logo
news image

মাদকের বিরুদ্ধে নতুন প্রজন্মকে সামাজিক অভিযান চালাতে হবে-ইকবাল সোবহান চৌধুরী

শাবি প্রতিনিধি।  ।  
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের প্রথম এবং সর্ববৃহৎ ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের আয়োজনে ‘ন্যাশনাল ক্যাম্পাস জার্নালিজম ফেস্ট-২০১৮’ শিরোনামে দুদিনব্যাপী এই উৎসবে দেশের ২১টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৪টি সংগঠনের প্রায় ২৫০জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানের সমাপনী দিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘যে জাতি স্বপ্ন দেখে না, তারা সার্থক হতে পারে না। জাতির পিতা স্বপ্ন দেখেছিলেন বলেই আমরা আজ স্বাধীন দেশে বাস করতে পারছি। তেমনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আমাদের দেশকে সমৃদ্ধশালী করতে স্বপ্ন দেখেন। এর জন্য প্রয়োজন শিক্ষা, জ্ঞান, দেশপ্রেম; যার মাধ্যমে আমাদের নতুন প্রজন্মের সৈনিকরা আগামী দিনের বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবে।’
শনিবার (২৮ জুলাই) বিকেল তিনটায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী ‘ন্যাশনাল ক্যাম্পাস জার্নালিজম ফেস্ট-১৮’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্য উপদেষ্টা আরো বলেন, ক্যাম্পাস সাংবাদিকরা তাদের মূল্যবোধ ও সাহস দিয়ে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে থাকে। কিন্তু বিভিন্ন সময় তাদের অবমূল্যায়ন করা হয়। তাদের যৌক্তিক দাবি ওয়েজবোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানোর জন্য আমি আহ্বান করব এবং তা প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আমি মনে করি। ক্যাম্পাস সাংবাদিকরা একসাথে একই প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়েছে যা অত্যন্ত ইতিবাচক। এই একতার মাধ্যমেই কলম সৈনিকরা তাদের সকল অসুবিধা দূর করতে পারবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘মাদক আমাদের নতুন প্রজন্মকে অসহায় করে তুলেছে। সরকার তরুণ প্রজন্মকে মাদক মুক্ত করতে চায়। মাদকের বিরুদ্ধে সরকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। মাদক বিরোধী অভিযানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নতুন প্রজন্ম এগিয়ে এসে সামাজিক একটি অভিযান পরিচালনা করতে হবে। আমরা মাদক মুক্ত, সন্ত্রাস মুক্ত ক্যাম্পাস চাই। আজকের যারা শিক্ষার্থী আগামী দিনের তারাই দেশের কর্ণধার। তাই, এই প্রজন্মকে সেইভাবে গড়ে উঠতে হবে।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, ‘সাংবাদিকতার দুইটি ধারা আছে। একটি হচ্ছে, মোহ নিয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সংবাদ করা। আরেকটি হচ্ছে, নীতি নৈতিকতা মেনে চলে দেশ ও জাতি গঠন করে শুভ শক্তিকে জাগ্রত করা এবং অসত্যের বিরুদ্ধে কলম নিয়ে কাজ করা। আপনাদেরকে এখনো সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনারা কোন ধারায় সাংবাদিকতা করবেন। আমি বিশ্বাস করি আপনারা অবশ্যই দ্বিতীয় ধারার সাংবাদিকতায় আত্ম নিয়োগ করবেন। গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে হবে।
সমাপনী অনুষ্ঠানে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মনসুরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল্লাহ ওয়াসিফের সঞ্চালনায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন একুশে টিভির এডিটর ইন চিফ মনজুরুল আহসান বুলবুল ও শাবি প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ইমাম হাসান মুক্তি। এছাড়া মেন্টর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিবিসি বাংলার আকবর হোসেন।
সম্মানিত অতিথি শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়কে কিছু দেয়ার জন্য কাজ করছি, নেয়ার জন্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ঈদের পরেই সীমানা প্রাচীরের কাজ শুরু করা হবে। এছাড়া, সেশন জট মুক্ত ক্যাম্পাস করা হবে। ইতিমধ্যে সেশনজট নিরসনের জন্য আমরা কাজ শুরু করেছি। আর ক্যাম্পাসে মাদকের কোন স্থান হবে না।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, সাংবাদিকদের সাংবাদিকতার পাশাপাশি লেখাপড়ায় মনোযোগী হতে হবে। এছাড়া, সাংবাদিকদের জন্য গঠিত ওয়েজবোর্ডে ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের কোন উল্লেখ নেই। এজন্য তাদের ওয়েজবোর্ডের সাথে জড়িতদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য আহ্বান করছি।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি ইমাম হাসান মুক্তি বলেন, শাবি প্রেসক্লাব এমন একটি উদ্যোগ নিয়েছে যা এর আগে কেউ করার সাহস দেখায়নি। আমাদের প্রেসক্লাবের এ উদ্যোগ ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্যাম্পাসের সাংবাদিকদের সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ক্যাম্পাস সাংবাদিকদেরকে নবম ওয়েজবোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করার দাাবি জানানো হয়।
তারা বলেন, ক্যাম্পাস সাংবাদিকরা অন্যান্য সাংবাদিকদের মতোই কাজ করে কিন্তু তাদেরকে খুব কমই মূল্যায়ন করা হয়। এসময় নেতৃবৃন্দ ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের ওয়েজবোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মহসিন আজিজ খান (আইপিই বিভাগ), সহকারী অধ্যাপক আলমগীর কবির, সরকার সোহেল রানা, আশীষ কুমার বণিক, যমুনা টিভির সিলেট ব্যুরো প্রধান মাহবুবুর রহমান রিপন, ইমজার সভাপতি আশরাফুল কবির প্রমুখ।
শাবি প্রেসক্লাবের সাবেক নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুস্তফা মনওয়ার সুজন, সাঈদ আব্দুল্লাহ যীশু, নাঈমুল করিম নাইম, আজগর খান, আবু তাহের টোটন, শিমুল এলাহী, কাজী রাকিন, গাজী সাদেক, জাবেদ ইকবাল, সরদার আব্বাস, আসাদুজ্জামান নয়ন, হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন, শাবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলী আশরাফুল কবির, মাসুম বিল্লাহ চৌধুরী, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান রাজু প্রমুখ।
এর আগে শুক্রবার (২৭ জুলাই) পায়রা উড়িয়ে ও আনন্দ শোভাযাত্রার মাধ্যমে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জনপ্রিয় লেখক ও অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।


সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top