logo
news image

চাঁদের অন্ধকার দিকের প্রথম ছবি

অনলাইন ডেস্ক।  ।  
চাঁদের অন্ধকার দিকে একটি রোবটিক যানের সফল অবতরণ করিয়েছে চীন। চাঁদের অদেখা অংশে প্রথমবারের মতো রোবটযান পাঠানো হলো। মানুষবিহীন চাং’ই-৪ নামের ওই রোবটযান দক্ষিণ গোলার্ধের এইটকেন বেসিনে অবতরণ করেছে। এটি চাঁদের ডার্ক সাইড বা অন্ধকার অংশ। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ খবর প্রকাশ করেছে।
চাঁদে প্রাণের রহস্য নিয়ে গবেষণার জন্য এই চন্দ্রযান পাঠানো হয়েছে। এটি চাঁদের ওই অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি ও বায়োলজিক্যাল পরীক্ষা চালাবে।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে একে মহাকাশ গবেষণায় বড় ধরনের পদক্ষেপ বলা হচ্ছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, মহাকাশ গবেষণায় চীনের এই চন্দ্রযানের অবতরণকে মাইলফলক হিসেবে দাবি করছে চীনা কর্তৃপক্ষ। বলা হচ্ছে, আগের যেসব চন্দ্রযান পাঠানো হয়, সেগুলো অবতরণ করেছিলে চাদের পৃথিবীমুখী অংশে। কিন্তু চাং’ই-৪ প্রথম কোনো চন্দ্রযান, যেটি চাঁদের পৃথিবীর বিপরীত দিকের অংশে অবতরণ করেছে, যে অংশকে চাঁদের অন্ধকার অংশ বলেও অভিহিত করা হয়। চাঁদের ওই অংশ পৃথিবী থেকে খুব কম সময় দেখা যায় বলে অন্ধকার অংশ বলা হয়।
চাঁদের ওই পৃষ্ঠের ছবিও পাঠিয়েছে নভোযানটি। ফলে প্রথমবারের মতো চাঁদের অন্ধকার পৃষ্ঠের ছবি দেখল পৃথিবীবাসী।
এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের মুলার্ড, স্পেস সায়েন্স ল্যাবরেটরির অধ্যাপক অ্যান্ড্রু কোওটস বলেন, চাঁদের অন্ধকার অংশ আরও বেশি রুক্ষ ও অনেক বেশি গর্তে ভরা।
বিবিসি অনলাইনের তথ্য অনুযায়ী, চীনের মিশনের আরেকটি লক্ষ্য হচ্ছে চাঁদের অপর পাশে একটি বেতার যোগাযোগের পরিবেশ তৈরি করা এবং সেখানে ভবিষ্যতের টেলিস্কোপ স্থাপনের জন্য একটি ক্ষেত্র তৈরি করা।
এ মিশনের মহাকাশযানটিতে করে তিন কেজি আলুর বীজ আর ফুলের বীজ নেওয়া হয়েছে, যা দিয়ে চাঁদে জীববিজ্ঞানের কিছু পরীক্ষা চালানো হবে। কৃত্রিম পরিবেশ তৈরির ‘চাঁদের ছোট জীবমণ্ডল’ নামের এই নকশা চীনের ২৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনায় করা হয়েছে।
মহাকাশযানটি হচ্ছে চাং’ই-৩–এর পরবর্তী সংস্করণ। ২০১৩ সালে চাঁদে ওই যান পাঠিয়েছিল চীন।
যানটিতে দুটি ক্যামেরা রয়েছে। একটি অংশ তেজস্ক্রিয়তা যাচাই করতে পারে এবং আরেকটি অংশ মহাকাশের স্বল্পমাত্রার তরঙ্গ পর্যালোচনা করতে পারে। চাঁদের ভূপৃষ্ঠের নিচে কী আছে, সেটি পরীক্ষা করে দেখার জন্য একটি রাডার রয়েছে। এমন কিছু যন্ত্র রয়েছে, যেটি খনিজ উপাদান শনাক্ত করে বিশ্লেষণ করতে পারে।
চাঁদ নিয়ে গবেষণায় চীনের বিশাল কর্মসূচির অংশ হচ্ছে এই মিশন। প্রথম এবং দ্বিতীয় চাং–ই মিশনের উদ্দেশ্য ছিল কক্ষপথ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ। তবে তৃতীয় আর চতুর্থ মিশনের লক্ষ্য চাঁদের ভূপৃষ্ঠ। চাং’ই–৫ আর ৬–এর লক্ষ্য হবে চাঁদ থেকে সংগৃহীত পাথর আর মাটির নমুনা ফিরিয়ে এনে গবেষণাগারে জোগান দেওয়া।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top