logo
news image

আন্তর্জাতিক রবীন্দ্র পুরস্কারে ভূষিত ছায়ানট

প্রাপ্তি প্রসঙ্গ ডেস্ক।  ।  
বাংলাদেশের নন্দিত সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ছায়ানট’ সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখায় সম্প্রীতি স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ভারতের সম্মানজনক আন্তর্জাতিক টেগোর অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ।
সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে নয়াদিল্লির প্রবাসী ভারতীয় কেন্দ্রে আয়োজিত এক জাঁকালো অনুষ্ঠানে এ পুরস্কার গ্রহণ করেন ছায়ানটের সভাপতি ড. সনজীদা খাতুন। তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী ড. মহেশ শর্মা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
ছায়ানটকে অভিনন্দন জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত বছরের এপ্রিলে পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ‘বাংলাদেশ ভবন’ উদ্বোধনের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, সাংস্কৃতিক কারণে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর একত্র হওয়ার ঘটনা খুবই অভাবনীয়। আর এর মূলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত রবীন্দ্রনাথেরই লেখা উল্লেখ করে মোদি বিশ্বকবির আদর্শ ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ দুনিয়াব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ছায়ানটের কর্মকান্ডের প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে একটি জুরি বোর্ড ২০১৫ সালের জন্য ছায়ানটকে এ পুরস্কারে ভূষিত করে। ২০১৪ সালের জন্য এই পুরস্কার পেয়েছেন ভারতের মনিপুরী নৃত্যশিল্পী রাজকুমার সিংহজিৎ সিং। আর ২০১৬ সালের জন্য এই সম্মাননা পেয়েছেন ভাস্কর রাম ভাঞ্জি সুতার।
‘আন্তর্জাতিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পুরস্কার’ হলো বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫০তম জন্মবার্ষিকীতে চালু করা একটি বিখ্যাত সম্মাননা।
সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির মূল্য রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ভারত সরকার ২০১১ সালে পুরস্কারটি প্রবর্তন করে। ২০১২ সালে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি সেতারশিল্পী রবিশংকরকে দিয়ে এ পুরস্কার প্রদান শুরু করেন। ২০১৩ সালে সঙ্গীতজ্ঞ জুবিন মেহতাকে ভূষিত করা হয়। এ পুরস্কারের অর্থমূল্য এক কোটি রুপি।
অনুষ্ঠানে পুরস্কার গ্রহণের পর সনজীদা খাতুন বলেন, ছায়ানটকে পুরস্কৃত করার মাধ্যমে ভারত এই সাংস্কৃতিক সংগঠনকে কৃতজ্ঞতার ঋণে আবদ্ধ করলো। এই সম্মাননা ছায়ানটকে তার প্রগতিশীল কার্যক্রমে আরও অনুপ্রাণিত করবে।
জুরির সিদ্ধান্তটি গুরুদেবের সার্বজনীন মানবতাবাদের উদার প্রগতিশীল ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখা জন্য এবং সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির প্রচারে সংগঠনের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ভারত সরকার পুরস্কারটি চালু করে।
১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত ছায়ানটের রয়েছে রবীন্দ্রচর্চাসহ নানা সাংস্কৃতিক কাজের গৌরবময় ঐতিহ্য। সেইসঙ্গে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামেও ছায়ানট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ এবং ভারত, বিশেষত পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় ও অনুধাবনের ক্ষেত্রে একটি ঘনিষ্ঠ সেতুবন্ধনের কাজ করেছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ছায়ানটের নাম। যে প্লাটফর্মের মধ্য দিয়ে বাঙালির পরিচয় এবং সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তির প্রকাশ ঘটেছে।
তৎকালীন পূর্ব পাকিন্তানে রবীন্দ্র সংগীত নিষিদ্ধ হলে, ছায়ানট রবিঠাকুরের গানের সুর এবং রচনার মাধ্যমে উদার অভিব্যক্তি প্রচার করতে থাকে গোপনে।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top