logo
news image

বিএনপিকে নির্বাচনকালীন অক্সিজেন দিতে দেশে ফিরছেন জোবায়দা

নিউজ ডেস্ক: দুর্নীতি মামলায় সহসাই মুক্তি মিলছে না বিএনপির কারান্তরীণ চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার। এ বিষয়ে মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছেন বিএনপি নেতারা। দু’টি পৃথক মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণও প্রায় অনিশ্চিত। অন্যদিকে দেশব্যাপী নির্বাচনী আমেজ সৃষ্টি হওয়ায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের চিন্তা-ভাবনা শুরু করে দিয়েছে বিএনপি।

এরইমধ্যে গণমাধ্যমে বিএনপির তিন’শ আসনের প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ পেয়েছে। তাই খালেদা জিয়ার বিকল্প চিন্তা করে তারেক রহমানের বিশেষ নির্দেশে নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন মির্জা ফখরুলরা। দলীয় একাধিক সূত্রের বরাতে তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। জানা গেছে, নির্বাচনে মির্জা ফখরুলদের তত্ত্বাবধান এবং নির্বাচন মনিটরিং করতে তারেক রহমানের আদেশে শিগগিরই দেশে ফিরছেন জোবায়দা রহমান। তিনি মূলত বিএনপি ও তারেক রহমানের মধ্যে মাধ্যম হিসেবে কাজ করতেই দেশে আসছেন বলেও সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এদিকে নির্বাচনের পূর্বে জোবায়দা রহমানের প্রত্যাবর্তনকে গণতন্ত্র ও রাজনীতির জন্য ইতিবাচক হিসেবে উল্লেখ করলেও দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত জোবায়দা রহমান মির্জা ফখরুলদের সহযোগিতা পাবেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন।

যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নাসির আহমেদ শাহিনের বরাতে জানা যায়, পৃথক দু’টি দুর্নীতির মামলায় সাজা হওয়ায় তারেক রহমান অনেকটাই নিশ্চিত হয়েছেন যে, এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাটা খালেদা জিয়ার পক্ষে অসম্ভব। এদিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি নিবন্ধন ঝুঁকির মুখে পড়বে। এছাড়া বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে তারেক রহমান বুঝতে পেরেছেন যে, ২০১৪ সালের নির্বাচনের মতো এবার বিএনপি-জামায়াত কর্মীরা সহিংসতায় সায় দেবে না। এছাড়া দেশব্যাপী যেভাবে নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আমেজ সৃষ্টি হয়েছে, তাতে নির্বাচন বাতিলের দাবিতে আন্দোলন, সহিংসতা করে কারো সমর্থন পাওয়া যাবে না। এদিকে বিএনপির একাধিক বন্ধুরাষ্ট্র বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার পরামর্শ দিয়েছে। তাই সবকিছু বিবেচনা করে বিএনপিকে গোপনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার চূড়ান্ত নির্দেশ দিয়েছেন তারেক রহমান। নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে সমন্বয় সৃষ্টির জন্য তিনি স্ত্রী জোবায়দা রহমানকে বাংলাদেশ সফর করার নির্দেশ দিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, অতি শিগগিরই জোবায়দা রহমান বাংলাদেশ সফর করবেন এবং নির্বাচন পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করবেন।

এদিকে জোবায়দা রহমানের নির্বাচনকালীন সফর নিয়ে বিএনপিতে বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে বলে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে। সূত্রটি জানায়, নির্বাচনের পূর্বে জোবায়দা রহমানের সফর বিএনপির জন্য খুব বেশি লাভজনক হবে না বলে মনে করছেন দলটির একাধিক সিনিয়র নেতা। কারণ, তারেক রহমানের বাইরে জোবায়দার নিজস্ব কোন রাজনৈতিক পরিচয় নেই। তিনি রাজনীতি সম্পর্কে ততটা সচেতন নন। তিনি বিএনপির হাল ধরলে দলটির অবস্থা লেজেগোবরে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মির্জা ফখরুলরা তাকে খালেদা জিয়া বা তারেক রহমানের মতো সম্মান নাও করতে পারেন।

এদিকে জোবায়দা রহমান নির্বাচনের পূর্বে দেশে আসলে বিএনপির তৃণমূল কিছুটা উজ্জীবিত হলেও মির্জা ফখরুলরা তাকে মনে-প্রাণে সহযোগিতা নাও করতে পরে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, জোবায়দা রহমান বিএনপির রাজনীতিতে জনপ্রিয় নন। তিনি কখনই খালেদা জিয়া বা তারেক রহমানের বিকল্প হতে পারবেন না। এছাড়া মির্জা ফখরুলরা এতদিন ধরে নির্বাচনের প্রেক্ষাপট তৈরি করে জোবায়দার হাতে দলের ক্ষমতা তুলে দেবেন না, এটি মোটামুটি নিশ্চিত করে বলা যায়। আমি শঙ্কিত এই ভেবে যে, জোবায়দা যে আশায় বিএনপির দায়িত্ব নিতে দেশে আসছেন সহজে সেই আশা পূরণ হবার নয়। রাজনীতিতে ফেসভ্যালু জরুরি। যেটি জোবায়দা রহমানের নেই। মৃতপ্রায় বিএনপিকে অক্সিজেন দেওয়ার চেষ্টায় জোবায়দা রহমান খুব বেশি সফল হবেন না বলেই আমার মনে হয়।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top