logo
news image

শীতবস্ত্র বিতরনে আদিবাসীদের অগ্রাধিকার

কালিদাস রায়।  ।  
নাটোর সদর উপজেলার দরাপপুর গ্রামের দরিদ্র বিধবা গুল বালার বয়স ৮০ বছর। তীব্র কনকনে শীতের রাতে ঠকঠক করে কাপতে কাপতে রাত শেষ হয়ে যায় তার। ঠান্ডায় ঘুমাতে পারেন না তিনি। গত ৭জানুয়ারি নাটোর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার বানুর পাঠানো কম্বল আদিবাসী নেতা কালিদাস রায়ের মাধ্যমে হাতে পেয়ে অনেক খুশি গুল বালা পাহান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাঠানো কম্বল গায়ে জড়িয়ে এখন থেকে আরামে ঘুমাতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সূত্র জানায়, এদেশে ব্যাপক সংখ্যক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী(আদিবাসী) জনগোষ্ঠীর বসবাস। বিভিন্নভাবে পিছিয়ে পড়া, অবহেলিত এই জনগোষ্ঠীর লোকজন উন্নয়ন আর সরকারি নানা সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত থেকেছে দীর্ঘকাল। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর দেশের বসবাসরত বিপুল সংখ্যক আদিবাসীদেরকে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত করতে ইতোমধ্যে নানা কর্মসূচী হাতে নেওয়া হয়েছে। আদিবাসীদের উপর সরকারের বিশেষ দৃষ্টি থাকায় সরকারিভাবে বন্টনকৃত নানা সুযোগ সুবিধায় আদিবাসীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। আর সরকারের এই পদক্ষেপগুলো আদিবাসী জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় পৌছে দিচ্ছেন জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সরকারের নির্দেশে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের হর্তাকর্তারা আদিবাসী নের্তৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে অত্যন্ত সংবেদনশীলতা, আন্তরিকতার সাথে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে আদিবাসহ সমাজের অবহেলিত, পিছিয়েপড়া, ছিন্নমূল মানুষের মাঝে এসব সুযোগ সুবিধা বন্টন-বিতরন করছেন। চলতি বছর গত ৫ জানুয়ারি জেলায় শীতার্ত, অসহায় শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র(কম্বল) বিতরণ শুরু করে জেলা প্রশাসন। কম্বল বিতরনের প্রথম দিনেই শুরুতেই তীব্র শীত উপেক্ষা করে রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলার সদর উপজেলার শংকরভাগ আদিবাসীপল্লীতে কম্বল বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাজ্জাকুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার বানু, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক কালিদাস রায়।
জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ জানান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহরিয়াজ জানান, আদিবাসীদের মত পিছিয়ে পড়া অবহেলিত দরিদ্র জনগোষ্ঠীদের মাঝে হাতে হাতে সরকারিভাবে বরাদ্ধকৃত কম্বল বিতরণ করে আমার খুব ভালো লেগেছে। তিনি আরো বলেন, এটা কিছুই না, আমার কাজই মানুষের সেবা করা। তবে কম্বল বিতরণ প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।
জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলাউদ্দিন জানান, এবার তিনি সরকারের দেওয়া প্রায় ২৫ হাজার কম্বল গ্রহণ করেছেন। এসব কম্বল জেলার বিভিন্ন স্থানে অবহেলিত শীতার্ত মানুষের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে।
জাতীয় আদিবাসী পরিষদ নাটোর জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক কালিদাস রায় জানান, আমি বিস্মিত হয়েছি যখন জীবনে প্রথম বারের মত একজন জেলা প্রশাসককে সরকারি বরাদ্ধকৃত কম্বল বিতরণের প্রথম দিনেই আমাদের শংকরভাগ আদিবাসী পল্লীতে কম্বল বিতরণ করতে এসেছেন। আদিবাসীদের উপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের যে বিশেষ দৃষ্টি রয়েছে এবং অগ্রাধিকারমূলক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতের কথা বলা হচ্ছে এটা তারই প্রমাণ। তবে প্রয়োজনের তুলনাই অপ্রতুল হওয়ায় এখন অনেক আদিবাসী বয়স্ক নর-নারী কম্বল পাননি।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top