logo
news image

বাগাতিপাড়ায় ৬৪ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই

মোঃ মঞ্জুরুল আলম মাসুম, বাগাতিপাড়া (নাটোর)।  ।  
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার ১১৩ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। রাষ্ট্রভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার প্রায় ৬৭ বছর পার হলেও এখনো প্রতিষ্ঠানগুলোতে শহীদ মিনার নির্মিত হয়ে ওঠেনি। এতে ভাষা শহীদদের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা জানাতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবসে শিক্ষার্থীরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ছুটে যেতে হয় নিকটবর্তী কোন শহীদ মিনারে। আবার কোথাও কোথাও বাঁশের কঞ্চি কিংবা কলাগাছ দিয়ে তৈরি করা কৃত্তিম শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় ভাষা শহীদদের।
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন জাতীয় দিবস পালনের সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় এসব দিবসে শিক্ষার্থীরা ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি যথাযথভাবে শ্রদ্ধা জানাতে পারে না। তারা কাছের কোন প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনারে অথবা কৃত্তিমভাবে বানিয়ে তাতেই ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। প্রধান শিক্ষককরা জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণে কোন বরাদ্দ না পাওয়ায় তারা শহীদ মিনার নির্মাণ করতে পারেননি। যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে তা তারা নিজেদের অর্থায়নে তৈরি করেছেন। আর কোথাও কোথাও ‘টি আর’ অথবা ‘স্লিপ’ এর বরাদ্দ থেকে এসব শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়েছে। প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণে তারা সরকারি বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন।
তকিনগর আইডিয়াল হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মকবুল হোসেন জানান, তিনি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব অর্থায়নে শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারনে তা দীর্ঘদিনেও সমাপ্ত করতে পারেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, 'বছর বছর ধরে দেখছি উপজেলায় উন্নয়নের জন্য কত বরাদ্দ আসছে। অথচ প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের তাগিদ কেউ অনুভব করেন না।' তিনি বলেন, ‘শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকা একান্ত প্রয়োজন’।
শিক্ষার্থীরা জানায়, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আসলে তারা বাঁশের কঞ্চি কিংবা কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে দিবসটি পালন করেন। কেউ কেউ বলেন, ভাষার মাস আসলেই সাংবাদিকরা তাদের বিদ্যালয়ে ছুটে যান, এভাবে বছরের পর বছর যায় তবুও শহীদ মিনার আর নির্মাণ হয় না।
উপজেলা প্রাথমিক ও মাধমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৫৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ১৯ টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে। বাঁকি ৩৭ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। এছাড়া ৪০টি মাধমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৬ টিতে, ১১ টি কলেজের মধ্যে ৫টিতে এবং ৭টি কারিগরি কলেজের মধ্যে ৬ টিতেই শহীদ মিনার নেই।  
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাসরিন বানু বলেন, কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘স্লিপ’ এর টাকা থেকে ইতিমধ্যে শহীদ মিনার নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্প থেকে পর্যায়ক্রমে এসব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top