বাগাতিপাড়ায় দূর্ঘটনা এড়াতে সেই সড়ক প্রশ্বস্তের দাবি এলাকাবাসীর
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় বাঁশবাড়িয়া-জামনগর সড়কে ট্রাকের চাপায় একই পরিবারের তিনজন মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যুর ঘটনায় সড়কটি সরু ও রাস্তা ঘেঁষে থাকা গাছগুলোকে দায়ী করেছেন এলাকাবাসী। তারা ওই সড়কটি প্রশ্বস্ত করার দাবি তুলেছেন।
এলাকাবাসীরা জানান, বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগর-বাঁশবাড়িয়া পাকা রাস্তাটি অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ। বাগাতিপাড়া হয়ে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি দিয়ে রাজশাহী বিভাগীয় শহরের সাথে যোগাযোগের নিকটতম একমাত্র সড়ক এটি। বাঁশবাড়িয়া থেকে জামনগর বাজার পর্যন্ত সড়কটি প্রায় তিন কিলোমিটার। প্রতিনিয়ত এ সড়কে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অসংখ্য যানবাহন ও পথচারিদের যাতায়াত রয়েছে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার ওই পাকা রাস্তাটি অপ্রশ্বস্ত। তাছাড়াও পাশের জমির মালিকরা অনেক স্থানে রাস্তার দু’পাশ কেটে ক্রমান্বয়ে রাস্তা অপ্রসস্ত করেছেন। অন্যদিকে রাস্তা ঘেঁষে লাগানো গাছগুলোর কারনেও সড়কটি সরু হয়ে গেছে। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে সড়কটি। এছাড়াও ওই সড়কের রয়েছে পাঁচটি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক ও একটি স্লুইসগেট। অসাবধানে বাঁক ঘুরতে গিয়েও দূর্ঘটনার শিকার হন অনেকে।
তারা আরও জানান, গত ২০ জানুয়ারি ওই সড়কের বাঁশবাড়িয়া ডিগ্রী কলেজ এলাকায় বালির ট্রাকের চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী একই পরিবারের তিনজন প্রাণ হারান। তারা হলেন, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী এলাকার জুতা-স্যান্ডেল ব্যবসায়ী খালেদ হাসান রব, তাঁর স্ত্রী সোনিয়া বেগম ও একমাত্র ছেলে তাসফি হাসান। তাঁরা কৈচরপাড়া গ্রামে ভাগ্নের বিয়ের দাওয়াত খেয়ে মোটর সাইকেল যোগে বাড়ি ফেরার সময় দূর্ঘটনায় শিকার হয়ে ঘটনা স্থলেই মারা যান। স্থানীয়রা জানালেন, রাস্তাটি সরু ও রাস্তার পাশে থাকা গাছগুলোর কারনে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এদিকে চারমাস পুর্বে গত বছরের ২ অক্টোবর সন্ধ্যায় একই সড়কের কুঠিঘোষপাড়া মোড়ে স্লুইসগেট সংলগ্ন রাস্তায় চলন্ত অবস্থায় চালক মোবাইলে কথা বলতে গিয়ে মোটর সাইকেল দূর্ঘটনায় পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র রনি ও নবম শ্রেণীর ছাত্র কাউছার মারা যায় এবং নবম শ্রেণীর অপর ছাত্র বাঁধন মারাত্বক আহত হয়ে পংগুত্ব বরণ করে। এছাড়া এ রাস্তায় কয়েক বছরে অসংখ্য ব্যক্তি দূর্ঘটনার শিকার হয়েছেন।
বাঁশবাড়িয়া এলাকার গ্রাম্য প্রধান আয়ুব আলী জানান, একদিকে সরু রাস্তা অন্যদিকে অদক্ষ চালকদের কারণে এসব সড়কে যানবাহন ও মোটর সাইকেল দূর্ঘটনায় অকালে তরতাজা প্রাণ হারাচ্ছে।
জামনগর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস জানান, উপজেলা সদর, দয়ারামপুর ক্যান্টনমেন্ট ও বাউয়েট বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে রাজশাহী বিভাগীয় শহরের গুরুত্বপূর্ন এই সড়কটি সরু হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তাছাড়াও রাস্তার গাছগুলোও বেশ মোটা ও বড় হয়ে সড়কটিকে সরু করেছে। অন্যদিকে রাস্তার দু’ধার থেকে পাশের জমি মালিকরা মাটি কেটে নেওয়ায় রাস্তাগুলো অপ্রশ্বস্ত হচ্ছে। জনগুরুত্বপূর্ন সড়কটি তিনি প্রশ্বস্ত করে প্রতিটি বাঁকে ও পার্শ্ব রাস্তায় নির্দেশক দেওয়ার দাবি জানান।
বাগাতিপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান জানান, রাস্তাটির মাটি দখলমুক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ গাছ-পালা অপসারণের পাশাপাশি সড়কটির দুপাশে বৃদ্ধি করলে এবং বাঁকগুলোতে সাবধানতা অবলম্বন করলে দূর্ঘটনা অনেকাংশে হ্রাস পাবে।
সাম্প্রতিক মন্তব্য