logo
news image

আব্দুন নূর চৌধুরী একটি নাম একটি ইতিহাস

তৌহিদ চৌধুরী।  ।  
মরহুম আব্দুন নূর চৌধুরী একটি নাম একটি ইতিহাস। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্বের পর পর ৪৬-৪৭ এর সময়কালে ব্রিটিশদের গ্রেফতার এড়াতেই সাময়িককালের জন্য শায়েস্তাগঞ্জ হাই স্কুলে আসা। তরুন টগবগে ২১ বৎসরের মেধাবী সেই ছেলেটি হয়ত ভাবতেই পারেননি এই বিদ্যালটিই হবে তাঁর আজীবন কর্মস্থল। ১৯৪৩ সালে বিজ্ঞানে মেট্রিকোলেশন ১ম বিভাগ, ১৯৪৫ সালে এইচএসসিতে ১ম বিভাগ পাশ করা সেই মেধাবী ছাত্রটি ডাক্তার বা প্রকৌশলী হওয়ার কথাছিল কিন্তু তা সম্ভব হয়ে উঠেনি।  কারন তিনি ছিলেন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম ছাত্র সংগঠন "অল আসাম মুসলিম ষ্টুডেন্ট ফেডারেশন" এর সেক্রেটারী।  ফলে ব্রিটিশ সরকার তাঁর বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করে এবং হুলিয়া থেকে বাঁচতেই তাঁর আত্মগোপন।  এই সুযোগেই পেয়ে গেলাম একুশ বৎসরের তুখোড় মেধাবী ছাত্রকে একজন শিক্ষক রুপে। ৫০ সালের দিকে আইন শাস্ত্র পড়তে ঢাকায় গমন।  অতপর শেষ না করেই পুনরায় স্কুলে যোগদান।  তারপর বিএসসি, বিএড, এমএড কৃতিত্বের সাথে সম্পন্ন করেন।  ১৯৫৬ সালে তিনি প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহন করেন। এইতো পথচলা ১৯৪৬-১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন একজন সফল সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক।  বিদায়লগ্ন পর্যন্ত তিনি দশম শ্রেণিতে অংক পড়িয়েছেন। আমি ১৯৮৭ সালে এই মহান ব্যাক্তির সাক্ষাত লাভ করি।  অত্র বিদ্যালয়ে যোগদান করে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তাঁকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ পাই। তিনি আমাকে খুব স্নেহ করতেন। যোগদানের প্রথম দিনই দশম শ্রেণির ক শাখায় আমাকে ইংরেজি পড়ানোর অনুমতি দিয়েছিলেন।  এইতো তাঁর আশির্বাদে আমার পথচলা। প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসা সাদা দাড়িওয়ালা সেই মহান ব্যাক্তি, বারান্দায় দাড়িয়ে এসেম্বলিতে বক্তৃতা দেওয়ার এই মহান ব্যাক্তি, শিক্ষক কমনরুমে আমাদের দিকনির্দেশনা দেওয়ার সেই শিক্ষা সৈনিক, ছাতা হাতে নিয়ে ঝুঁকে চলা সেই সুদর্শন আপোষহীন ব্যক্তিটি আমাদের মাঝে বেঁচে না থাকলেও শিক্ষার প্রদীপ জ্বালাতে যে শিখা নিয়ে এসেছিলেন তা আজও জ্বলছে। আমরা তাঁর বিদেহি আত্মার শান্তি কামনা করছি।
* তৌহিদ চৌধুরী: ছাত্র ও সন্তান।  যুক্তরাজ্য প্রবাসী। 

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top