logo
news image

সাংসদ শহিদুল ইসলাম বকুলের পরিচিতি

নিজস্ব প্রতিবেদক।  ।  
৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী শহিদুল ইসলাম বকুল ১১তম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।  সম্মানিত পাঠকদের কৌতুহল মেটাতে নব-নির্বাচিত এই সংসদ সদস্যের পরিচিতি তুলে ধরা হলো।  
মোঃ শহিদুল ইসলাম বকুল ১৯৭২ সালের ২৪ জুলাই তারিখে বর্তমান বাগাতিপাড়া উপজেলার স্যানালপাড়া গ্রামের এক বনেদি রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পিতা মৃত আজিজুর রহমান স্বাধীনতা পূর্ব আমল থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। এলাকার জীবিত বয়স্ক ব্যক্তিদের সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, তিনি আওয়ামী লীগের স্থানীয় রাজনীতিতে অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন। ১৯৭০ সালের পূর্বপাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে তাঁর আসনের এমপি পদ প্রার্থী বাবু শংকর গোবিন্দ চৌধুরীর পক্ষে ব্যাপক জনমত সৃষ্টি করেন এবং তাঁকে বিজয়ী করেন। লালপুরের বয়োজেষ্ঠ্য নাটোর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার আব্দুর রউফ জানান, ১৯৭০ সালের নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী বাবু শংকর গৌবিন্দ চৌধুরীর প্রচারণা কালে সোনাপুরে আজিজুর রহমানের সাথে তাঁর পরিচয় ঘটে। তিনি তাঁর নির্বাচনে অনেক বড় মাপের সংগঠক ছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। বর্তমানে শহিদুল ইসলাম বকুলের বড় ভাই শরিফ উদ্দিন আওয়ামী লীগের নেতা এবং তিনিও কয়েক বার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। নব নির্বাচিত এমপি বকুল পিতা-মাতার সপ্তম সন্তান। তাঁর লেখাপড়া শুরু হয় গ্রামের বিদ্যাপীঠ থেকেই। তিনি পাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে বাগাতিপাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানে সাফল্যের সাথে মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে বাগাতিপাড়া ডিগ্রী কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক শাখায় ভর্তি হন। বলতে গেলে সেখানেই তাঁর ছাত্র রাজনীতির হাতখড়ি। পারিবারিক ঐতিহ্য অনুসারে লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি মুজিববাদী আদর্শের ছাত্র রাজনীতিতে খুব জোরে সোরেই সম্পৃক্ত হন। বাড়িতে লেখাপড়া আর কলেজে স্বৈরাচারী এরশাদ অপশাসনের বিরুদ্ধে মিছিল-মিটিং আর প্রতিবাদ সভা-সমাবেশের মাধ্যমে নিজেকে তুখোড় ছাত্রনেতা হিসেবে সকলের মনোযোগ আকর্ষন করেন। এই প্রতিষ্ঠান থেকে সাফল্যের সাথে উচ্চ মাধ্যমিক সমাপ্ত করে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আব্দুলপুর সরকারি কলেজে স্নাতকে ভর্তি হন। জনপ্রিয় ছাত্র নেতা হওয়ার সুবাদে সেখানে লেখাপড়া করা অবস্থায় সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের চাপে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেন এবং বিপুল ভোটে এজিএস পদে নির্বাচিত হন। দিন দিন তাঁর ছাত্র রাজনীতির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেতে থাকলে এক পর্যায়ে ১৯৯৩ সালে তিনি বাগাতিপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ লাভ করেন এবং ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত এ পদে বহাল থাকেন। সাধারণ সম্পাদক পদে দক্ষতার কারণে তিনি ১৯৯৭ সালে বাগাতিপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতিও নির্বাচিত হন এবং ২০০০ সাল পর্যন্ত অত্যন্ত দক্ষতার সহিত দায়িত্ব পালন করেন। দিন দিন তাঁর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেতে থাকলে তাঁর ব্যক্তিত্ব উপজেলার গণ্ডি পেরিয়ে তা জেলার রাজনীতিতে ঢেঊ লাগে। শুরু হয় নাটোর জেলার ছাত্র রাজনীতি। তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড জেলার নেতাদের ছাড়িয়ে কেন্দ্রিয় নেতাদের মনোযোগ আকর্ষন করতে সমর্থ হয়। ফলে তিনি জেলার বিভিন্ন ছাত্র নেতাদের টপকিয়ে শক্ত গ্রুপের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ২০০০ সালে নাটোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির পদ লাভ করেন এবং ২০০৪ সাল পর্যন্ত এ পদে বহাল থাকেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ লিয়াকত-বাবু কার্য নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন। নাটোর জেলা ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও তিনি জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ করেন এবং দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম শেষে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ লাভ করেন। বর্তমানে তিনি অত্যান্ত দক্ষতার সাথে সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করে চলেছেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি অত্যান্ত সদাচারি এবং সুবক্তা হিসেবে ব্যাপক পরিচিত এবং অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা। রাজনীতিতে ও ব্যক্তি জীবনে তিনি অসাম্প্রদায়িক চরিত্রের অধিকারী। সামনের দিনগুলিতে সংসদে ব্যাপক ভূমিকা রাখার পাশাপাশি এলাকার সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও দূর্নীতি দমনে তিনি কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে এগিয়ে যাবেন বলে অনেকেই মনে করছেন।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top