logo
news image

বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ইনক্রিমেন্ট-উৎসব ভাতা-বৈশাখী ভাতা দাবি

প্রাপ্তি প্রসঙ্গ ডেস্ক।  । 
শুক্রবার (৫ অক্টোবর) ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’। ইউনেসকো এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘শিক্ষার অধিকার মানে হচ্ছে, যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক পাওয়ার অধিকার’। এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী সব মানুষকে এটাই বলা হচ্ছে যে শিক্ষার অধিকার প্রশিক্ষিত এবং যোগ্য শিক্ষক পাওয়ার অধিকার ছাড়া অর্জন করা সম্ভব নয়।
শিক্ষকেরা হচ্ছেন মানুষ গড়ার কারিগর। বিশ্ব শিক্ষক দিবস শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে পালন করা হয়। এ বছর সংস্থাটির সদস্যভুক্ত ১০০ দেশে ৪০১টি শিক্ষক সংগঠন দিবসটি উদ্‌যাপন করছে।
বিশ্বের সব শিক্ষকের অবদানকে স্মরণ করার জন্য জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা ইউনেসকোর ডাকে এ দিবসটি পালন হয়ে থাকে। ১৯৯৪ সাল থেকে প্রতিবছর ৫ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে বিশ্ব শিক্ষক দিবস।
ইউনেসকো বলছে, বিশ্বে বর্তমানে ২৬ কোটি ৪০ লাখ শিশু বিদ্যালয়ের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। ২০৩০ সালের মধ্যে সর্বজনীন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্যে পৌঁছাতে বিশ্বব্যাপী প্রায় সাত কোটি নতুন শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজন। মেয়েশিশু, প্রতিবন্ধী, শরণার্থী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের ব্যবধান অনেক বেশি। এই ব্যবধান দূর করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে—এমনটাই মনে করে ইউনেসকো।
সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয় বিশ্ব শিক্ষক দিবস। বিশ্ব শিক্ষক দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। তারা বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের শিক্ষকদের ন্যায্য পাওনা ও সুবিধা থেকে বঞ্চিত রেখে শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অসামান্য অবদানকে প্রকারান্তরে অস্বীকার করা হচ্ছে। বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (৫ অক্টোবর) সকাল ১০টায় বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির  সেগুনবাগিচা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভায় তারা এ দাবি জানান। তারা শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায্য পাওনা ৫ শতাংশ বর্ধিত বেতন (ইনক্রিমেন্ট) ও পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বৈশাখী ভাতা ইত্যাদি প্রদান না করায় গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ মো. বজলুর রহমান মিয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশ্ব শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক মাহফুজা খানম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য বাবু রঞ্জিত কুমার সাহা। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সহসভাপতি অধ্যক্ষ মোঃ আবুল কাশেম, আলী আসগর হাওলাদার, মোঃ ইকবাল হোসেন, মণি হালদার, বেগম নূরুন্নাহার, অশোক কান্তি গুহ, হেনা রাণী রায়, আবু জামিল মোঃ সেলিম, মোঃ জাহাঙ্গীর হেসেন প্রমুখ।
সভায় শিক্ষক নেতারা বলেন, শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণ এখন সময়ের দাবি। এ দাবি ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবকসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষের অকুন্ঠ সমর্থন রয়েছে। কারণ প্রাথমিক স্তর শেষ করা শিক্ষার্থীদের অনেকেই আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে লেখা-পড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সুবিধা বঞ্চিত এসকল শিশুরা নানামুখি অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। ফলে টেকসই উন্নয়ন ব্যহত হচ্ছ। তাই টেকসই উন্নয়নসহ দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বিচ্ছিন্নভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ না করে একযোগে মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণ একান্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, সরকার যেহেতু মূল বেতনের ১০০ শতাংশ প্রদানসহ অন্যান্য সকল সুবিধাদির আংশিক প্রদান করেন সেহেতু প্রতিষ্ঠানের আয় সরকারি কোষাগারে দেয়া হলে সরকারের তেমন বেশি অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের প্রয়োজন হবে না। তাই সরকার ঘোষিত জাতীয় শিক্ষানীতি- ২০১০ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণ, শিক্ষকদের চাকরির বয়স ৬৫ বছরে উন্নীতকরণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়ন, একাডেমিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তকরণ এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে সব বৈষম্য দূরীকরণসহ “শিক্ষকের অধিকার, শিক্ষার অধিকার”  নিশ্চিত করণের আহ্বান জানান। 

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top