logo
news image

ঈশ্বর মানুষকে একটি মুখ দিয়েছিলেন

রশিদ হারুন।  ।  

মাননীয় আদালত,
লোক’টি কি অন্যায় করেছিলো
এখনো বুঝতেই পারলো না,
অথচ আপনি তাকেই যাবজ্জীবন জেল দিয়ে দিলেন ,
আপনি যখন তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন
“তুমি দোষী না নির্দোষ?”
লোকটি শুধু আপনার চোখে চোখ রেখে
হাসি মুখে বলেছিলো,
“হুজুর, ওটাতো আপনার কাজ,
আমি বলে দিলে কি আপনি শুনবেন?
তারচেয়ে, আপনিই বলুন আমি দোষী না নির্দোষ।”

মাননীয় আদালত,
লোকটির পরিচয় কি,
লোকটি কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য নয়,
লোকটি কোনো শীর্ষ সন্ত্রাসী নয়,
লোকটি কোনো ঋন খেলাপী নয়,
লোকটি কোনো মাদক ব্যাবসায়ী নয়,
আদালত অবমাননা হয়
এমন কথা লোকটি কখনোই বলেনি,
লোকটি একজন ‘মানুষ’!!

মানুষটি শহরে দাড়িয়ে চিৎকার করে শুধু বলেছিলো,
“কথা না বলতে পেরে আমি একশো বছর বাঁচতে চাইনা,
আমি আমার বুকের ভিতরের কথা বলে একদিন বাঁচলেই খুশি।”
শুধু এই কথাটি বলার জন্য তার বিরুদ্ধে মান হানির মামলা হলো।

মাননীয় আদালত,
একজন মানুষ যদি বুকে হাহাকার নিয়ে
একটি কথা বলেই থাকে,
তাতে আরেকজনের মানহানি হয় কি ভাবে!!
আজকাল মানী লোকের মান বোধহয়
বন্য শুকরের মতো যেখানে সেখানে সঙ্গমে লিপ্ত হয়।

লোকটির জীবন বৃত্তান্তে শখের জায়গায় লেখা আ্ছে-
‘এক বেলা কম খেয়েও মনের কথা বলে বেঁচে থাকা।’

মাননীয় আদালত,
মনের কথা বলে বেঁচে থাকার শখ যদি অপরাধ হয়,
তবে মানুষের মুখ জন্মের পর পরই শেলাই করে বন্ধ করার আইন করুন।

এতো মানুষ কারাগারে রাখলে জায়াগার অভাব হবে যে কোনো রাষ্ট্রের,
বরং রাষ্ট্রের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে
সেখানে কারাগার বানানো হোক,
অথবা মাননীয় ঈশ্বর,
আপনি মুখ ছাড়া নতুন প্রজাতির মানুষ পৃথিবীতে সৃষ্টি করুন।।

* রশিদ হারুন: কবি, সিইও, এডুকেশন এক্সপ্রেস, ২৮/০৯/২০১৮

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top