশ সুপার ও স্বাধীনতা পরবর্তী ৩১তম পুলিশ সুপার হিসেবে ২০১৬ সালের ১৬ জুলাই ঢাকা জেলায় দেন নাটোরের সন্তান শাহ মিজান শাফিউর রহমান।
সুগঠিত নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি বাহিনীর সদস্যদের মর্যাদা দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব বাড়িয়ে পুলিশ বাহিনীতেও নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বে। জেলা পুলিশে প্রয়োজনীয় সংস্কার আর পেশাদারিত্বকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে জেলা পুলিশকে করেছেন গতিশীল। বেশকিছু অপরাধকে নামিয়ে এনেছেন শুন্যের কোঠায়।আইন শৃক্সখলার উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রনে নিজের ভূমিকা আর কৃতিত্বের জন্যে পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সন্মাননা।
শাহ মিজান শাফিউর রহমান জানান, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ প্রথম রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে বঙ্গবন্ধুর আহবানে মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রতিরোধ করেছে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। সেই গৌরবময় বাহিনীর উত্তরসুরী হিসেবে আমাদের দায় রয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্মানিত করা,মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আরো শাণিত করা।
তাই পেশাগত গন্ডির বাইরে বাইরে আমরা দেশত্ববোধকে সামনে রেখে জাতির সূর্য্য সন্তানদের শ্রদ্ধা জানানোর পদক্ষেপ নিয়েছি।
সম্বর্ধনা প্রাপ্তদের এবারের তালিকায় রয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও বরেণ্য চলচ্চিত্র পরিচালক নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু,রাইসুল ইসলাম আসাদ,আলী যাকের, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, প্রখ্যাত নাট্যকার ও অভিনেতা মামুনুর রশীদ,কবি অসীম সাহা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দ সৈনিক কল্যানী ঘোষ,জহির উদ্দিন জালাল, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা,সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ, ইন্সপেক্টর জেনারেল অব রেজিস্ট্রেশন ড. খান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, আহাদ চৌধুরী, মাহবুব উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম। এ ছাড়াও ঢাকা জেলার সাত থানা থেকে মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এমন ২২ জন মুক্তিযোদ্ধা ছাড়াও ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স থেকে প্রতিরোধ যুদ্ধে সরাসরি ঝাঁপিয়ে পড়া ৯ জন পুলিশ সদস্যকেও সম্বর্ধিত করা হবে এই অনুষ্ঠানে।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বন্যার্ঢ্য আয়োজনে নিজ নিজ ক্ষেত্রে আলো ছড়ানো ব্যক্তিত্বদের মধ্যে রয়েছেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এমপি,দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোঃ এনামুর রহমান এমপি, ঢাকা ২০ আসনের সাংসদ,বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব বেনজীর আহমেদ, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি, চেীধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম, পিপিএম।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্বে থাকবেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার শাহ্ মিজান শাফিউর রহমান বিপিএম (বার),পিপিএম।
দিনভর মুক্তিযুদ্ধ ও দেশত্ববোধক সঙ্গীত, নৃত্য, আবৃতি, গণসঙ্গীত নিয়ে মাতিয়ে রাখবেন চন্দনা মজুমদার,ফকির শাহাবুদ্দিন, এস আই টুটুল,কনা,বাউল শফি মন্ডল,নৃত্য শিল্পী নাদিয়ার মতো দেশ বরেণ্য শিল্পীরা। এ ছাড়াও স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে আসা দর্শনার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে ২৫ হাজার বোতল মিনারেল পানি। অন্যদিকে পুলিশের ব্যবস্থাপনায় জাতীয় স্মৃতিসৌধে বাড়তি দর্শনার্থীদের সেবায় থাকবে ভ্রাম্যমান টয়লেট।
গত বছর বিজয় দিবসে শাহ্ মিজান শাফিউর রহমানের সার্বিক তত্বাবধান আর নির্দেশনায় মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের দূর্লভ আলোকচিত্রের সমাহারে ঢাকা জেলা পুলিশ প্রকাশ করে নান্দনিক প্রচ্ছদ আর অলংকরনে সজ্জিত স্মারকগ্রন্থ ‘ গৌরবময় স্বাধীনতা’।
মুক্তিযুদ্ধের অজানা ঘটনাচিত্র,দূর্লভ ইতিহাস সমৃদ্ধ ৩৪০ পৃষ্ঠার স্মারকগ্রন্থটি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেয়া দেয়া হয়। সেই গ্রন্থটি হাতে পেয়ে শিক্ষক,সাংবাদিক,বুদ্ধিজীবিসহ নানা মহলে প্রশংসিত হয় জেলা পুলিশের অসামান্য এই উদ্যোগ।
পুলিশের ২০তম ব্যাচের কর্মকর্তা ২০০১ সালে যোগ দেন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে। দিনাজপুর জেলা, সিএমপি, র্যা ব, এসবি ও যশোর জেলায় দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করা এই কর্মকর্তার অভিজ্ঞতার ঝুলিতে রয়েছে বহু প্রশংসা আর পদক। দু’বার জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বাকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন ‘জাতিসংঘ শান্তি পদক।
পুলিশ সুপার হিসেবে লক্ষীপুর জেলায় সন্ত্রাস ও গডফাদার দমনে অত্যন্ত দক্ষতা ও সফলতার স্বাক্ষর রাখা শাহ মিজান শাফিউর রহমান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগে উপ-পুলিশ কমিশনারের দায়িত্ব পালন শেষে পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দেন ঢাকা জেলায়।
পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্ততি প্রাপ্ত ঢাকা জেলায় কর্মরত মাসুম আহমেদ ভূইয়া জানান,সবাই পথে চলে। আর কেউ কেউ পথ দেখায়। পদ দেখানো মানুষটিই আমাদের ঢাকার সুযোগ্য পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান। স্যার যা করে যাচ্ছেন তা পরবর্তীতে হয়ে উঠবে অনুস্মরণীয় ও অনুকরণীয়। আমরা গর্বিত স্যারের টিমে কাজ করতে পেরে।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইদুর রহমান জানান, এসপি স্যার আমাদের দেখিয়ে দিয়েছেন টেকশই অপরাধ দমনে প্রয়োজন পুলিশের পাশাপাশি নাগরিক সম্পৃক্ত বাড়ানো। স্যারের নেয়া এমন অসংখ্য প্রয়াস আজ সাড়া ফেলেছে সমাজে। এর ফল পেতে শুরু করেছেন ঢাকা জেলাবাসী।
সততা,নিষ্ঠা আর স্বদেশ প্রেমে উজ্জীবিত হয়ে দেশের জন্যে আমাদের যে অনেক কিছু করার আছে সে কথাই স্যার আমাদের কাজে কর্মে প্রেরণার বাতিঘর হিসেবে প্রমাণ করে দিয়েছেন।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top