logo
news image

চট্টগ্রামে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জনসভা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম।  ।  
গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, আমাদের সাত দফা দাবির বিষয়ে গণরায় পেয়েছি। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। জনগণ এক হলে সব সম্ভব। যেমনভাবে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। আমাদের সাত দফা দাবিও আদায় করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ।
শনিবার (২৭ অক্টোবর) বিকালে চট্টগ্রাম নগরীর নুর আহমেদ সড়কের নগর বিএনপি কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. কামাল হোসেন বলেন, জনগণ এক হয়ে চাইলে কোনো কিছু অসম্ভব নয়। আজ চট্টগ্রামে গণরায় পেয়েছি, সেদিন সিলেটে পেয়েছি, তারপর রাজশাহী ও ঢাকায় সমাবেশ করব।
যদিও সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে ঐক্যফ্রন্টের এ সাত দফা দাবি নাকচ করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর কাদের বলেছেন, ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবি মানা হবে না।
কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি চাওয়ার কী আছে? আর কত চাইব। মুক্তি চাইতে হবে কেন? মুক্তি দিতে হবে। যদি অবিলম্বে মুক্তি দেয়া না হয়- আর তার কিছু হয় তাহলে এর জন্য জবাব দিতে হবে। আমরা জবাব চাইব।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট চট্টগ্রামের অন্যতম সমন্বয়ক নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাৎ হেসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত আছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামী আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, আবদুল্লাহ আল নোমানসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
দুপুরে সমাবেশ শুরু হলেও সকাল থেকেই সমাবেশস্থল নুর আহমেদ সড়কে আসতে থাকেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
এদিকে সমাবেশকে ঘিরে নগরীতে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়া হয়। ভোর থেকে পুলিশের একাধিক টিম নুর আহমেদ সড়ক, কাজীর দেউড়ি এলাকায় অবস্থান করছে। সমাবেশের চারপাশে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো মহসীন জানান, সমাবেশ থেকে যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ও নাশকতা করতে না পারে সে জন্যই পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি আদায়ে নবগঠিত জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের চট্টগ্রামে এটি দ্বিতীয় সমাবেশ। এর আগে ২৪ অক্টোবর এই জোট সিলেটে সমাবেশ করে।
নবগঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা
১. অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, আলোচনা করে নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।
২. গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।
৩. বাক, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সকল রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা এবং নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।
৪. কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সাংবাদিকদের আন্দোলন এবং সামাজিক গণমাধ্যমে স্বাধীন মত প্রকাশের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির নিশ্চয়তা দিতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সকল কালো আইন বাতিল করতে হবে।
৫. নির্বাচনের ১০ দিন পূর্ব থেকে নির্বাচনের পর সরকার গঠন পর্য্ন্ত বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োজিত ও নিয়ন্ত্রণের পূর্ণ ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত করতে হবে।
৬. নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে ভোট কেন্দ্র, পোলিং বুথ, ভোট গণনাস্থল ও কন্ট্রোল রুমে তাদের প্রবেশের ওপর ওপর কোনো ধরনের বিধি-নিষেধ আরোপ না করা এবং নির্বাচনকালীন সময়ে গণমাধ্যমকর্মীদের উপর যে কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করতে হবে।
৭. তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা এবং নতুন কোনো মামলা না দেওয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে।


সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top