logo
news image

অপারেটর বদলের খরচ ১৫৮ টাকা

প্রাপ্তি প্রসঙ্গ ডেস্ক।  ।  
দেশে এই প্রথম চালু হলো মোবাইল ফোন নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর পরিবর্তনের সুবিধা। এজন্য সিম পরিবর্তন, ট্যাক্স ও ভ্যাট বাবদ খরচ হবে ১৫৮ টাকা। একবার অপারেটর পরিবর্তন করে অন্য অপারেটরে গেলে কমপক্ষে ৯০ দিন থাকতে হবে। প্রতিবার অপারেটর পরিবর্তনের সময় নতুন সিম নিতে হবে।
সোমবার (১ অক্টোবর) বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই সেবার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো. জহরুল হক।
এ সময় বিটিআরসি’র ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেন্স বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, মো. মোস্তাফা কামাল, এমনএনপি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ইনফোজিলিয়ন বিডির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাবরুর হোসাইন উপস্থিত ছিলেন।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো. জহরুল হক বলেন, ‘মোবাইল নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর পরিবর্তনের সুবিধা বা মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি চালু হলো। এখন থেকে মোবাইল ফোগ্রাহক তার ব্যবহৃত নম্বর অপরিবর্তিত রেখে সুবিধা মত অপারেটর বদল করতে পারবেন। ফলে অপারেটরদের মাঝে গ্রাহক ধরে রাখার জন্য প্রতিযোগিতা হবে। কমবে কলরেট, বাড়বে নানা সুযোগ সুবিধা। এই সেবা উপভোগ করতে গ্রাহককে সিম পরিবর্তনসহ পোর্টেবিলিটি বাবদ ১৫৮ টাকা খরচ করতে হবে।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান আরো বলেন, এই সেবা চালুর ফলে অপারেটরদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলবে। গ্রাহক ধরে রাখতে অপারেটররা তাদের সেবার গুণগত মান উন্নত করার পাশাপাশি বিভিন্ন অফার ঘোষণা করবে। এতে করে গ্রাহকরা উপকৃত হবেন।  যেসকল গ্রাহকরা মনে করছেন বর্তমান অপারেটর তাকে সন্তুষ্ট করতে পারছে না, তখন তিনি যে অপারেটর ভালো সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে সেই অপারেটরে শিফট করতে পারবেন।
শুরুতে এই সেবার জন্য ফি নির্ধারিত করা হয়েছিল ৩০ টাকা। কিন্তু এটি চালুর সময় জানানো হলো ফি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ টাকা। ফি বাড়ানোর কারণ সাংবাদিকরা জানতে চাইলে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘এমএনপি সেবার চালুর জন্য আমরা টাকা খুব বেশি বাড়াইনি। প্রথমে যে ব্যবস্থা করা হয়েছিল অনেক আগে, তখন ৩০ টাকা ফি নির্ধারিত করা হয়েছিল। পরে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা গেছে, যে প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তাদের জন্য এই সেবা ব্যবসা সফল হবে না। তাই ২০ টাকা বাড়িয়ে ফি ৫০ টাকা করা হয়েছে। আমরা যদি দেখি তাদের ব্যবসা বেশি হচ্ছে তখন ফি কমিয়ে দেবো।’
এই সেবা পাওয়ার জন্য একজন গ্রাহকদের কত খরচ হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘একজন অপারেটর যদি এই সেবা উপভোগ করতে চান তবে সংশ্লিষ্ট অপারেটরের কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে গিয়ে সিম রিপ্লেসমেন্টে করে আনতে হবে। এজন্য তাকে ১৫৮ টাকা খরচ দিতে হবে। এর মধ্যে ১০০ টাকা সিম ট্যাক্স। ৫০ টাকা এমএনপি চার্জ। আর বাকি ৮ টাকা ভ্যাট।’
বিটিআরসি চেয়ারম্যান জানান, কোনো গ্রাহক অপারেটর পরিবর্তন করলেও বিকাশের মত মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) কোনো প্রভাব পড়বে না। অর্থাৎ এই এমএফএন সার্ভিসের মাধ্যমে আগের মতই অর্থ লেনদেন করা যাবে।
অনুষ্ঠান ইনফোজিলিয়ান বিডি লিমিটেডর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, ১ অক্টোবর রাত ১২ টা থেকে এমএনপি সুবিধা চালু হয়েছে। সকাল থেকে গ্রাহকরা অপারেটর বদল করতে অপারেটরদের কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে গিয়ে হাজির হয়েছেন। সকাল থেকে ১২ টা পর্যন্ত প্রায় এক শ গ্রাহক অপারেটর বদলের জন্য আবেদন করেছেন। ইতোমধ্যে ২০ টির মত নম্বর অপারেটর পরিবর্তনের সুবিধা উপভোগ করতে শুরু করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, একজন গ্রাহক একবার নির্ধারিত ফি দিয়ে অপারেটর বদল করলে ৯০ দিনের মধ্যে পুনরায় অপারেটর বদল করতে পারবেন না। প্রতিবার অপারেটর বদল করতে হলে সিম পরিবর্তন করতে হবে।
দেশে মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি বা এমএনপি সেবা চালুর লাইসেন্স পেয়েছে বাংলাদেশ ও স্লোভানিয়ার যৌথ কনসোর্টিয়াম ‘ইনফোজিলিয়ান বিডি টেলিটেক কনসোর্টিয়াম’। বিটিআরসির শর্ত অনুযায়ী অপারেশন চালুর পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটিকে দেশের মোবাইল গ্রাহকদের মধ্যে ১ শতাংশ, এক বছরের মধ্যে ৫ শতাংশ এবং ৫ বছরের মধ্যে ১০ শতাংশ গ্রাহককে এই সেবার আওতায় আনতে হবে।
এছাড়াও এমএনপি গাইডলাইনের শর্তানুযায়ী, বাৎসরিক লাইসেন্স ফি ২৫ লাখ টাকা, রেভিনিউ শেয়ারিং ১৫ শতাংশ হারে এবং সামাজিক দায়বদ্ধ তহবিলে বাৎসরিক নীরিক্ষাকৃত আয়ের ১ শতাংশ বিটিআরসিকে দিতে হবে।
বর্তমানে বিশ্বের ৭২ টি দেশে এই সেবা চালু রয়েছে। প্রতিবেশি দেশ ভারতে ২০১১ সাল থেকে, পাকিস্তানে ২০০৭ সাল থেকে এই সেবা চালু রয়েছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিটিআরসি বিভিন্ন বিভাগের কমিশনার, মহাপরিচালক, পরিচালক এবং এমএনপি সেবা দাতা প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তারা।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top