logo
news image

রাজনীতিতে ক্রিকেট তারকারা

প্রাপ্তি প্রসঙ্গ ডেস্ক।  ।  
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করবেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি ও অন্য দুই সংস্করণের নেতা সাকিব। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, তাঁরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহের জন্য রোববার (১১ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় ধানমন্ডি কার্যালয়ে আসবেন। শনিবার দুপুরে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা আবু নাসের এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন। সাকিব নিজেই তাঁর নির্বাচন করার আগ্রহের কথা জানিয়ে বলেছেন, মাগুরা-১ আসনের জন্য তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দেবেন।
ক্রিকেটারদের রাজনীতিতে যোগ দেওয়া নতুন কিছু নয়। ইংলিশ ক্রিকেটারদের (বিশেষ করে ‘ভদ্রলোক’) তো এক সময় হরহামেশাই দেখা যেত রাজনীতিতে। সিবি ফ্রাইয়ের মতো কিংবদন্তিও আছেন এ তালিকায়। তবে উপমহাদেশে এ চর্চা একটু কম। বিশেষ করে তারকা ক্রিকেটারদের মধ্যে রাজনীতিতে সাফল্য খুব কমই পেয়েছেন। বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খান এ ক্ষেত্রে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। প্রথম কোনো ক্রিকেটার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন ইমরান।
মনসুর আলী খান পতৌদি
সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক পতৌদিকে ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা অধিনায়ক বলে ভাবা হয়। মনসুর আলী ১৯৯১ সালে কংগ্রেসের অধীনে ভোপাল থেকে সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে হেরে যাওয়ায় রাজনীতির ক্যারিয়ার সেখানেই শেষ হয় নবাব সাহেবের।
নভজোৎ সিং সিধু
ইদানীং টিভিতেই বেশি চমক দেখালেও সাবেক ভারতীয় ওপেনারের ক্যারিয়ারটা কিন্তু জমজমাট ছিল। ১৯ বছরের ক্যারিয়ার শেষে ২০০৪ সালে বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপির হয়ে অমৃতসর থেকে সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয় পেয়েছিলেন সিধু। ২০১৬ সালে পাঞ্জাব থেকে রাজ্যসভায় তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হয় কিন্তু সিধু সেবার দল থেকে পদত্যাগ করেন। ২০১৭ সালে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে অমৃতসর থেকেই আবার নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন সিধু।
বিনোদ কাম্বলি
শচীন টেন্ডুলকারের স্কুলবন্ধুর ক্রিকেট ক্যারিয়ার অকালেই শেষ হয়েছিল। অভিনয়ে কিছুদিন সময় পার করে পরে রাজনীতিকেই আশ্রয় মেনেছেন কাম্বলি। লোক ভারতীতে যোগ দেওয়া কাম্বলিকে দলের সহসভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ২০০৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনে লোক ভারতীর হয়ে মুম্বাইয়ে প্রার্থী হয়েছিলেন কাম্বলি। ক্রিকেট ক্যারিয়ারের মতোই রাজনীতিতেও অনুজ্জ্বল কাম্বলি নির্বাচনে হেরেছিলেন।
অর্জুনা রানাতুঙ্গা
শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটকে বদলে দিয়েছেন বিশ্বকাপ জেতা এই অধিনায়ক। অবসর নেওয়ার পর শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের অনেক পদেই দেখা গেছে তাঁকে। রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ ২০০১ সালে। শ্রীলঙ্কান ফ্রিডম পার্টিতে যোগ দিয়ে ২০০১ সালের সংসদীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন রানাতুঙ্গা। এর পর থেকেই সক্রিয় রাজনীতিক হিসেবেই ব্যস্ত । সাবেক শিল্প, পর্যটন ও বিনিয়োগ প্রচারের উপমন্ত্রী হিসেবে কাজ করা রানাতুঙ্গা বর্তমানে বন্দরমন্ত্রী।
সনাথ জয়াসুরিয়া
ওয়ানডে ক্রিকেটের ইনিংসের শুরুটা বদলে দেওয়া সনাথ জয়াসুরিয়া এত দিন অনন্য ছিলেন। সাকিব ও মাশরাফির আগে তিনিই একমাত্র ক্রিকেটার যিনি খেলোয়াড়ি জীবনেই সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নিয়েছেন। ২০১০ সালেই রাজনীতিতে এসেছেন জয়াসুরিয়া। মাতারা জেলা থেকে প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন মাতারা হারিকেন। মাহিন্দা রাজাপক্ষের সরকারের অধীনে উপমন্ত্রী ছিলেন জয়াসুরিয়া।
মোহাম্মদ আজহারউদ্দীন
ম্যাচ পাতানোর অভিযোগে ২০০০ সালে নিষিদ্ধ আজহার ৪৭ টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ২০০৯ সালে জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন আজহারউদ্দীন। উত্তর প্রদেশের মোরাদাবাদ থেকে সাধারণ নির্বাচনে অংশ নিয়ে সে বছরই সাংসদ হয়েছে আজহারউদ্দীন।
নাইমুর রহমান
বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টের অধিনায়ক তাঁর অফ স্পিন বোলিংয়ের পারফরম্যান্সে ইতিহাসেই জায়গা করে নিয়েছেন। ২০০২ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শেষ ছাপ রাখা নাইমুর সংগঠক হিসেবে পরবর্তী সময় বাংলাদেশের ক্রিকেটে ভূমিকা রেখেছেন। ২০১৪ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে মানিকগঞ্জ-১ আসন থেকে প্রার্থী হন নাইমুর। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে ক্রিকেটার হিসেবে আরেকটি প্রথমের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।
ইমরান খান
দেশকে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছেন সেই ১৯৯২ সালে। দুই যুগ পার হওয়ার পরও এর সঙ্গে তুলনীয় সাফল্য পায়নি পাকিস্তান ক্রিকেট। অবসরের পর দেশকেও অনুরূপ সাফল্য এনে দিতে চেষ্টা করছেন ইমরান খান। ১৯৯৬ সালে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ সৃষ্টি করার পর থেকেই ক্রিকেটার সত্তাকে ভুলে গেছেন ইমরান। প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যর্থ হলেও হাল ছাড়েননি। পাকিস্তানের রাজনীতিতে ধীরে ধীরে নিজের ভাবমূর্তি গড়েছেন। অবশেষে ২২ বছরের চেষ্টার পর ২০১৮ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন ইমরান।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top