logo
news image

রাশিয়ার সোচিতে এটমএক্সপো- ২০১৯ অনুষ্ঠিত

স্বপন কুমার কুন্ডু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
রুশ অবকাশ শহর সোচিতে বুধবার বিকেলে, পরমাণু শক্তি বিষয়ক ১১তম আন্তর্জাতিক ফোরাম এটমএক্সপো শেষ হয়েছে। ১৫ই এপ্রিল রুশ রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি কর্পোরেশন রসাটমের আয়োজনে এই এটমএক্সপো উদ্বোধন করা হয়। এবছরের প্রতিপাদ্য ‘নিউকিয়ার ফর বেটার লাইফ’।
বাংলাদেশসহ ৭৪টি দেশের ৩ হাজার ৬’শ এরও বেশী প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে ছিলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের কর্মকর্তাবৃন্দ, পরমাণু শক্তি বিশেষজ্ঞ ও সংবাদ মাধ্যম প্রতিনিধি। এটমএক্সপোতে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করছে কাতার, বাহারাইন এবং নিকারাগুয়া। রসাটমের বাংলাদেশী গণমাধ্যম সংস্থা সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট  ভ্লদিমির পুতিন এক বিশেষ বার্তায় অংশগ্রহণকারী সকলকে স্বাগত জানিয়ে আশা প্রকাশ করেন যে গঠনমূলক পরিবেশে এটমএক্সপো ২০১৯ অনুষ্ঠিত হয়ছে এবং পারমাণবিক শিল্প যেসকল সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে তার দীর্ঘ মেয়াদী সমাধান আসবে এ ফোরাম থেকে। তিনি আরও বলেন, “ঐতিহ্যগতভাবেই পরমাণু শিল্পে রাশিয়ার রয়েছে দক্ষ জনবল, বৈজ্ঞানিক এবং উৎপাদন সক্ষমতা। রাশিয়া সক্রিয়ভাবে আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে পার্টনাদের উচ্চমান সম্পন্ন, নির্ভরযোগ্য, নিরাপদ এবং পরিবেশ বান্ধব বিভিন্ন সমাধান প্রদান করে আসছে।”
এটমএক্সপো ২০১৯ এ অংশগ্রহণকারীদের জন্য প্রণীত কর্মসূচিতে প্লেনারী সেশনসহ বিভিন্ন গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এবারের ফোরামে বেশ কিছু দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে জানা গেছে। ফোরামে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর মোট ১৮টি গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা পারমাণবিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে অভিজ্ঞতা ও মতবিনিময় করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রদত্ত বক্তব্যে রসাটমের মহা-পরিচালক আলেক্সি লিখাচোভ বলেন, “জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচির সকল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে পরমাণুর শক্তিপূর্ণ ব্যবহার ওতপ্রতোভাবে জড়িত। বর্তমান ফোরাম সর্বাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে, যার মাধ্যমে আমাদের ভবিষ্যৎ পৃথিবীর ভিত্তি স্থাপিত হবে।”
ইউরোপীয় ইউনিয়ন কমিশনের এনার্জি বিষয়ক উপ-মহাপরিচালক গেরাসিমভ থমাস তার বক্তব্যে বলেন, “ইউরোপী ইউনিয়নের জলবায়ু সংক্রান্ত ২০৫০ লক্ষ্যমাত্রা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানীর অবদানের মধ্যে যে ফারাক রয়েছে তা পূরণ করতে পারমাণবিক শক্তির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইউরোপ গ্রীণ হাউজ গ্যাসের নির্গমন ২০৩০ সাল নাগাদ ৪৫ শতাংশ ২০৫০ নাগাদ ৬০ শতাংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। কার্বন মুক্ত করার ক্ষেত্রে পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার জরুরী বলে মনে করি। বিভিন্ন দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এটা প্রতীয়মান হচ্ছে যে ইউরোপের বিদ্যুৎ চাহিদার উল্লেখযোগ্য অংশ পূরণে পরমাণু শক্তির প্রয়োজন রয়েছে।”
ফোরামের সমাপনি দিনে গতবারের মতো ফোরামের সাইডলাইনে এবারেও পরমাণু শক্তি বিষয়ক অনেকগুলো দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। উল্লেখ্য, গতবার স্বাক্ষরিত চুক্তির সংখ্যা ছিল ৩৯টি, যার মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, অংশীদারিত্ব ও বাণিজ্যিক বিষয়সমূহ অন্তর্ভূক্ত ছিল।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top