পাহাড়ের প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে সেনা মোতায়েন-সিইসি
নিজস্ব প্রতিবেদক,রাঙামাটি। ।
অবাধ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে সেনাবাহিনী মোতায়েন রাখা হবে মন্তব্য করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার একেএম নুরুল হুদা বলেছেন, পাহাড়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্টানে কোনো ধরনের ঝুঁকি নেই।
মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) রাঙামাটি সফরে এসে তিন পার্বত্য জেলার সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, আনসার বাহিনীসহ রিটার্নিং কর্মকর্তাগণসহ সবকটি থানার অফিসার ইনচার্জ ও নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময়কালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার একথা বলেন। রাঙামাটি জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদের সঞ্চালনায় উক্ত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি বিশেষায়িত এলাকা, এই এলাকার ভৌগলিক অবস্থান ও স্থানীয় জনসাধারনের প্রতি সম্মান রেখে আগামী ৩০শে ডিসেম্বর একটি অবাধ ও সুষ্ট নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। জনগনের অধিকার প্রতিষ্টায় উক্ত নির্বাচনে সম্পূর্ন নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ থেকে দায়িত্ব পালন করার জন্য পাহাড়ের সকল স্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে সারাদেশে যেভাবে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চলছে, পাহাড়েও একইভাবে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চলবে মন্তব্য করে প্রধান নির্বাচন কশিনার বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে সেনা মোতায়েন, প্রয়োজন অনুসারে হেলিকপ্টার ব্যবহারসহ মোবাইল নেটওয়ার্ক চালু রাখা হবে।
এদিকে, সোমবার ঢাকায় নির্বাচন কমিশনার মাহাবুব তালুকদার কর্তৃক দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানে এখনো পর্যন্ত লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি হয়নি মর্মে যে বক্তব্য প্রদান করা হয়েছিলো, বিষয়টি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা বলেন, সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে একজন স্বাধীন মতপ্রকাশ করতেই পারে। এটা একেবারেই অসত্য কথা। দেশে এখন সুষ্ঠ নির্বাচনী পরিবেশ বিরাজ করছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
রাঙামাটিতে নৌকা প্রতিকের প্রার্থী কর্তৃক উত্থাপিত অভিযোগে বিগত নির্বাচনে পার্বত্য জেলা রাঙামাটিস্থ ২৯৯ আসনে ৫৩টি ভোট কেন্দ্রে ভোট কারচুপি করা হয়েছে, এবার এসবের বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ নিবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে জনাব নুরুল হুদা বলেন বিগত ২০১৪ সালের নির্বাচন সেরকম অংশগ্রহণমূলক হয়নি। তবে এবারে আমাকে সকলেই আশ্বস্থ করেছে এবং সেনাবাহিনী-বিজিবি এরা প্রত্যেকে গ্রামে গ্রামে ঘরে ঘরে গিয়ে জনসাধারণকে আশ্বস্থ করার চেষ্ঠা করছে যে, আপনারা ভোটকেন্দ্রে যাবেন এবং নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারবেন, আমরা সেই চেষ্ঠাই করছি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, সকলের অংশগ্রহণে একটি সুন্দর অংশগ্রহণমূলক নির্র্বাচন উপহার দিতে পারবো আমরা। এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনা বলেন, সেনাবাহিনীকে ম্যাজিষ্ট্রেসি ক্ষমতা প্রদান করা নাহলেও যেখানেই ঝামেলা সৃষ্টি হবে সেখানে তারা উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবে। এই ক্ষমতা তাদের দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার রাঙামাটিস্থ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি সাংস্কৃতিক মিলনায়তনে নির্বাচন কমিশনার অবঃ বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শাহাদাৎ হোসেন, নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল মান্নান, চট্টগ্রাম পুলিশের ডিআইজি গোলাম ফারুকসহ তিন পার্বত্য জেলার সেনাবাহিনীর তিনটি রিজিয়নের তিনজন বিগ্রেড কমান্ডার, তিন জেলা প্রশাসক, দুইজন সেক্টর কমান্ডার, তিন পুলিশ সুপারসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে কর্মরত সকল উপজেলার নির্বাচনী কর্মকর্তা, ইউএনওসহ থানাগুলোর অফিসার ইনচার্জরা এ মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন।
সাম্প্রতিক মন্তব্য