কুষ্টিয়ায় প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে কুষ্টিয়া জেলার মন্ডপগুলোতে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। প্রতিমার পাশাপাশি পূজা মন্ডপগুলোও সাজানো হচ্ছে বাহারি সাজে। এবার কুষ্টিয়া জেলায় মোট ২৩৭টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে অনেক মন্ডপে দেবীর প্রতিমা স্থাপনের কাজও শেষ হয়েছে। এখন শুধু আল্পনার আঁচড়ে মুখ ফুটিয়ে তোলার অপেক্ষা। এবারে কুষ্টিয়া জেলায় ২৩৭টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ৮২টি, কুমারখালি উপজেলায় ৫৩টি, খোকসা উপজেলায় ৬০টি, মিরপুর উপজেলায় ২৪টি, ভেড়ামারা উপজেলায় ৮টি এবং দৌলতপুর উপজেলায় ১০টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
আগামী ১৫ অক্টোবর শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। ইতোমধ্যে দেবীদুর্গাকে বরণ করে নিতে প্রস্তুতি শুরু করেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। পূজার দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে মন্ডপে মন্ডপে চলছে সাজসজ্জার কাজ। এবার দেবীদুর্গা আসছেন ঘোটকে (ঘোড়া) চড়ে এবং যাবেন দৌলায় (পালকি) চড়ে।
প্রতিমা শিল্পী জানান, ‘পূজা শুরুর আগেই প্রতিমা তৈরির কাজ সম্পন্ন করতে মৃৎশিল্পীরা বিরামহীনভাবে কাজ করছেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে তাদের কর্মযজ্ঞ। চাহিদামত প্রতিমাকে গড়ে তুলতে চেষ্টার কোনও কমতি নেই। প্রতিমা তৈরিতে মূলত মাটি, বাঁশ-খড়, দড়ি, লোহা, ধানের কুঁড়া, পাট, কাঠ, রঙ, বিভিন্ন রঙের শিট ও শাড়ি-কাপড়ের প্রয়োজন হয়। প্রতিমা গড়া শেষ হলে রংতুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হয় অবয়ব। প্রতিমা তৈরি করা অনেক কষ্টের। বছরের অন্যান্য সময় তেমন কাজ না থাকলেও এই সময় ব্যস্ততা বেড়ে যায়। তবে সময়ের সঙ্গে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়লেও সে অনুযায়ী প্রতিমা তৈরির মজুরি বাড়েনি। প্রতিমা তৈরিতে প্রচুর কাঁচাপণ্যের প্রয়োজন হয়। তবে বাজারে পণ্যের দাম বাড়ায় এবার প্রতিমা তৈরিতে খরচ কিছুটা বেড়েছে। প্রতিমা তৈরি শেষ হলে এরপর শুরু হবে যাবে সাজসজ্জার কাজ।’
প্রদীপ কুমার সরকার জানান, ‘অতীতের চেয়ে এবার নিরাপত্তার ব্যবস্থা সম্প্রতি ভালো অবস্থানে রয়েছে। এছাড়াও দুর্গাপূজা উপলক্ষে স্থানীয় প্রশাসন যথেষ্ট নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। এবছর কুষ্টিয়া জেলায় ২৩৭টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। দেবীদুর্গা এবার আসছেন ঘোটকে (ঘোড়া) চড়ে এবং যাবেন দৌলায় (পালকি) চড়ে।’
কুষ্টিয়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি নরেন্দ্র নাথ সাহা জানান, ‘সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা। প্রতি বছরের মতো এবারও এ উৎসবটি জাকজমকভাবে উদযাপন করা হবে। গত বারের চেয়ে এবার মন্দির সংখ্যা বেশি। তাই উদযাপনটাও বেশি হবে বলে আশা করছি। এখন প্রতিমা তৈরি এবং প্যন্ডেল নির্মাণের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে প্রশাসনের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে। পূজা নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসন থেকে আমরা সার্বিক সহযোগিতা পাচ্ছি।’
সাম্প্রতিক মন্তব্য