আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমা
নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর। ।
মুসলীম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি কামনা করে মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মোনাজাত পরিচালনা করেন তাবলিগ জামাতের দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের মাওলানা মুহাম্মদ শামীম ১১টা ৪৫ মিনিট শুরু হয়ে দীর্ঘ ১৫মিনিট মোনাজাত করেন।
মোনাজাতে বলেন, যে দ্বীন ইসলামের বিধান অনুসারে চলবে এবং হজরত মুহাম্মদের (সা.) জীবনাদর্শ অনুসরণ করবে সে দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা অর্জন করবে। ঈমানকে শক্তিশালী করতে হলে মানুষকে মসজিদের পরিবেশে বসাতে হবে। মুসলমানের নামাজ ছাড়ার প্রশ্নই আসে না। নামাজ এমনভাবে আদায় করতে হবে, যেমন নবী করিম (সা.) আদায় করেছেন। জবরদস্তি করে নয়, তাজিমের সঙ্গে বুঝিয়ে কাউকে মসজিদে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের প্রত্যেকটি কাজ আল্লাহকে রাজি ও খুশি করার জন্যই করতে হবে। নামাজ সমস্ত গুনাহ থেকে বিরত রাখে। সহিহভাবে নামাজ আদায় শিখতে হবে। নামাজের দরকারি সুরাসমূহ সহিহ-শুদ্ধভাবে শিখতে হবে।
আখেরি মোনাজাতে শরিক হতে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেওয়া মুসল্লীদের পাশাপাশি ঢাকা-গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা ইজতেমায় আসেন। মুসল্লীদের আসা-যাওয়ার সুবিধার্থে সোমবার দিবাগত মধ্যরাত হতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহসড়কের জয়দেবপুর চান্দনা চৌরাস্তার ভোগড়া বাইপাস, টঙ্গী ব্রিজ, আশুলিয়া সড়কের কামারপাড়া ব্রিজ ও টঙ্গী-নরসিংদী সড়কের মীরেরবাজার এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহন টঙ্গীতে প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে ইজতেমা ময়দানে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সা’দ অনুসারী মাওলানা মো. আশারফ আলী জানান, আগামী বছর মাওলানা সা’দের অনুসারীদের ইজতেমার তারিখ পরে ঘোষণা করা হবে।
মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ইজতেমা ময়দানে ৩৬টি দেশের প্রায় ১২শ’ বিদেশি মেহমানও ইজতেমা ও আখেরি মোনাজাতে অংশ গ্রহণ করেন।
ইজতেমাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি কাকরাইল মসজিদের ইমাম মাওলানা জোবায়ের এবং দিল্লির মাওলানা সা'দ পন্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরপর ইজতেমার দায়িত্ব নেয় সরকার। ইজতেমা শুরুতে স্থগিত করা হয়। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ধর্ম মন্ত্রণালয় বিবাদমান দুটি পক্ষকে নিয়ে ঢাকায় সভা করে। ওই সময় সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে দুই পক্ষ বিশ্ব ইজতেমা করতে রাজি হয়। পরে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে মাওলানা জোবায়ের পক্ষকে ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি এবং সাদ পন্থীদের ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি দিন নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। সাদপন্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় আখেরি মোনাজাত পরিচালনার সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
গাজীপুর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দুই পক্ষের এবারের বিশ্ব ইজতেমা শেষ হলো।
সাম্প্রতিক মন্তব্য