logo
news image

ন্যাশনাল মিডিয়া সার্ভেতে প্রথম আলো শীর্ষে

প্রাপ্তি প্রসঙ্গ ডেস্ক।  ।  
বাংলাদেশের সব দৈনিকের মধ্যে প্রথম আলোর পাঠকসংখ্যা সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশের সব দৈনিকের মধ্যে প্রথম আলোর পাঠকসংখ্যা সবচেয়ে বেশি।বাংলাদেশের সব দৈনিকের মধ্যে প্রথম আলোর পাঠকসংখ্যা সবচেয়ে বেশি। প্রতিদিন প্রথম আলো ছাপা পত্রিকা পাঠ করেন প্রায় ৬৬ লাখ পাঠক। বহুজাতিক গবেষণা ও জরিপ প্রতিষ্ঠান কান্তার এমআরবি পরিচালিত ন্যাশনাল মিডিয়া সার্ভে (এনএমএস বা জাতীয় প্রচারমাধ্যম জরিপ) ২০১৮–তে এই তথ্য উঠে এসেছে।
বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমের পাঠকসংখ্যা, প্রভাব ও বিস্তৃতি ইত্যাদি নিয়ে ১৯৯৭ সাল থেকে প্রতি দুই বছর পর কান্তার এমআরবি এই জরিপ পরিচালনা করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯৭ ও ১৯৯৯ সালে ‘ঢাকা মিডিয়া সার্ভে’ নামে জরিপ শুরু করে। পরে ২০০২ সাল থেকে নতুন করে ‘ন্যাশনাল মিডিয়া সার্ভে’ নামে নিয়মিতভাবে এই জরিপ করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। লন্ডনভিত্তিক জরিপ প্রতিষ্ঠান কান্তার এমআরবির উপস্থিতি আছে ৬৭টি দেশে। এটি বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় মিডিয়া এজেন্সি নেটওয়ার্ক ডব্লিউপিপির একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান।
দেশে ১৫ বছর বয়সী ও তদূর্ধ্ব মানুষের সংখ্যা মোট ১১ কোটি ৪৪ লাখ ২৩ হাজার। এই জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি হিসেবে ১৬ হাজার ১৮৩ জন জরিপে সরাসরি অংশ নেন। পত্রিকা ছাড়াও টেলিভিশন, ইন্টারনেট, রেডিও ও বিলবোর্ডের বিস্তৃতি জরিপে অন্তর্ভুক্ত ছিল। পাশাপাশি মোবাইল ফোনে আর্থিক লেনদেন সেবা, মোবাইল ফোন ব্যবহারসহ নানাবিধ পণ্য ও সেবার গ্রাহক বিশ্লেষণী তথ্য এই জরিপের মাধ্যমে উঠে এসেছে।
ন্যাশনাল মিডিয়া সার্ভের গুরুত্ব সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার বলেন, এনএমএসের মতো জরিপের ফলাফল কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার গ্রাহকের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক তৈরিতে সহায়তা করে। কান্তার এমআরবি সারা পৃথিবীতে সমাদৃত প্রতিষ্ঠান। তাদের জরিপের সুনাম ও বিশ্বাসযোগ্যতা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি যত দূর দেখেছি, এনএমএসে সামগ্রিক তথ্য যথেষ্ট রয়েছে। তবে সেসব তথ্য ক্যাটাগরি অনুযায়ী বিস্তারিত থাকলে আরও ভালো হতো, এখানে হয়তো আরও কাজের সুযোগ আছে।’
এনএমএস–২০১৮ অনুযায়ী সারা দেশে ১৫ বছর বয়সী ও তদূর্ধ্ব মানুষের মধ্যে শতকরা ২৩ দশমিক ৭ ভাগ নিয়মিত পত্রিকা পড়ে থাকেন। সারা দেশে উল্লেখ করার মতো ১৮০টি পত্রিকা ও ২০০টি ম্যাগাজিন রয়েছে। ২০১৬ সালের এনএমএস অনুযায়ী রোজ প্রথম আলোর পাঠক ছিল প্রায় ৫৩ লাখ। ২০১৮ সালে প্রথম আলোর পাঠক ১৩ লাখ বেড়ে হয়েছে প্রায় ৬৬ লাখ। উল্লেখ্য, আগামী ৪ নভেম্বর প্রকাশনার ২০ বছর পূর্তি করতে যাচ্ছে দেশের সর্বাধিক পঠিত দৈনিক প্রথম আলো।
গুগল অ্যানালিটিকসের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণ পড়েন আরও প্রায় ১০ লাখ পাঠক। প্রথম আলো অনলাইন (www.prothomalo.com) সব বাংলাদেশি ওয়েবসাইটের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়। অ্যালেক্সার তথ্য অনুযায়ী, বাংলা ভাষায় পৃথিবীর এক নম্বর ওয়েবসাইট প্রথম আলো। বিশ্বের ২০০ টির বেশি দেশ ও অঞ্চল থেকে পাঠকেরা অনলাইনে প্রথম আলো পড়েন। এ ছাড়া ফেসবুকে প্রথম আলোর পেজে (www.facebook.com/DailyProthomAlo) ১ কোটি ৩৯ লাখের বেশি অনুসারী রয়েছে। অনুসারীর সংখ্যার বিচারে প্রথম আলো বিশ্বের সব গণমাধ্যমের মধ্যে ৭৩ তম অবস্থানে রয়েছে।
ছাপা পত্রিকায় ৬৬ লাখ ও অনলাইনে ১০ লাখ মিলিয়ে প্রতিদিন প্রথম আলো পড়ছেন মোট ৭৬ লাখ পাঠক। দুই মাধ্যমে মোট ও আলাদাভাবে প্রথম আলোর পাঠকসংখ্যা বাংলাদেশের সব পত্রিকা ও ওয়েবসাইটের মধ্যে শীর্ষে।
এনএমএস সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ব্র্যান্ড তৈরির জন্য সঠিক মানুষের কাছে সঠিক মাধ্যমে পৌঁছানো এবং তাদের সঙ্গে একটা সম্পর্ক ধরে রাখা খুব জরুরি। এনএমএসের মতো জরিপ ও গবেষণাগুলো যোগাযোগ ও বিপণনের সিদ্ধান্তগুলো নিতে সহায়তা করে। আমার জানামতে বাংলাদেশে কান্তার এমআরবির এনএমএসই সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য গণমাধ্যম জরিপ। অনেক বছর ধরেই ব্র্যান্ডগুলো এনএমএসকে ভিত্তি ধরেই কাজ করছে।’
এনএমএস ২০১৮ অনুযায়ী, দেশের ১৫ বছর বয়সী ও তদূর্ধ্ব মানুষের মধ্যে শতকরা ৮৫ দশমিক ৯ ভাগ নিয়মিত টেলিভিশন দেখে থাকেন। অন্যদিকে ইন্টারনেটের বিস্তার ঘটছে সবচেয়ে দ্রুত। দেশের শতকরা ২৬ দশমিক ২ ভাগ মানুষ এখন নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। আর রেডিও শোনেন শতকরা ১৪ দশমিক ৯ ভাগ মানুষ।
জরিপটি মাল্টি-স্টেজ স্ট্র্যাটিফাইড ক্লাস্টার স্যামপ্লিং পদ্ধতিতে করা হয়েছে। জনসংখ্যার ঘনত্ব ও গণমাধ্যম ব্যবহারের ধরন বিবেচনা করে জরিপের নমুনায় শহর এলাকার মানুষের উপস্থিতি বেশি থাকলেও গ্রামাঞ্চল থেকে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে উপযুক্তসংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণ ছিল। জরিপের নমুনায় পুরুষ-মহিলার অংশগ্রহণ ছিল সমান। দেশের সব বিভাগীয় শহর, বাছাই করা পৌর এলাকা ও গ্রামের ১৮৪টি স্থানে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়। এর মধ্যে তথ্য সংগ্রহের কেন্দ্র ছিল ১ হাজার ৬৫০টি।
গ্রে অ্যাডভারটাইজিং ঢাকা–এর ম্যানেজিং পার্টনার ও ক্রিয়েটিভ চিফ গাউসুল আলম বলেন, ‘বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যম ঠিক করতে, বিশেষ করে পত্রিকার মতো মাধ্যমের বিস্তৃতি জানতে এনএমএস বাংলাদেশে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উপায়। এটি আমাদের মতো বিজ্ঞাপনী সংস্থা ও বিপণন পেশাজীবীদের মিডিয়া ও ব্র্যান্ড পরিকল্পনা করতে সহায়তা করে। এনএমএস আমাদের কাছে খুবই নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র।’

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top