logo
news image

নাটোরে প্রায় তিন লাখ শিক্ষার্থী পাচ্ছে পাঠ্য বই

নিজস্ব প্রতিবেদক, নাটোর।  ।  
২০১৯ শিক্ষা বছরের প্রথম দিনে নাটোর জেলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের দুই লাখ ৯৪ হাজার শিক্ষার্থীর হাতে যাবে ৩৬ লাখ ৪১ হাজার নতুন পাঠ্য বই। প্রস্তুতি হিসেবে বর্তমানে জেলা শিক্ষা অফিস এবং সাতটি উপজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে মোট ২ হাজার ৪৯৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান বা তাদের প্রতিনিধিদের নিকট ইতোমধ্যে এসব বই বিতরণ কার্যক্রম এখন শেষের পথে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার ৭টি উপজেলায় বিভিন্ন পর্যায়ের মোট এক হাজার ৯৯৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক লাখ ৯০ হাজার ৩০০ শিক্ষার্থীর জন্য প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠ্য বইয়ের চাহিদা ৯ লাখ কপি। চাহিদার শতভাগ বই ঢাকা থেকে জেলার সকল উপজেলা পর্যায়ে অনেক আগেই পৌঁছেছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে গত ১৭ ডিসেম্বর থেকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা তাদের প্রতিনিধিদের কাছে চাহিদা অনুযায়ী পাঠ্য বই বিতরণ শুরু হয়েছে। এ কার্যক্রম বৃহস্পতিবার (২৭ ডিসেম্বর) শেষ হচ্ছে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় মাদ্রাসা, কারিগরিসহ মোট ৪৯৬টি মাধ্যমিক পর্যায়ের বিদ্যালয়ে আসন্ন শিক্ষা বর্ষে ইবতেদায়ী প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী এবং ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণীর মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক লাখ তিন হাজার ৮৭৫ জন। এসব শিক্ষার্থীর চাহিদা অনুযায়ী ২৭ লাখ ৪১ হাজার ৩৩২ কপি পাঠ্য বইয়ের সমূদয় বই অনেক আগেই ঢাকা থেকে নাটোরে পৌঁছে যায়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে সংশ্লি¬ষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রধানের কাছে হস্তান্তর প্রক্রিয়া বর্তমানে শেষের পথে। তবে ভোকেশনাল পর্যায়ে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পাঠ্য বই জেলা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে বিতরণ কার্যক্রম ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।
জেলা শিক্ষা অফিস থেকে প্রতিষ্ঠানের বই সংগ্রহকালে কথা হয় নাটোর সদর উপজেলার দিয়ারভিটা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. শফিকুল ইসলাম এবং সিংড়ার বড় সাঁঐল টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মোশাররফ হোসেনের সাথে। তাঁরাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও তাদের প্রতিনিধিরা বই বিতরণ ব্যবস্থাপনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।
নাটোর সদর উপজেলার শংকরভাগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শামীমা নার্গিস জানান, স্কুলে শিক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী সকল পাঠ্য বই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে সংগ্রহ করেছি গত সপ্তাহে। আশা করছি নববর্ষের প্রথম দিনে স্কুলে উপস্থিত সকল শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দিতে পারবো।
জেলা শিক্ষা অফিসার রমজান আলী আকন্দ বলেন, আগামী ১ জানুয়ারি ২০১৯ বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর পাশাপাশি অভিভাবক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সমাবেশের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষার্থীদের হাতে বই হস্তান্তর করা হবে। একই আনুষ্ঠানিকতা ও প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এরশাদ উদ্দিন আহমেদ।
নাটোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আসমাউল হুসনা বলেন, মধ্য নভেম্বরে জেএসসি পরীক্ষা শেষ করে অনেকদিন ধরে নতুন বইয়ের জন্য অপেক্ষায় আছি। এক সাথে অনেকগুলো নতুন ক্লাসের বই আর তার গন্ধ অনন্য। বছরের প্রথম দিনে বইয়ের ব্যবস্থা করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানান নাটোর সরকারি বালক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী নাঈম হোসেন।
নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ড. মো. রাজ্জাকুল ইসলাম জানান, গত বুধবার জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে পাঠ্য পুস্তক বিতরণ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি নাটোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে যৌথভাবে মাধ্যমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বই তুলে দেয়া হবে।
নাটোরের জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ বলেন, সরকার একই সাথে সব বই একই দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিচ্ছে। এটি একটি অনন্য উদ্যোগ। শিক্ষার্থীরা যথাযথভাবে পড়াশুনা করে যোগ্য নাগরিক হয়ে গড়ে উঠলে সরকারের এ উদ্যোগ অর্থবহ হবে।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top