logo
news image

একজন হতভাগ্য পিতার করুন কাহিনী

মো. শহিদুল ইসলাম।  ।  
আবু তালেব (৮২) গ্রাম- দিগনগর, থানা- শৈলকূপা, জেলা- ঝিনাইদহ, ৭ সন্তানের জনক, ৩ ছেলে ৪ মেয়ে, ২ ছেলেকে দূর্বৃত্তরা খুন করেছে, বর্তমান ১ ছেলে আছে সেও আধা পাগোল, বৃদ্ধার কথা মতে ৪ মেয়েকে কিছু জমি লিখে দেওয়ার ছেলে লাঠি দিয়ে তাহার মাজায় আঘাত করে তাতে তার মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যায়, ৫ দিন গত হলো এক মেয়ে তাকে শৈলকূপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে রেখে গেছে তারপর আর কেউ কোন খোজ খবর নিতে আসেনি, পাশের বেডে আমার ছোট ভাই সরক দূরঘটনায় চিকিৎসা নিচ্ছে।  গত ২৫ ফেব্রুয়ারি আমি ওকে দেখতে গিয়ে দেখি বৃদ্ধ মানুষটা একটা লাঠি ভর করে হাটার চেষ্টা করছে আমি জিজ্ঞেস করলাম কোথায় যাবেন মুরব্বি, ক্ষিন কন্ঠে বললেন বাথরুমে যাব, আমি মুরব্বির হাত ধরে বাথরুমে নিয়ে গেলাম, আবার নিয়ে আসলাম, দুটি কমলা দিলাম, কমলা দুটি কাপাকাপা হাতে ধরে, আমাকে খুব আদর করে ফিসফিস করে কিযেন বললো, দেখি চোখ দিয়ে তার অঝরে পানি পরছে। একটু স্বাভাবিক হয়ে আমাকে সবকথা বললেন। আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল তবুও মুরব্বিকে একটু শান্তনা দেবার চেষ্টা করলাম। নার্সকে ডেকে বললাম মুরব্বিকে একটু খেয়াল রাখবেন। নার্স বললেন কেউ দেখতেও আসেনা আমরাই তো খোঁজ খবর নিচ্ছি। নার্স আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন আপনার কি হয়? আমি নার্সের প্রশ্নের জবাব কি দেব ভাব ছিলাম, হঠাৎ নার্স আক্রমণের সুরে আমাকে বললেন আপনারা কি মানুষ? আমি নার্সের দিকে না তাকিয়ে পাশে থাকা আমার অবস্বর প্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক পিতার দিকে তাকালাম, আমার আব্বা বললেন কে মানুষ কে অমানুষ তুমি চেন? আমার মা নার্সকে বললো এটা আমার ছেলে উনি (বৃদ্ধ) আমাদের কেউ না, নার্স আমাকে sorry ভাইয়া বলে চলে গেলেন। আমি মুরব্বিকে কাল আসবো বলে চলে আসি। কিন্তু কি নিয়তি আজ সকাল ১০.০০ টায় জানলাম আমার ছোট ভাই এর অবস্থার অবনতি তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে দেখি ওকে এ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়েছে, মুরব্বিকে দেয়া কথা রাখতে পারিনি আর দেখে আসতে পারিনি, জানিনা পথ চেয়ে আছে কিনা? কোন সহৃদয় বান ব্যাক্তি থাকলে একটু দেখে আসবেন ওনার ছেলে মেয়েকে একটু খবর দিবেন।
* মো. শহিদুল ইসলাম: এএসআই, লালপুর থানা, নাটোর। 

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top