logo
news image

জনক

মোহাম্মদ মাসুক আজাদ সালেহীন।  ।  
আমাকে একটা রুলটানা খাতা দাও
ছায়াবৃক্ষের নীচে একটা টেবিল
যদি থাকে, হাতলসহ একটি চেয়ার।
আর হারিয়ে যাওয়া রেডলিফ
অথবা মাটির শ্লেট-পেন্সিল।
এই স্মৃতিময় উঠোন ক্ৰমশই
ঢেকে যায় শুকানো পত্র, পালক
আর আশ্বিনের রোদে। শালিক
শাবক বিস্ময়ে দ্যাখে "পাখিরা
উড়ে উড়ে যায় আকাশে"। এই
সুখের ছায়ায়, 'ঘুরেছি কাননে
তার নেচে নেচে" যেখানে বৃক্ষ
আর পাখী এক হয়ে বাসা বেঁধে
প্রতীক্ষায় থাকতো প্রবল বর্ষার।
তার কর্ষিত ভূমি ছিলো উর্বর,
মৃত্তিকা উদ্ভূত ফসল ছিল সবুজ
অনন্ত প্রশ্রয় ছিল স্নিগ্ধ ছায়ায়
রোপিত হাস্নুহেনা, ফলবতী শস্যের।
একপ্রস্থ হাতুড়ি করাত, প্রথম
কেনা টেপ রেকর্ডার, টেলিভিশনের
পুরানো কার্টন আর টেবিল ফ্যান
কবেকার অকেজো ট্রানজিস্টার
অপেক্ষায় আছে তার প্রিয় সিঁড়িঘরে।   
অথচ, সব থেকে গেলো
গ্রীষ্ম - বর্ষা, শরৎ -হেমন্ত।
শব্দ-নিঃশব্দ, শীত-বসন্ত।
চন্দ্র-সূর্য, দিবা-রাত্রি।
প্রেম-অপ্রেম, ভুল-ভ্রান্তি।
সত্য-মিথ্যা, স্মৃতি-বিস্মৃতি।
সন্তান-সন্ততি, শ্রুতি-প্রতিশ্রুতি।
এই উপনিবেশ, এই আশীর্বাদ
সন্তানের পবিত্র গন্ধ, দূরের শৈশব,  
রোপিত বৃক্ষ ফেলে রেখে
তোমার প্রস্থান, জনক! আমার দীর্ঘশ্বাস।
* মোহাম্মদ মাসুক আজাদ সালেহীন, সহযোগী অধ্যাপক, রেডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ভার্জিনিয়া।  ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top