logo
news image

ভোটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের কিছু তথ্য

প্রাপ্তি প্রসঙ্গ ডেস্ক।  ।  
বিশ্বের গণতান্ত্রিক ভোটাভুটির ইতিহাসে এক ভোটে জয়-পরাজয়ের অনেক ঘটনাই ঘটেছে। আবার কখনো কখনো দেখা গেছে, কোনো নির্বাচনী আসনে দুই প্রার্থীই সমান ভোট পেয়েছেন! নির্বাচনের এমন কিছু হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের কিছু তথ্য:
১. ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া রাজ্যে হাউস অব ডেলিগেটস নির্বাচনে প্রথমে মাত্র এক ভোটে জয়ী হয়েছিলেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী শেলি সাইমন্ডস। পরে নির্বাচনের এই ফলাফল আদালতে গড়ায়। তখন আইনসভার অচলাবস্থা মেটাতে ভোটে জয়ী হলেও রিপাবলিকান প্রার্থীর কাছে হার স্বীকার করে নেন শেলি। এতে হাউস অব ডেলিগেটসে অল্প ব্যবধানে এগিয়ে যায় রিপাবলিকানরা।
২. ২০০৮ সালে ভারতের রাজস্থানে রাজ্যসভার নির্বাচনে একটি আসনে মাত্র এক ভোটে হেরে গিয়েছিলেন সি পি জোশি নামের এক প্রার্থী। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রকাশ, চূড়ান্ত ফলাফলে সি পি জোশির প্রতিদ্বন্দ্বী কল্যাণ সিং পেয়েছিলেন ৬২ হাজার ২১৬টি ভোট। জোশির ভাগ্যে জুটেছিল ৬২ হাজার ২১৫টি ভোট। পরে জানা গিয়েছিল, জোশির মা ও স্ত্রী নাকি ভোট দিতে পারেননি! বুঝুন এবার, একটি ভোটের কত দাম।
৩. ১৯১০ সালে নিউইয়র্কের কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট বাফেলোর নির্বাচনে মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়েছিল। ওই নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদলীয় প্রার্থী চার্লস বি স্মিথ মাত্র এক ভোটে হারিয়েছিলেন রিপাবলিকান ডি আলভা এস আলেকজান্ডারকে। স্মিথ পেয়েছিলেন ২০ হাজার ৬৮৫টি ভোট। অন্যদিকে, আলেকজান্ডার পেয়েছিলেন ২০ হাজার ৬৮৪টি ভোট। পরে ভোটের এই ফলাফল পুনর্গণনা করা হয়। এতে স্মিথ আরও কিছু ব্যবধানে এগিয়ে গিয়েছিলেন।
৪. যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট নির্বাচনেও ১৯১০ সালে এমন ঘটনা ঘটেছিল। দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের খবরে বলা হয়েছে, ওই বছরের জানুয়ারিতে দেশটির এক্সিটার শহরের পার্লামেন্ট আসনে নির্বাচন হয়েছিল। প্রথমবারের ভোট গণনার পর কনজারভেটিভ পার্টির হেনরি ডিউক ৪ ভোটে হেরে গিয়েছিলেন লিবারেল হ্যারল্ড সেইন্ট মোরের কাছে। কিন্তু ভোট পুনর্গণনার পর ডিউক ১ ভোটে জিতে যান। এর ফলে হাউস অব কমন্সে নিজের আসন ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছিলেন হেনরি ডিউক। তিনি পেয়েছিলেন ৪ হাজার ৭৭৭ ভোট। অন্যদিকে, মোর পেয়েছিলেন ৪ হাজার ৭৭৬টি ভোট।
৫. ২০১৩ সালে ফিলিপাইনের ওরিয়েন্টাল মিনদোরো প্রদেশে মেয়র নির্বাচন হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ফিলিপাইন স্টারের খবরে বলা হয়েছে, নির্বাচনে দুই দলের দুই প্রার্থী সমান সমান ভোট পেয়েছিলেন। নাসিওনালিস্তা পার্টি–সমর্থিত প্রার্থী সালভাদর পি ও লিবারেল পার্টির মারভিক ফেরারেন—দুজনেরই প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ২৩৬। মজার বিষয় হলো, ওই অবস্থায় ধাতব মুদ্রা দিয়ে টস করে জয়ী নির্বাচন করা হয়েছিল! জিতে গিয়েছিলেন মারভিক। পরে অবশ্য এ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক হয়েছিল।
৬. ২০০০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সবচেয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখেছিল মার্কিন জনগণ। ওই বছর রিপাবলিকান পার্টি থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন জর্জ ডব্লিউ বুশ জুনিয়র এবং ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে ছিলেন আল গোর। নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট আল গোর পপুলার ভোটে জিতলেও ইলেক্টোরাল ভোটে হেরে গিয়েছিলেন। নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, সবচেয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল ফ্লোরিডা রাজ্যে। সেখানকার স্থানীয় নির্বাচনে মোট ভোটের ১ শতাংশেরও কম ব্যবধানে আল গোরকে হারিয়েছিলেন বুশ। সংখ্যার হিসাবে ব্যবধান ছিল ৫৩৭ ভোট। কিন্তু শতাংশের হিসাবে তা ছিল ১-এরও কম।
৭. কানাডার কুইবেক প্রদেশের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি নির্বাচনে ১০ বছরের ব্যবধানে দুবার দুই পক্ষের ভোটে টাই হয়েছিল। প্রথম ঘটনাটি ঘটে ১৯৯৪ সালে। সেবার কুইবেক প্রদেশের একটি আসনে প্রধান দুই দলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীই ১৬ হাজার ৫৩৬টি করে ভোট পেয়েছিলেন। সিবিসি নিউজের খবরে বলা হয়েছে, ২০০৩ সালে আরেক আসনে ওই দুই দলের প্রার্থীর মধ্যেই ফের টাই হয়। দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সেবার ১১ হাজার ৮৫২টি করে ভোট পেয়েছিলেন। দুই ঘটনায়ই পুনর্বার ভোট নিয়ে জটিলতার অবসান হয়েছিল।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top