logo
news image

পটিয়ায় বিশ্বমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম।  ।  
বিলের বুক চিরে এগিয়ে গেছে গ্রামীণ পথ। চারপাশে ঘন সবুজ গাছপালা আর ধানি জমি। যেন পটে আঁকা কোনো ছবি। আর সেই ছবির ভেতর দাঁড়িয়ে আছে—প্রিন্সিপাল ফজল আহমেদ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। পটিয়ার কুসুমপুরা গ্রামে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা সবার নজর কেড়েছে।
ইংরেজি মাধ্যমের এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অবস্থান চট্টগ্রাম নগর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরের পটিয়ার কুসুমপুরা গ্রামে। নামের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে কলেজ। কিন্তু কলেজ এখনো চালু হয়নি। প্লে থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত ছয়টি শ্রেণি কার্যক্রম চালু আছে এ প্রতিষ্ঠানে।
এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বপ্নদ্রষ্টা স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মামুন উর রশিদ। শহর আর গ্রামের শিক্ষার মধ্যে যে বিস্তর তফাৎ, সেটি ঘুচাতে বাবার নামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন তিনি।
প্লেলে ও নার্সারি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের টিফিনের ছুটি হয়েছে সবে। দল বেঁধে প্রাঙ্গণে খেলায় মেতে উঠেছে শিশুদের দল। কেউ উঠে পড়েছে প্লাস্টিকের ঘোড়ার পিঠে। কেউ ব্যস্ত ফুটবলে। শিশুরা যেন তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনন্দময় পরিবেশ পায় তার জন্যই পড়ালেখার ফাঁকে ফাঁকে খেলাধুলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান কলেজের একাডেমিক পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত জাহাঙ্গীর আলম। টিফিনের ছুটি শেষে তিনি শিশুদের নিয়ে গেলেন শ্রেণিকক্ষে। শিশুর বয়সের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি করা হয়েছে শ্রেণিকক্ষগুলো। প্লে শ্রেণিতে পড়ুয়ারা কোলে-পিঠে করে পড়াচ্ছেন শিক্ষকেরা। অন্যদিকে নার্সারির শিশুরা দল বেঁধে কেউ লিখছে, কেউবা পড়ছে।
স্কুলে কড়া নিয়ম নেই। শিশুরা খেলতে খেলতে পড়ছে। পড়তে পড়তে খেলছে। দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া নাজমুল হাসান, আহসান আদিব ও সুমাইয়া আকতার তাই বলে, ‘স্কুলে আসতে আমাদের অনেক ভালো লাগে। আমরা অনেক কিছু শিখি, অনেক কিছু জানি।’
শিশুদের পড়ালেখা নিয়ে অভিভাবকেরাও খুশি। শারমিন আক্তার ও নার্গিস আক্তার নামের দুই অভিভাবক বলেন, ছেলেমেয়েদের শহরে গিয়ে পড়ানো সম্ভব না তাঁদের পক্ষে। কিন্তু এখন তাঁরা গ্রামেই উন্নত মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাচ্চাদের পড়াতে পারছেন।
কলেজের একাডেমিক পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম তুলে ধরেন কলেজের নানা সুযোগ-সুবিধার কথা। তিনি জানান, এখানে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা সেবা দেওয়া হয়। কিন্তু ফি বেশি নেওয়া হয় না। কুসুমপুরা গ্রামের শিক্ষার্থী হলে সেই ফি কমে এসে দাঁড়ায় ৫০ শতাংশে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর সবাইকে ‘ডিজিটাল অ্যাটেনডেন্স মেশিনে’ লগইন করতে হয়। এর ফলে স্কুল আসার পর এবং বের হওয়ার সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে অভিভাবকদের কাছে চলে যায় তথ্য। যাতায়াতের জন্য আছে অত্যাধুনিক গাড়ির ব্যবস্থাও। শিক্ষকেরাও প্রশিক্ষিত।
কলেজের উদ্যোক্তা স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মামুন উর রশিদ বলেন, ‘গ্রামে শিক্ষার অবস্থা খুবই করুণ। ইংরেজি শিক্ষার অবস্থা তো একেবারেই খারাপ। কিন্তু দেশে বা বিদেশে ভালো কোনো চাকরি করতে চাইলে ইংরেজিতে দক্ষ হতে হবে। তাই গ্রাম ও শহরের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষার ক্ষেত্রে যে ব্যবধান—তা দূর করতে আমি এ উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমার গ্রামের শিক্ষার্থীরা ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে যোগ্য নাগরিক হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারবে।’

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top